ভর্তিতে অতিরিক্ত অর্থ আদায় ৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে শোকজ

আগের সংবাদ

বাজেট বাস্তবায়ন করা সম্ভব : বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী

পরের সংবাদ

একসঙ্গে দুই চাকরি করেন আনসার ভিডিপি সদস্য

প্রকাশিত: জুন ২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঝিকরগাছা (যশোর) প্রতিনিধি : অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ঝিকরগাছা উপজেলা আনসার ভিডিপির ঝিকরগাছার ৯নং ওয়ার্ড দলনেতা আসাদুল ইসলামের ৬ মাস বেতন বন্ধ রয়েছে। তারপরও তিনি থেমে নেই। দলনেতার দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আসাদুল আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকে কম্পিউটার অপারেটরের দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত অভিযোগের পরও একাই দুটি পদে বহাল থাকায় তার খুঁটির জোর নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২০ মে ঝিকরগাছা উপজেলার আনসার ও ভিডিপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দলনেতা হিসেবে যোগদান করেন আসাদুল ইসলাম। তিনি ঝিকরগাছা উপজেলার হাজেরালী গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে। অভিযোগ উঠেছে, দলনেতার চাকরিকালে আসাদুল ইসলাম হাড়িয়াদেয়াড়া গ্রামে আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের উন্নয়নের লক্ষ্যে স্থাপিত ভিডিপি ব্যাংকে মাস্টাররোলে কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি বাগিয়ে নেন। সূত্র জানায়, প্রতি মাসে তিনি দলনেতার পদ থেকে ২৫শ’ টাকা ও কম্পিউটার অপারেটর পদ থেকে ৭ হাজার ৯৫০ টাকা বেতন উত্তোলন করে আসছিলেন। আসাদুল ইসলাম আনসার ভিডিপির দুই স্থানে চাকরি করার ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়। এরই মধ্যে তিনি জড়িয়ে পড়েন নানা দুর্নীতিতে।
আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক ঝিকরগাছা থেকে জেলা কমান্ড্যান্ট ও উপজেলা কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করে ঋণ উত্তোলনের ঘটনায় আসাদুলের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়। ঝিকরগাছার রবিউল ইসলামের ছেলে আল এমরান লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন আসাদুল ইসলাম অবৈধভাবে একই প্রতিষ্ঠানের দুই স্থানে চাকরি করেন। অথচ নিয়মানুযায়ী একই ব্যক্তি দুই স্থানে চাকরি করে বেতন উত্তোলন করতে পারেন না। আসাদুল ইসলাম চাকরির সুবাদে ব্যাংকে বসে উপজেলা কর্মকর্তা ও জেলা কমান্ড্যান্টের স্বাক্ষর জাল করে সুজন আহম্মেদ, আবু কায়ূমসহ আরো কয়েকজন সদস্যের ঋণের ব্যবস্থা করে দেন। অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, আসাদুলের ভাই আশিকুর রহমানকে আনসার ভিডিপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দলপতি হিসেবে অবৈধভাবে নিয়োগ করানো হয়। ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হয়ে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দলপতি হিসেবে চাকরি করা নিয়ে শুরু হয় তোলপাড়। চাকরির ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র জাল করে এই সুযোগ লুফে নেন তারা। আশিকুরের বয়সের ক্ষেত্রে করা হয় জালিয়াতি। কেননা ওয়ার্ড দলপতি নিয়োগের নীতিমালা অনুযায়ী প্রার্থীর বয়স ২২ বছর হতে হবে। কিন্তু আসল জাতীয় পরিচয়পত্রে ওই সময় আশিকুর রহমানের বয়স ছিল ২১ বছর ৯ মাস ১০ দিন। সূত্র জানায়, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছে অনিয়ম দুর্নীতির লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে সুচতুর আসাদুল ইসলামের বেতন বন্ধ করা দেয়া হয়। গত ৬ মাস তিনি দুই স্থানের একটি থেকে বেতন পাচ্ছেন না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেতন বন্ধ থাকলেও আসাদুল থেমে নেই। তিনি দিব্যি নিয়মিত অফিস করছেন। বেতন বন্ধ থাকা নিয়ে তার কোনো মাথা ব্যথা নেই। কারণ তিনি স্থানীয় কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে একই প্রতিষ্ঠানের দুই স্থানে চাকরির সুবাদে অনিয়ম করে সুবিধা ভোগ করছেন। এই বিষয়ে আনসার ভিডিপির ঝিকরগাছা উপজেলা কর্মকর্তা আনোয়ারা খাতুন মুঠোফোনে জানান, ঝিকরগাছায় সুষ্ঠুভাবে চাকরি করা খুবই কষ্টকর। এখানে একজন আরেকজনের পিছে লেগেই থাকে। তিনি জানান, ঝিকরগাছা ৯নং ওয়ার্ড দলনেতা আসাদুল ইসলাম মাস্টাররোলের কর্মচারী। সামান্য বেতনে জীবনযাপন করা কষ্টদায়ক। তাই দলনেতার পাশাপাশি তিনি ব্যাংকে চাকরি নিয়েছেন। আসাদুলের মতো এমন আরো অনেকেই আছেন। এক প্রশ্নে আনোয়ারা খাতুন জানান, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে আসাদুলের বেতন ৬ মাস বন্ধ আছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়