কাগজ প্রতিবেদক : আগামী জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার পরিকল্পনা করেছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। এটি হলে পরীক্ষার্থীদের উচ্চমাধ্যমিকের ক্লাস শুরুর পর ১ বছর ৩ মাসেই (১৫ মাস) এ পরীক্ষায় বসতে হচ্ছে। অথচ উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষাবর্ষ দুই বছরের। শিক্ষাবিদ ও অভিভাবকরা বলছেন, তাড়াহুড়া করে পরীক্ষা নেয়ার পরিকল্পনায় শিক্ষার্থীরা পড়ার চাপে পড়ছেন। এতে শিখন ঘাটতি থেকে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। আবার পরীক্ষা হলেও এসব শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ভর্তি পরীক্ষা হবে আগামী বছরের এপ্রিল থেকে জুন-জুলাইয়ে। ফলে দীর্ঘ সময়জুড়ে তাদের কোচিং করতে হবে।
শিক্ষা বোর্ডের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, করোনার কারণে স্বাভাবিক সময়ের মতো পরীক্ষা নেয়া যায়নি। এখন পরীক্ষা শুরুর সময় ধীরে ধীরে স্বাভাবিক সময়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। করোনার সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালের মার্চ থেকে টানা প্রায় দেড় বছর দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সশরীরে ক্লাস বন্ধ ছিল। এ কারণে শিক্ষাপঞ্জিতে এলোমেলো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়- যা এখনো স্বাভাবিক হয়নি। ফলে শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতিও দূর হচ্ছে না।
গত বছর ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের একাদশ শ্রেণিতে ক্লাস শুরু হয় ২ মার্চ থেকে। এসব শিক্ষার্থীই এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় বসবেন। এবার পুনর্বিন্যাস করা পাঠ্যসূচিতে পরীক্ষা হলেও প্রশ্নপত্রের ধরন হবে আগের মতোই।
শিক্ষা বোর্ডসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকদের কেউ কেউ চেয়েছিলেন এ বছরের সেপ্টেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা নিতে। যাতে পরীক্ষার্থীদের ওপর চাপ কমে এবং পাঠ্যসূচি ভালোভাবে শেষ করা যায়। কিন্তু শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যানরা পরীক্ষা আগে আগে নেয়ার পক্ষে মত দেন। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহে পরীক্ষা নেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, স্বাভাবিক সময়েও উচ্চমাধ্যমিকে ১৮ মাসের বেশি ক্লাস হয় না। তখন পাঠ্যসূচি থাকে পূর্ণাঙ্গ। এবার হয়তো ১৫ মাসে পরীক্ষা হচ্ছে। এবার কিন্তু পাঠ্যসূচি পুনর্বিন্যাস করা, মানে পুরো পাঠ্যসূচি নয়। করোনার কারণে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে এখন অনেক দেরিতে পরীক্ষা নিতে হচ্ছে। তাই পরীক্ষার সময় ধীরে ধীরে আগের সময়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। এটি করলে পরীক্ষার্থীদের খুব অসুবিধা হবে না বলে তিনি মনে করেন।
স্বাভাবিক সময়ে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হতো ফেব্রুয়ারির শুরুতে। আর এইচএসসি পরীক্ষা হতো এপ্রিলের শুরুতে। এ বছর জুলাইয়ে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু করলেও পরীক্ষার্থীদের ক্লাস হচ্ছে ১ বছর ৩ মাসে। কারণ, এসব পরীক্ষার্থীর নির্বাচনী পরীক্ষা হবে মে মাসে, আর নির্বাচনী পরীক্ষার পর ক্লাস হয় না। সেই হিসেবে গত বছরের মার্চে ক্লাস শুরুর সময় থেকে মে মাস পুরোটা ধরলেও ক্লাসের সময় দাঁড়ায় ১ বছর ৩ মাস।