ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সাব কমিশন গঠনের প্রস্তাব বাংলাদেশের

আগের সংবাদ

চিকিৎসার ফি নির্ধারণ কতদূর? : বেসরকারি হাসপাতালে সেবা নেন ৮৬ শতাংশ মানুষ, স্বাস্থ্য খাতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে হবে

পরের সংবাদ

পুরস্কার হিসেবে বইয়ের গুরুত্ব

প্রকাশিত: মার্চ ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সাম্প্রতিক কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের ‘বার্ষিক সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া’ অনুষ্ঠানে দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় স্থান করে নেয়া শিক্ষার্থীদের পুরস্কার হিসেবে মেলামাইন অথবা কাচের প্লেট কিংবা গøাস দেয়া হচ্ছে। বিষয়টা যে এখনই চোখে পড়ল ব্যাপারটা এমনও না। সেইসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনোটা না কোনোটায় অনেকেই পড়ে আসছি এবং পুরস্কার হিসেবে প্লেট এবং গøাসও পেয়ে এসেছি। যদিও এই পুরস্কারের চল অনেক আগে থেকেই চলমান। কিন্তু এখন এ পর্যায়ে এসে বিষয়টা চোখে ভিন্নভাবে ধরা পড়ল এবং ভাবার এক বিষয়ে পরিণত হলো। কথা হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে থালাবাটি পুরস্কার হিসেবে থাকবে কেন? শিক্ষা হবে বই এবং পরিবেশকেন্দ্রিক। কেননা শিক্ষার উদ্দেশ্যই হলো আচরণের কাক্সিক্ষত পরিবর্তন। আর এই আচরণের পরিবর্তন আসবে এই বই থেকে। আর এই থালাবাটি কি শিক্ষার্থীদের ঘরে নেই? আচ্ছা এই কয়েকটা প্লেট আর গøাস সে কত দিন ব্যবহার করবে? সর্বোচ্চ ১ বছর বা দুবছর। তারপর? এই পুরস্কার কি আর জীবনে কোনো কাজে আসবে? এই প্লেট হয় আলমারিতে শোভা পাবে, নয়তো ২ বা ১ বছরের ব্যবহারযোগ্য বস্তু হবে! তার বেশি আর কিছুই না। কিন্তু বিষয়টা নিয়ে অন্যভাবে ভেবে দেখুন তো। যদি পুরস্কার হিসেবে প্লেট না হয়ে বই হয় তাহলে কেমন হয়? বইটা তার কাছে অনেক দিন থাকবে। বইটি পড়ে, সে বইয়ের থেকে নেয়া জ্ঞান দিয়ে তার জীবনের কোনো না কোনো একটা দিক পরিবর্তন করবে। তার সেই পরিবর্তন দেখে আশপাশের মানুষের পরিবর্তন হবে। আশপাশের মানুষের পরিবর্তনে সমাজের মানুষ পরিবর্তন হবে। সমাজ থেকে সেই পরিবর্তন ক্রমে ক্রমে দেশ এবং দেশ থেকে সেই পরিবর্তন বিশ্বকেও ছুঁয়ে ফেলবে। এমনটা সম্ভব নয় কি? ভেবে দেখুনতো কতই না ভালো কিছু হবে। হ্যাঁ, সত্যি বই ঠিক এমনিভাবে বিশ্বকে বদলে দিতে পারে। এই ক্ষমতা বইয়ের আছে, বই পড়ুয়া মানুষের আছে এবং বইয়ের লেখকদের তো আছেই। আমাদের প্রয়োজন শুধু এসব মানুষকে বই পড়ার সুযোগ করে দেয়া। ওরাই তো আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। এরাই তো এই দেশ, সমাজ এবং জাতিকে প্রতিনিধিত্ব করবে। দেশ এবং দেশের মানুষের সার্বিক উন্নয়নে পুরস্কার হিসেবে থালাবাটির পরিবর্তে বই দেয়া এখন সময়ের দাবি। একমাত্র দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহায়তায় এমন মহৎ উদ্যোগ নেয়া সম্ভব। মানুষ চাইলে অনেক কিছু করতে পারে। আসুন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলোতে থালাবাটি দেয়ার সংস্কৃতি উঠিয়ে বই পুরস্কারের সংস্কৃতি নিয়ে আসি। শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। সেই শিক্ষার বীজ যেসব জায়গা থেকে বপন হয় সেসব জায়গায় বইয়ের সুগন্ধ ছড়িয়ে দিতে হবে। তখনই সেই বীজ থেকে ভালো এবং উচ্চ গুণাগুণ সমৃদ্ধ ফসল আশা করা যাবে। আসুন বিষয়টা নিয়ে ভাবি। পুরস্কার হিসেবে বই, তুলনামূলকভাবে থালাবাটির মূল্য থেকেও অনেক কম (বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে)। থালাবাটির মূল্যমানে অনেক কার্যকরি আত্ম-উন্নয়ন এবং সাহিত্যের বই খুব সহজেই ব্যবস্থা করা যাবে। পরিবর্তনটা নিয়ে আসুন, দেখুন পরিস্থিতি কেমন চোখের পলকে বদলে যায়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পুরস্কার থালাবাটি হওয়াটা সত্যি লজ্জাজনক!
‘শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।’

রুবেল আহমেদ : শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়