সিপিডির সংবাদ সম্মেলন : নবায়নযোগ্য জ¦ালানি নীতি বাস্তবায়নে বড় বাধা দুর্নীতি

আগের সংবাদ

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় স্মার্ট বাংলাদেশ : মতিয়া চৌধুরী, সংসদ উপনেতা

পরের সংবাদ

ইয়ার্ডে স্থান সংকট, সড়ক অপ্রশস্ত : যানজটে ভোগান্তি চরমে বুড়িমারী স্থলবন্দরে

প্রকাশিত: মার্চ ২৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৫, ২০২৩ , ১:২০ পূর্বাহ্ণ

স্বপন কুমার দে, হাতীবান্ধা (লালমনিরহাট) : লালমনিরহাট জেলার বুড়িমারী স্থলবন্দরটি বর্তমানে বাংলাদেশ-ভারত-ভুটান ত্রিদেশীয় ব্যবসা-বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ রুটে পরিণত হয়েছে। তবে বন্দরটির ইয়ার্ডে জায়গা সংকট ও মহাসড়ক প্রশস্ত না হওয়ায় আমদানি-রপ্তানি পণ্যের ট্রাকের দীর্ঘজট এখানকার নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে উঠেছে।
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় ১৯৮৮ সালে এই স্থলবন্দরটি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিদিনই ভারত-বাংলাদেশের শত শত ট্রাক আর ভারত-বাংলাদেশের কয়েক হাজার পাসপোর্টধারী যাত্রী এ বন্দর ব্যবহার করে থাকেন।
বন্দরটি দিয়ে ভারত ও ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি অনেক বেড়েছে, ফলে প্রতিদিন সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। এতে দুর্ভোগে পড়ছেন পাসপোর্টধারী যাত্রীরা। বন্দরের ধারণক্ষমতা কম হওয়ায় রাস্তার ধারে ট্রাক রাখতে হয়। এতে সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন।
বুড়িমারী স্থলবন্দর ঘুরে দেখা গেছে, ইয়ার্ডে কোনো জায়গা খালি নেই। বিভিন্ন পণ্যের ট্রাক ইয়ার্ডে ঢুকতে না পেরে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কটিতে দীর্ঘ লাইন করে রাখছে। কিন্তু ইয়ার্ডে থাকা ট্রাকগুলোও মালামাল খালাস করে দ্রুত বের হতে পারছে না। ফলে বুড়িমারী জিরো পয়েন্ট থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটারের মতো যানজট যেন নিত্যদিনের ঘটনা। এতে দুর্ভোগে পড়ছেন ট্রাকচালক, পাসপোর্টধারী যাত্রীসহ সাধারণ মানুষ।
এদিকে, সমস্যা নিরসনে বন্দরের পাশে নতুন একটি ইয়ার্ড নির্মাণ কাজ এখনো শুরু হয়নি। বুড়িমারী স্থলবন্দরের জিরো পয়েন্ট থেকে বুড়িমারী বাজার পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়কের ১০ কিলোমিটার চার লেনে উন্নীত করার উদ্যোগ নেয় সরকার। প্রকল্পে অর্থায়ন করার কথা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি)। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৯ কোটি টাকা। কিন্তু কাজ শুরু হয়নি।
বুড়িমারী স্থলবন্দরের লোকজন বলছেন, পাটগ্রাম-বুড়িমারী চার লেন সড়ক নির্মাণ করা হলে স্থলবন্দর যানজটমুক্ত হবে। এদিকে ভারতের চ্যাংরাবান্ধা থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত এক বছর আগেই চার সড়কের কাজ সমাপ্ত হয়েছে। চ্যাংরাবান্ধা স্থলবন্দরে কোনো যানজট নেই। সাধারণ মানুষের ভোগান্তি নেই।
বুড়িমারী শুল্কস্টেশন সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৮ সালে এ স্টেশনের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১০ সালের ৩০ মার্চ এ স্টেশনকে স্থলবন্দরে উন্নীত করা হয়। স্থলবন্দরের তিনটি শেডের ধারণক্ষমতা ১ হাজার ৭৬৮ টন এবং তিনটি ওপেন স্টাক ইয়ার্ডের ধারণক্ষমতা ৬ হাজার ২০৩ টন। সময়মতো পণ্য খালাস না হওয়ায় ওপেন স্টাক ইয়ার্ডে ভারত-বাংলাদেশের ট্রাকগুলোকে চার-পঁচ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়।
বর্তমানে বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ভারত, ভুটান ও নেপাল থেকে কয়লা,পাথর, সিমেন্ট, পশুখাদ্য, ফলমূল, পেঁয়াজ, চাল, গম ও ভুট্টা আমদানি করা হয়। রপ্তানি হচ্ছে খাদ্যসামগ্রী, ঝুট কাপড়, ওষুধপত্রসহ বিভিন্ন পণ্য।
বর্তমানে প্রতিদিন ৪০০-৫০০টি ট্রাক বন্দরে আসা-যাওয়া করে। এ সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। বুড়িমারী স্থলবন্দরের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে রাস্তায় দুর্ঘটনা বেড়েছে।
বুড়িমারী কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট (সিএন্ডএফ) এসোসিয়েশনের দপ্তর সম্পাদক বকুল হোসেন বলেন, স্থলবন্দরে ইয়ার্ডের জায়গা সংকট ও রাস্তা প্রশস্ত না হওয়ায় প্রতিদিন তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। বুড়িমারী স্থলবন্দরের দুইপাশে বাইপাস সড়ক চালু করলে এ যানজট থাকবে না। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়