গণতন্ত্র মঞ্চের হুঁশিয়ারি : সমাবেশে বাধা দিলে পরিণতি ভালো হবে না

আগের সংবাদ

পাহাড় কাটার হিড়িক, দুই ফসলি জমির টপ সয়েল যাচ্ছে ভাটায়

পরের সংবাদ

৯.৯৪ শতাংশ : এক যুগের মধ্যে দেশে মূল্যস্ফীতি সর্বোচ্চ

প্রকাশিত: জুন ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : জ্বালানির দাম বাড়ানোর বিরূপ প্রভাবের কারণে চলতি অর্থবছরের মে মাসে মূল্যস্ফীতি গড়ে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ হয়েছে, যা ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১১ সালের মে মাসে ছিল ১০ দশমিক ২ শতাংশ মূল্যস্ফীতি। গতকাল সোমবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) দেয়া মে মাসের ভোক্তা মূল্যসূচকের (সিপিআই) হালনাগাদ তথ্যে এমনটা বলা হয়েছে। বিবিএসের ন্যাশনাল উইংয়ের পরিচালক জিয়াউদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বিবিএসের হালনাগাদ তথ্যে বলা হয়, দেশে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে। এপ্রিলের ৯ দশমিক ২৪ শতাংশের তুলনায় মে মাসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশে। যা ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১১ সালের মে মাসে ছিল ১০ দশমিক ২ শতাংশ মূল্যস্ফীতি। আর গত বছরের আগস্টে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ হয়েছিল। এছাড়া মে মাসে দেশের খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৪০ বেসিস পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ২৪ শতাংশে। এপ্রিলে যা ছিল ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ। পাশাপাশি বেড়েছে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতিও। এটি গত মাসে ২৪ বেসিস পয়েন্ট বেড়ে ৯ দশমিক ৯৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা এপ্রিলে ছিল ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ।
বিবিএসের তথ্য বলছে, খাদ্য (ফুড) ও খাদ্যবহির্ভূত (নন-ফুড) উভয়ক্ষেত্রের মূল্যস্ফীতিই সামগ্রিকভাবে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার কারণ। মে মাসে খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতির হার ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ হয়েছে। গত এপ্রিলে ছিল ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ। চাল, ডাল, তেল, লবণ, মাছ, মাংস, সবজি, মসলা ও তামাকজাতীয় পণ্যের দাম বাড়ায় খাদ্যে মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে বলে জানিয়েছে বিবিএস। এছাড়া বাড়িভাড়া, আসবাবপত্র, গৃহস্থালি, চিকিৎসাসেবা, পরিবহন ও শিক্ষা উপকরণের দাম বাড়তি। মে মাসে এ খাতে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে হয়েছে ৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ, গত মাসে ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ ছিল।
এর আগে গত শুক্রবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, যখন আমরা ক্ষমতায় আসি, তখন মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ শতাংশ। এরপর সেটি ৬ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। করোনা অতিমারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সারাবিশ্বে মূল্যস্ফীতি অনেক বেড়েছে। কিন্তু স¤প্রতি বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম কমতে শুরু করায় সেটি ৬ শতাংশে রাখা সম্ভব হবে।
মূল্যস্ফীতি নিয়ে সরকারও শঙ্কিত উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, সারাবিশ্বই এখন মূল্যস্ফীতিতে ভুগছে। আমরা খাবার তো বন্ধ করতে পারব না। মানুষকে খাবার না দিয়ে রাখা যাবে না। তাই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। এছাড়া মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মাধ্যমে প্রচুর খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।
যদিও বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকারের নানা পদেক্ষেপের পরেও মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে কীভাবে নামিয়ে আনা হবে সে বিষয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে দিকনির্দেশনা নেই। সামান্য কিছু যা আছে তা সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে। মূলত এ বাজেটে মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য কিছু নেই, যা আছে বিশেষ করে বাজেট ঘাটতি ও করের যেসব পদক্ষেপ রয়েছে তাতে মূল্যস্ফীতি বাড়বে।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল। বিশাল এ বাজেটের মোট ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়