কাগজ প্রতিবেদক : গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রভূত উন্নতি হয়েছে। তবে এখানে জনসংখ্যা বেশি রোগীর চাপও অনেক বেশি। তাই চিকিৎসকরা রোগীর প্রতি যথেষ্ট মনোযোগ দিতে পারেন না। এ কারণে অনেকেই চিকিৎসা নিতে বিদেশমুখী হচ্ছে বলে মনে করছেন ভারতের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
ভারতের মেডিকা সুপারস্পেশালিটি হসপিটাল আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে তারা এই মত দেন। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় গুলশানের একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন ভারতের প্রখ্যাত নিউরো সার্জন ডা. হর্ষ জৈন, গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট ডা. প্রদীপ্ত কুমার শেঠি, অর্থোপেডিক সার্জন ও মেডিকা সুপারস্পেশালিটি হসপিটালের ভাইস চেয়ারম্যান ও অর্থোপেডিক সার্জন ডা. বিকাশ কাপুর, ক্যান্সার সার্জন ডা. অরিন্দম মণ্ডল ও অর্থোপেডিক ডা. আশীষ রায়। এছাড়া মেডিকা গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ডা. সৌমিত্র ভরদ্বাজ সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রসংশা করে ডা. হর্ষ জৈন বলেন, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কনফারেন্স বা সেমিনারে অংশ নিই। সেখানে দেখি বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের চিকিৎসকরা খুব ভালো করছেন। তাদের মধ্যে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। ডা. বিকাশ কাপুর বলেন, গত ২২ বছর ধরে আমি বাংলাদেশে যাতায়াত করছি। দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য-চিকিৎসা ব্যবস্থার বিভিন্ন বিষয়গুলোকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ আমার হয়েছে। পঙ্গু হাসপাতালে এবং প্রখ্যাত অর্থোপেডিক অধ্যাপক ডা. আফম রুহুল হকের সঙ্গে বিভিন্ন সময় কাজ করার সুযোগ হয়েছে। আমি দেখেছি বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অনেক উন্নতি হয়েছে। তবে কলকাতায় আমার কাছে যেসব রোগী যায় তাদের অনেকেরই একটি অভিযোগ যে, দেশের চিকিৎসকরা তাদের প্রতি যথেষ্ট মনোযোগ দিচ্ছেন না।
বিভিন্ন সময় বিদেশি চিকিৎসকরা বাংলাদেশে এসে তাদের কার্যক্রম তুলে ধরেন। এতে দেশের রোগীরা বিদেশ যেতে আরো বেশি উৎসাহিত হচ্ছে কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিষয়টি আসলে তেমন নয়। দুই দেশের মধ্যে আমাদের সদ্ভাব রয়েছে। আমাদের বন্ধুরা এই দেশের প্রখ্যাত চিকিৎসক। বহির্বিশ্বেও তাদের সুনাম রয়েছে। আমরা পরস্পরের শত্রæ নই। আরেকটি কথা বলতে চাই। রোগীকে টার্গেট হিসেবে দেখলে তা রোগীর জন্য কখনোই কল্যাণকর হয় না।
ডা. প্রদীপ্ত কুমার শেঠিও দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশে যাতায়াত করছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে অনেক রোগী বিদেশে বিশেষ করে ভারত বা কলকাতায় যাচ্ছেন। অনেকে ‘সেকেন্ড ওপিনিয়ন’ নিতে কিংবা আরো উন্নত চিকিৎসা করাতেও বিদেশে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশে তাদের আসার কারণ এবং মেডিকা সুপারস্পেশালিটি হসপিটাল সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা জানান, মেডিকা হাসপাতাল ২০১০ সালে যাত্রা শুরু করে। বাংলাদেশি রোগীদের জন্য এখানে রয়েছে তথ্য কেন্দ্র। এখান থেকে বাংলাদেশি রোগীরা বিনামূল্যে পেতে পারেন চিকিৎসকের অ্যাপয়েন্টমেন্ট, ভিসা লেটার, টেলি মেডিসিন সেবা ও চিকিৎসা খরচসহ যে কোনো ধরনের সেবা।