তারেক-জোবায়দার বিরুদ্ধে আরো দুজনের সাক্ষ্য

আগের সংবাদ

সিগন্যালের ভুলেই দুর্ঘটনা : শোকে কাতর পুরো ভারত > তিন ট্রেনের সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ২৮৮, আহত সহস্রাধিক

পরের সংবাদ

সরকার হারাচ্ছে কোটি টাকার রাজস্ব : অবৈধ পথে আসছে চিনি মসলা ও ভারতীয় মদ

প্রকাশিত: জুন ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

পূর্বধলা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি : মুসলমানদের বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। ঈদকে সামনে রেখে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে চোরাকারবারিরা। নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বন করে অবৈধভাবে চিনি, মসলা, হুইসকি, ভারতীয় মদ ও কসমেটিক্স পণ্য আনছে। এসব মালামাল শ্যামগঞ্জ ও পূর্বধলা বাজারসহ নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে চলে যাচ্ছে। চোরাকারবারিরা স্থানীয় প্রশাসন ও বেশ কয়েকটি সিন্ডিকেট এবং এজেন্টকে সঙ্গে নিয়ে এসব মালামাল পাচার করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহ জেলার সংযোগস্থল শ্যামগঞ্জ বাজারে পাঁচটি সিন্ডিকেট গ্রুপ এসব মালামাল আনা-নেয়া করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তার চেয়ে আশ্চর্যের বিষয় দুটি থানা দূর্গাপুর ও পূর্বধলা থানা পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে কীভাবে এসব অবৈধ মালামাল নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে যাচ্ছে? তেমনি গত ২৪ মে শ্যামগঞ্জ রেলস্টেশন এলাকার একটি গ্যারেজ থেকে ২৬ বস্তা চিনির একটি চালান আটক করে স্থানীয় একটি চক্র। পরে খবর দেয়া হয় গৌরীপুর থানা পুলিশকে। খবর পেয়ে গৌরীপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে এবং ঘণ্টা ২ ঘণ্টা মালিক পার্টির সঙ্গে দেন-দরবার করে অবশেষে চিনি ছেড়ে দিয়ে চলে যায় বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে কোনো মামলা বা কাউকে আটক করেনি গৌরীপুর থানা পুলিশ।
এছাড়া ১৬ এপ্রিল পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হাসান প্রিন্স গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে উপজেলার পাট বাজার এলাকার শৈলেন্দ্র চন্দ্র দাসের গুদামে অভিযান চালিয়ে ৭৯ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ করে এবং শৈলেন্দ্র চন্দ্র দাসকে আটক করে।
ভারতীয় অবৈধ পণ্য পাচারের নিরাপদ সড়ক হচ্ছে দূর্গাপুর-পূর্বধলা-ময়মনসিংহ ও কলমাকান্দা-নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক। দীর্ঘদিন ধরে এ সড়ক পথে ভারতীয় চিনি, বিস্কুট, মসলা, ক্রিম, শীতের কাপড় শাড়ি, লুঙ্গি, বিদেশি মদ, হুইসকি, কম্বলসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য বিভিন্ন উপজেলা এবং পার্শ্ববর্তী জেলা সদরে প্রবেশ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব।
জানা যায় নেত্রকোনা জেলার ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা দূর্গাপুর ও কলমাকান্দা উপজেলার ওপর দিয়ে বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে এসব অবৈধ ভারতীয় পণ্য বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।
অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন আইন প্রণয়ন সংস্থাকে অলিখিতভাবে মেনেজ করে প্রতিদিন ৮/১০টি করে ছোট ছোট পিকআপে করে দিনে এবং রাতে নির্বিঘেœ পৌঁছে যাচ্ছে এসব পণ্যবাহী ট্রাক।
সড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করলেও উপর মহলের গ্রিন সিগন্যাল থাকার কারণে তারাও অসহায়। দীর্ঘদিন ধরে এ সড়ক পথে পিকআপের পর পিকআপ ভারতীয় পণ্য পাচার হলেও মাত্র হাতেগোনা ২/৩টি গাড়ি আটক করতে পেরেছে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন। আর হাইওয়ে পুলিশ সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত শ্যামগঞ্জ-ময়মনসিংহ সড়কের বেলতলি নামক স্থানে চেকপোস্ট করলেও তারা অবৈধ ভারতীয় পণ্যভর্তি ট্রাক আটক করতে ব্যর্থ হয়েছে।
অপরদিকে শ্যামগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ সারারাত টহল দিলেও তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে এসব অবৈধ মালবোঝাই পিকআপগুলো নিরাপদে নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যাচ্ছে। এদিকে একটি চক্র ভারতীয় পণ্যভর্তি ট্রাকগুলো বিভিন্ন সময় আটক করে নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে অর্থ লেনদেনের পর ট্রাক ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন এসব ঘটনা জেনেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। ফলে চোরাকারবারিদের নিরাপদ সড়ক হচ্ছে কলমাকান্দা-নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ এবং দূর্গাপুুর-শ্যামগঞ্জ-ময়মনসিংহ সড়ক। ঈদ-পূজাকে সামনে রেখে চোরাকারবারিরা আরো বেপোরোয়া হয়ে ওঠে। স্থানীয় প্রশাসনকে মেনেজ করে এসব অবৈধ পণ্য নিরাপদে পৌঁছে যাচ্ছে নির্দিষ্ট স্থানে আর সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব।
এ ব্যাপারে শ্যামগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ মঞ্জুরুল হক জানান জানান, তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না। শ্যামগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ রাশেদুল ইসলাম জানান, আমাদের সোর্স না থাকায় আমরা অবৈধ ট্রাকগুলো আটক করতে পারছি না। তবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি ট্রাকগুলো আটক করতে।
পূর্বধলা থানার ওসি মো. সাইফুল ইসলাম এ ব্যাপরে জানান, আমিও শুনেছি এই সড়কপথে প্রচুর ভারতীয় মালামাল পাচার হচ্ছে তবে আমি আটক করতে পারছি না। কোনো রকম খবর পেলে আমাকে জানাবেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়