তারেক-জোবায়দার বিরুদ্ধে আরো দুজনের সাক্ষ্য

আগের সংবাদ

সিগন্যালের ভুলেই দুর্ঘটনা : শোকে কাতর পুরো ভারত > তিন ট্রেনের সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ২৮৮, আহত সহস্রাধিক

পরের সংবাদ

‘পথে পথে দিলাম ছড়াইয়া’ : প্রামাণ্য চিত্রে গানে কলিম শরাফীকে স্মরণ

প্রকাশিত: জুন ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রবীন্দ্রসংগীতের সুর আর কথামালায় স্মরণ করা হলো বরেণ্য সংগীত শিল্পী কলিম শরাফীকে। প্রামাণ্যচিত্রে তুলে ধরা হলো শিল্পীর স্মৃতিকথা, বৈরী পরিবেশে সংস্কৃতির সংগ্রাম এগিয়ে নেয়ার কাহিনী। শিল্পীর কণ্ঠে সাড়া জাগানো পাঁচটি গানও শোনানো হলো দর্শকদের। ছিল শিল্পীকে নিয়ে বর্তমানদের নানান স্মৃতিকথা। গানের সুর, লয়ে ছিল বর্তমান শিল্পীদের পরিবেশনা। রবীন্দ্র সঙ্গীতের নমস্য শিল্পী কলিম শরাফীর ৯৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মনোমুগ্ধকর এমন আয়োজন করেছিল
তারই হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা। রাজধানীর ধানমন্ডির ইউল্যাব মিলনায়তনে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় আয়োজিত স্মরণ উৎসবের মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বালন করেন বরেণ্য চিত্রশিল্পী হাশেম খান।
এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রদর্শিত হয় ‘পথে পথে দিলাম ছড়াইয়া’ শিরোনামে নিশাত জাহান রানার চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় চল্লিশ মিনিটের প্রামাণ্যচিত্র। যেখানে তুলে ধরা হয় শিল্পী কলিম শরাফীর স্মৃতিকথা, সংস্কৃতি-বৈরি পরিবেশের নানা বাধা-বিপত্তির কথা।
প্রামাণ্যচিত্রের পর কলিম শরাফীর কণ্ঠে রেকর্ড করা পাঁচটি গান বাজিয়ে শোনানো হয়। গানগুলো হলো- ‘আমি তখন ছিলেম মগন গহন’, ‘এসো আমার ঘরে’, ‘পুব সাগরের পার হতে’, ‘বঁধু, তোমায় করব রাজা’ ও ‘আছে দুঃখ আছে মৃত্যু’।
স্মৃতিচারণ পর্বে রবীন্দ্রনাথের বিভিন্ন পর্যায়ের গান দিয়ে সাজানো সংগীততর্পণে অংশ নেন বাংলাদেশ রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থার শিল্পী লিটন বৈদ্য, শাহরিয়ার ইসলাম অর্ণব, নুরুল ইসলাম, শিল্পী সাবরিনা খান তন্দ্রা, প্রান্তিকা সরকার, বিজয় সরকার, কার্তিক চন্দ্র মণ্ডল, সুমাইয়া ইমান ইমা, দেবযানী মিত্র, উৎপলা দাশ, রিদওয়ানা আফরিন সুমি, জয়িতা তালুকদার ছাড়াও আমন্ত্রিত শিল্পীরা।
স্মৃতিচারণ করেন দেশবরেণ্য চিত্রশিল্পী হাশেম খান, গবেষক ও শিক্ষক কাজী মদিনা, সংগীত শিল্পী ও সংগঠক মাহমুদ সেলিম, কলিম শরাফীর ভাগিনা আনজুম আহমেদ এবং বাংলাদেশ রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও কণ্ঠশিল্পী পীযূষ বড়ুয়া। স্মৃতিচারণায় শিল্পী হাশেম খান বলেন, কলিম শরাফীর মতো মানুষ এখন আমাদের বিশেষ প্রয়োজন ছিল। আমাদের সাংস্কৃতিক আন্দোলন থেকে রাজনৈতিক আন্দোলন শুরু হয়েছিল তারই হাত ধরেই। দেশ ও গানের জন্য তিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। তার গানের সংগ্রাম এখনো যেমন মানবমুক্তির দিশা দেখায় তেমনি সা¤প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে জেগে ওঠার প্রাণশক্তি জোগায়।
বাংলাদেশ রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থার সভাপতি তপন মাহমুদ সুদূর অস্ট্রেলিয়া থেকে ভার্চুয়ালি বলেন,

গোটা শিল্পী সমাজের কাছেই কলিম শরাফী ছিলেন বাতিঘর। শিল্প ও সংস্কৃতির বহুমাত্রিক পথে ছিল তার বিচরণ। রবীন্দ্রসংগীতের পাশাপাশি গেয়েছেন গণসংগীত। আবার সংগীত শেখানোর কাজটিও করেছেন গভীর মনোযোগে। এমনকি কীর্তিমান এই মানুষটি চলচ্চিত্রও পরিচালনা করেছেন। উল্টোদিকে তার ভেতরে সব সময়ই বিরাজ করেছে একটি প্রতিবাদীসত্তা। এ কারণে সব প্রগতিশীল আন্দোলন-সংগ্রামেও রেখেছেন সোচ্চার ভূমিকা।
অতিথিরা বলেন, রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশনের পাশাপাশি দেশাত্মবোধক গানেও ছিল কলিম শরাফীর ব্যাপক জনপ্রিয়তা। ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি নিজেকে প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত রেখেছিলেন। দেশের সবকটি জাতীয় আন্দোলনসহ নানা সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পুরোধা ছিলেন কলিম শরাফী। প্রগতিশীলতার মশাল হাতে সেই তরুণ বয়সে যে সংগ্রাম তিনি সূচনা করেছিলেন, জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তা চালিয়ে গেছেন নিরলসভাবে। একাত্তরের স্বাধীনতাযুদ্ধে সম্পৃক্ত ছিলেন কলিম শরাফী।
বাইরের তাপদাহ পার হয়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মিলনায়তনের ভেতরে রাবীন্দ্রিক সন্ধ্যাটি গানের সুরে দর্শক-শ্রোতাদের মন ভরিয়ে দেন শিল্পীরা। যেখানে কথার পিঠে কথা সাজিয়ে বিন¤্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করা হয় রবীন্দ্রনিবেদিতপ্রাণ শিল্পী কলিম শরাফীকে।
সমবেতকণ্ঠে ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’ এবং জাতীয় সংগীত গাওয়ার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে। এর আগে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সংস্থার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কণ্ঠশিল্পী তানজীনা তমা। সমাপনী বক্তব্য দেন পীযূষ বড়ুয়া।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়