তারেক-জোবায়দার বিরুদ্ধে আরো দুজনের সাক্ষ্য

আগের সংবাদ

সিগন্যালের ভুলেই দুর্ঘটনা : শোকে কাতর পুরো ভারত > তিন ট্রেনের সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ২৮৮, আহত সহস্রাধিক

পরের সংবাদ

সাবেক মন্ত্রী ডা. আফছারুল আমীন আর নেই

প্রকাশিত: জুন ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৩, ২০২৩ , ১২:৪৩ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : জাতীয় সংসদে চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং, পাহাড়তলী ও হালিশহর) আসনের সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ডা. আফছারুল আমীন আর নেই। গতকাল শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে ঢাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। আফসারুল আমীনের চিকিৎসক স্ত্রী, দুই সন্তান, অসংখ্য আত্মীয়স্বজনসহ বহু গুণগ্রাহী রয়েছেন। তার বড় ছেলে ফয়সাল আমীন এবং ছোট ছেলে চিকিৎসক মাহিদ বিন আমীন।
ডা. আফসারুল আমীন দীর্ঘ প্রায় ৩ বছর ধরে ফুসফুসের ক্যানসারে ভুগছিলেন। তিনি দেশে ও বিদেশে চিকিৎসা নিয়েছেন। চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে তিনি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান।
এদিকে আফছারুল আমীনের মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসহযোগী সংগঠনের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে নেতারা তার মৃত্যুতে গভীর শোক এবং সমবেদনা জানিয়েছেন।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন। শুক্রবার সকালে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। বিকালে তিনি মারা যান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসের ক্যানসারে ভুগছিলেন। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে তার ফুসফুসে ক্যানসার ধরা পড়ে।
প্রয়াত আফছারুল আমীনের ব্যক্তিগত সহকারী দেলোয়ার হোসেন বলেন, তিন বছর ধরে তিনি ক্যানসারে ভুগছিলেন। করোনা মহামারির শুরু থেকেই কার্যত তিনি শয্যাশায়ী ছিলেন। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে এবং সিঙ্গাপুরে উন্নত চিকিৎসার পরও সুস্থ হননি। গত তিন বছর ধরে তিনি রাজনৈতিক, সামাজিক কোনো অনুষ্ঠানে হাজির হতে পারেননি। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত প্রায় একমাস ধরে তিনি ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
তিনি বলেন, আফছারুল আমীনের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে ঢাকায় জাতীয় সংসদ ভবনে। এরপর তার মরদেহ চট্টগ্রামে আনা হবে। চট্টগ্রামেই তার দাফন হবে। চট্টগ্রামে কখন, কোথায় জানাজা ও দাফন হবে এ বিষয়ে এখনো পারিবারিক সিদ্ধান্ত হয়নি।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি পদে থাকা আফছারুল আমীন নগরীর ডবলমুরিং-খুলশী-হালিশহর আসন থেকে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেলেও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর তাকে প্রকাশ্যে সমর্থন দেন। সেবার তিনি প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগের মন্ত্রীসভায় তিনি নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। পরবর্তীতে দপ্তর বদলে তিনি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগের দায়িত্ব পান। ২০১৪ সাল এবং ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে তিনি আরো দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সর্বশেষ তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ছিলেন।
চট্টগ্রামের রাজনীতিতে ডা. আফছারুল আমীন প্রয়াত এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ভাবশিষ্য হিসেবে পরিচিত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধপরবর্তী স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, বন্দর রক্ষা আন্দোলন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের ‘অসহযোগ আন্দোলন’সহ বিভিন্ন সংগ্রামে তিনি মহিউদ্দিনের সঙ্গে ভূমিকা পালন করেন। এছাড়া চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের প্রগতিশীল নানা আন্দোলনে তার সরব ভূমিকা ছিল।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়