মেজাজ হারালেন টম হ্যাঙ্কস

আগের সংবাদ

টাইগারদের অনুশীলন শুরু আজ : হাথুরুসিংহে আসছেন ৩ জুন

পরের সংবাদ

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন : ভূমিহীন ও স্বশিক্ষিতরাও মেয়র হতে চান

প্রকাশিত: মে ২৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মে ২৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেয়া ১১ প্রার্থীর মধ্যে স্বশিক্ষিত তিনজন এবং দুইজন ভূমিহীনও রয়েছেন। এদের মধ্যে ব্যবসায়ীর সংখ্যা ৭ জন, দুইজন শিক্ষক, অপর দুইজন অবসরপ্রাপ্ত পেনশনার ও লন্ডনি আইনজীবী। সম্প্রতি সিসিক নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীদের জমা দেয়া ১১ জনের হলফনামা তর্জমা করে এসব তথ্য জানা গেছে। ১১ জনের মধ্যে ৬ জনের মনোনয়ন বৈধ এবং ৫ জনের মনোনয়ন বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সল কাদির।
মনোনয়ন বৈধ হওয়া মেয়র প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী (নৌকা), জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবুল (লাঙল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান (হাতপাখা), জাকের পাটির মো. জহিরুল আলম (গোলাপ ফুল), মোহাম্মদ আবদুল হানিফ কুটু (স্বতন্ত্র) ও মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন (স্বতন্ত্র)।
বাছাইয়ে বাদ পড়লেও আপিলে ভাগ্য ঝুলে আছে সামছুন নুর তালুকদার, মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান খান, মাওলানা জাহিদ উদ্দিন, মো. শাহজাহান মিয়া ও মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফার। ঋণখেলাপি, প্রস্তাবক-সমর্থকরা অন্য এলাকার বাসিন্দা, আয়কর রিটার্ন জমা না দেয়াসহ নানা কারণে এসব মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে বলে রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সল কাদির জানিয়েছেন।
হলফনামা ঘেঁটে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান পেশায় ব্যবসায়ী এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ অনার্স। স্বশিক্ষিত হলেও শিল্পপতি ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বাবুলের আছে ৪টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। মেয়র প্রার্থী মাহমুদুল হাসানের শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখিয়েছেন এলএলবি।
সিসিকে আলোচিত মেয়র প্রার্থী স্ক্র্যাপ ব্যবসায়ী মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন। প্রতিবার মেয়র পদে নির্বাচনে অংশ নেন তিনি। স্বশিক্ষিত রিমন ৫ মামলার আসামি। স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের একটি মামলায় খালাস পেয়েছেন। এছাড়া বিচারাধীন মামলা আছে ৩টি, গ্রাম আদালতে রয়েছে আরও একটি। তার সম্পদের মূল্য ৩ লাখ ১৫ হাজার টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ১৫ শতক কৃষি জমি। তবে ব্যাংকে দায়দেনা নেই তার।
এইচএসসি পাস পেশায় ব্যবসায়ী আব্দুল হানিফ কুটুর বছরে আয় ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজ নামে রয়েছে ১৭ লাখ ৭০ হাজার এবং স্ত্রীর নামে ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা। তার গাড়িও আছে। তবে স্থাবর সম্পদ ও ব্যাংকে দায়দেনা এবং মামলা নেই। মাধ্যমিকের গণ্ডি পার না হলেও মেয়র হতে চান চাঁদপুর জেলার স্থায়ী বাসিন্দা স্বর্ণ

ব্যবসায়ী মো. জহিরুল আলম। নগরের লালদীঘিরপাড়ে ভাড়াবাসায় থাকেন তিনি। শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখিয়েছেন অষ্টম শ্রেণি। স্বর্ণের ব্যবসায় তার বছরে আয় ২০ লাখ ও নির্ভরশীলদের থেকে ৭ লাখ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে আছে নগদ ২০ লাখ টাকা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ১০ লাখ টাকা, নিজ নামে আছে ৪ ভরি স্বর্ণ এবং ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী ও আসবাবপত্র দেখিয়েছেন ৯ লাখ টাকার। স্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজ নামে বাড়ি আছে ২টি। ব্যাংকে দায়দেনা ও মামলা নেই তার।
পেশায় শিক্ষক মৌলানা জাহিদ উদ্দিন চৌধুরী দাওরায়ে হাদিস টাইটেল পাস। তিনি একটি মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল, শিক্ষকতা থেকে বছরে আয় দেখিয়েছেন ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে আছে নগদ ২০ হাজার টাকা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে এক লাখ টাকা। আসবাবপত্রের মধ্যে ফ্রিজ ১টি, খাটপালং সোফা উল্লেখ করলেও দাম দেখাননি। স্থাবর সম্পদ বলতে দেখিয়েছেন অকৃষি জমি ৫০ শতক ও ১টি বাড়ি। তবে ব্যাংক দায়দেনা নেই।
পেশায় শিক্ষক নগরের মুফতিবাড়ী দরগাহ মহল্লার বাসিন্দা মো. শাহজাহান মিয়া নিজেকে ভূমিহীন দেখিয়েছেন হলফনামায়। শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএসসি। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। আর স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ নেই এই প্রার্থীর। কেবল শিক্ষকতা থেকে আয় দেখিয়েছেন ৭০ হাজার টাকা। তবে ব্যাংকে দায়দেনা নেই।
স্বশিক্ষিত মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান খানও মেয়র প্রার্থী। পেশায় অবসরপ্রাপ্ত পেনশনার। নিজের ও নির্ভরশীলদের কোনো আয় দেখাননি তিনি। অস্থাবর সম্পদ বলতে হাতে আছে নগদ ১০ হাজার টাকা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে রয়েছে এক লাখ টাকা। তবে স্থাবর সম্পদ নেই। কোনো দায়দেনা ও মামলা নেই।
বিএসসি ডিগ্রিধারী মোস্তাক আহমেদ রউফ মোস্তফা পেশার স্থলে দেখিয়েছেন গ্রামে কৃষি, শহরে পারিবারিক ব্যবসা এবং ব্যক্তিগতভাবে একজন আইনজীবী, লন্ডনে আইনপেশায় যুক্ত। কৃষি খাতে বছরে আয় দেখিয়েছেন ৫ লাখ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ ২০ লাখ টাকা, স্ত্রীর নামে ১০ লাখ, নির্ভরশীলদের আয় দেখিয়েছেন ২ লাখ টাকা। বৈদেশিক মুদ্রা পাউন্ড দেখালেও পরিমাণ উল্লেখ করেননি। আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ৭ লাখ এবং নির্ভরশীলদের নামে ৩ লাখ টাকা। তার মোটরসাইকেল আছে ২টি, কৃষি খাত দেখিয়েছেন পৈতৃক। ব্যাংকে দায়দেনা ও মামলা নেই।
পেশায় ব্যবসায়ী সামছুন নুর তালুকদার প্রাথমিকের গণ্ডি পার হতে পারেননি। পড়ালেখা ৪র্থ শ্রেণি পর্যন্ত। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ আছে ৩ লাখ টাকা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আরো ৩ লাখ। স্থাবর সম্পদের মধ্যে আছে কৃষি জমি নিজ নামে ৩০ শতক ও অকৃষি ৪ শতকের বাড়ি। তবে ব্যাংকে দায়দেনা নেই।
উল্লেখ্য, সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিল ২৩ মে। বাছাই হয় গত ২৫ মে বৃহস্পতিবার। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সময় ২৬ থেকে ২৮ মে। আপিল নিষ্পত্তি ২৯ থেকে ৩১ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১ জুন। প্রতীক বরাদ্দ ২ জুন এবং এই দুই সিটিতে ভোটগ্রহণ করা হবে ২১ জুন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়