কাগজ প্রতিবেদক : সরকার হটানোর ১০ দফা দাবি আদায়ের আন্দোলনে এবার মহানগর থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত ‘অবস্থান-গণসংযোগ ও মতবিনিময়’ কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর লেডিস ক্লাবে এক ইফতার মাহফিলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন। প্রতিবারের মতো এবারো আলেম-ওলামা ও এতিমদের সম্মানে প্রথম রোজায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএনপি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন টেবিলে গিয়ে হাত মেলান ও শিশুদের খোঁজ নেন। ইফতারে প্রায় ১৬০ জনের মতো বিভিন্ন মাদ্রাসাছাত্র ও শতাধিক শিক্ষক অংশ নেয়। ২০১৮ সালে খালেদা জিয়ার কারাগারে যাওয়ার পর তার সম্মানে বিএনপির আয়োজিত প্রতিটি ইফতারে মঞ্চে একটি আসন ফাঁকা রাখা হতো। কিন্তু এবার তা রাখা হয়নি। বিএনপির মহাসচিব ছাড়াও ইফতারে অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার ও শায়রুল কবির খান প্রমুখ।
মির্জা ফখরুল বলেন, রমজান মাসে রাজনৈতিক কর্মসূচি দেয়ার কথা নয়। কিন্তু এখন দেশে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, আমরা বাধ্য হয়েছি এই রমজান মাসেও সাধারণ মানুষকে মুক্ত করার, সর্বোপরি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের যে আন্দোলন, তা চলমান রাখতে চাই। সে কারণেই আমরা এসব কর্মসূচি দিয়েছি। আমরা আশা করব সাধারণ মানুষ এসব কর্মসূচি সফল করবে। রমজানে ঘোষিত কর্মসূচিসমূহ হচ্ছে- ১ এপ্রিল সব মহানগর ও জেলায় বেলা ২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্য়ন্ত, ৮ এপ্রিল মহানগরের থানা ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে বেলা ৩টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি।
৯ থেকে ১৩ এপ্রিল ইউনিয়ন পর্যায়ে বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১০ দফার প্রচারপত্র, রাষ্ট্র মেরামতের প্রচারপত্র এবং আওয়ামী সরকারের ‘সর্বগ্রাসী দুর্নীতির’ প্রচারপত্র বিলি/মানববন্ধন/অবস্থান কর্মসূচি।
ইউনিয়ন পর্যায়ের এ কর্মসূচি বিভাগ অনুযায়ী হবে- ৯ এপ্রিল রংপুর বিভাগে, ১০ এপ্রিল রাজশাহী ও সিলেট বিভাগে, ১১ এপ্রিল খুলনা ও কুমিল্লা বিভাগে, ১২ এপ্রিল ঢাকা ও বরিশাল বিভাগে এবং ১৩ এপ্রিল ময়মনসিংহ ও ফরিদপুর বিভাগে।
এর পাশাপাশি ২৮ মার্চ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সব মহানগর-জেলা-উপজেলা-থানা-ইউনিয়ন-ওয়ার্ড পর্যায়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় সভা, দুস্থ অসহায় ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহায়তা প্রদানসহ বিভিন্ন গণসংযোগ কর্মসূচিতে বিএনপির নেতাকর্মীরা অংশ নেবেন বলে ঘোষণা দেন দলের মহাসচিব।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, এমন একসময়ে আমরা ইফতার মাহফিল করছি যখন দেশে সাধারণ মানুষ অত্যন্ত কষ্টে দিনযাপন করছে। ইফতারের সময় ন্যূনতম যে খাদ্যদ্রব্য দরকার, সেগুলোর দাম আকাশচুম্বী, যা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। প্রতিটি জিনিসের দাম আজকে বেড়ে গেছে। এই দাম বাড়ার মূল কারণ হচ্ছে আওয়ামী সরকারের অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি। সাধারণ মানুষের শ্বাসরুদ্ধ হয়ে আসছে। আমরা এই দুঃসহ অবস্থার অবসান চাই।