প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তারা : রাখী দাশ পুরকায়স্থ ছিলেন আপাদমস্তক দেশপ্রেমিক

আগের সংবাদ

বধ্যভূমি দেখার দায়িত্ব কার : সারাদেশে ৫ হাজারের বেশি বধ্যভূমি, ২২ বছরে ২০টি বধ্যভূমি সংরক্ষণ হয়েছে

পরের সংবাদ

পাকিস্তানের আর রইল কী?

প্রকাশিত: মার্চ ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

পাকিস্তানি রাষ্ট্রের ওপর সেনাবাহিনীর কর্তৃত্ব রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর দ্রুত ও ধারাবাহিকভাবেই কায়েম হচ্ছিল। সঙ্গে ছিল বেসামরিক আমলাতন্ত্র। উভয় ক্ষেত্রেই প্রাধান্য ছিল পাঞ্জাবিদের। এদের অধিকাংশ ব্রিটিশের হাতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। শুরুতে কিন্তু একটি সামরিক অভ্যুত্থানের সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছিল। নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল আকবর খান। তিনিও পাঞ্জাবেরই লোক, কিন্তু তার কিছুটা ঝোঁক ছিল বামপন্থার দিকে। তার স্ত্রী নাসিমা আকবর খান নাকি কমিউনিস্টদের দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন। তৎপরতার শুরু ১৯৪৯-এ, পূর্ণতা পায় ১৯৫১ সালে গিয়ে। আকবর খান তখন রাওয়ালপিন্ডিতে চিফ অব জেনারেল স্টাফ। পরিকল্পনাটি ছিল এই রকমের- মার্চের ৩-৪ তারিখে প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানের রাওয়ালপিন্ডিতে যাওয়ার কথা, সেখানে তাকে বন্দি করা হবে। বন্দি অবস্থায় তাকে বেতারকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে, তাকে বাধ্য করা হবে ক্ষমতা ত্যাগের ঘোষণা দিতে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকবে অযোগ্যতা ও দুর্নীতির। ক্ষমতা চলে যাবে একটি সামরিক কাউন্সিলের হাতে, যার প্রধান হবেন আকবর খান। পরিকল্পনা সফল না হলে বিকল্প হিসেবে হাজারা উপত্যকায় একটি বিপ্লবী বাহিনী গড়ে তোলারও কাজ চলছিল। কিন্তু উদ্যোগটি ব্যর্থ হয়ে যায় খবর ফাঁস হওয়ার দরুন। আকবর খান, তার স্ত্রী এবং অন্য দশজন বিভিন্ন মাপের অফিসার গ্রেপ্তার হন। কবি ফয়েজ আহমদ ফয়েজ এবং পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টির সম্পাদক সাজ্জাদ জহীরকেও মামলায় জড়ানো হয়। এই অভ্যুত্থান ব্যর্থ হওয়ায় সবচেয়ে বেশি লাভবান হলেন আইয়ুব খান। আকবর খান তার সিনিয়র ছিলেন, তিনি অপসারিত হলেন; সিনিয়র অন্য দুজনকেও কর্তারা উপযুক্ত মনে করলেন না। আইয়ুব খানের অবসর গ্রহণ আসন্ন ছিল; তিনি অবসরে তো গেলেনই না, উপরন্তু তার নিয়োগ বর্ধিত হলো এবং তিনি কমান্ডার-ইন-চিফের দায়িত্ব পেলেন। তারপরের ইতিহাস আমরা জানি। আমেরিকানদের সমর্থন নিয়ে তিনি রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে নিলেন। রাষ্ট্রের ওপর সেনাবাহিনীর একক কর্তৃত্ব স্থায়ী করার উদ্যোগ গ্রহণ করলেন। ১৯৫৬ সালে প্রণীত সংবিধান বাতিল করে দিলেন এবং নিজেই একটি সংবিধান জারি করলেন ১৯৬২ সালে। ছাপ্পানর সংবিধানে দুটি অত্যন্ত অগণতান্ত্রিক বিধান ছিল, একটি হচ্ছে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে সংখ্যাসাম্য, অপরটি পশ্চিম পাকিস্তানে এক ইউনিট। আইয়ুবের সংবিধানে ওই দুই বিধান রয়ে গেল এবং তাদের সঙ্গে যোগ হলো রাষ্ট্রপতি শাসন ও অতিঅদ্ভুত বুনিয়াদি গণতন্ত্র।
রাওয়ালপিন্ডি ষড়যন্ত্র মামলাটির গুরুত্বকে অবহেলা করার উপায় নেই। এতে একদিকে যেমন সেনাবাহিনীর ভেতর বিদ্রোহের আশঙ্কা দূর হয়, অন্যদিকে তেমনি বাম আন্দোলন দুর্বল হয়ে পড়ে। মেজর জেনারেল আকবর খানের বামপন্থি ঝোঁকটার ভেতর তেমন কোনো গভীরতা ছিল না। পরবর্তী সময়ে দেখা গেছে, তিনি আইন পড়ছেন এবং করাচি হাইকোর্টে ওকালতি পেশাতে যোগ দিয়েছেন। এক সময়ে তিনি ভুট্টোর পিপলস পার্টিতে যোগ দেন, এবং ১৯৭১-এর ডিসেম্বরে ভুট্টো সরকারের উচ্চপদ লাভ করেন। এই সময়ে তার স্ত্রী নাসিমাকে তিনি তালাক দেন। কমিউনিস্ট পার্টির ক্ষতিটা ছিল বেশ বড় মাত্রার। দেশভাগের পর পশ্চিম পাকিস্তানে এমনিতেই পার্টি দুর্বল হয়ে গিয়েছিল। ১৯৪৮ সালে কলকাতায় অখণ্ড কমিউনিস্ট পার্টির যে কংগ্রেস হয়, তাতে পূর্ব পাকিস্তান থেকে যোগ দেন ৩২ জন প্রতিনিধি, পশ্চিম পাকিস্তান থেকে গিয়েছিলেন মাত্র ৩ জন। শ্রমিক শ্রেণি ছিল অত্যন্ত ক্ষুদ্র ও অসংগঠিত; পার্টির আর্থিক সঙ্গতি ছিল দুর্বল; সর্বোপরি পার্টির জন্য প্রকাশ্যে কাজ করবার সুযোগ ছিল না। এর মধ্যে ১৯৪৮-এ ‘ইয়ে আজাদী ঝুটা হ্যায়’ রণধ্বনি দিয়ে পার্টি অভ্যুত্থানের নীতি নিয়েছিল। সাজ্জাদ জহির (১৯০৫-৭১) পশ্চিম পাকিস্তানে পার্টির প্রধান। তিনি স্থানীয় ছিলেন না, ছিলেন উত্তর প্রদেশের মানুষ। পাকিস্তানে আসেন দেশভাগের পরে এবং পার্টির দায়িত্ব নিয়ে। সাজ্জাদ জহিরের অঙ্গীকারটি ছিল অত্যন্ত গভীর ও দৃঢ়। কিন্তু তিনি স্থানীয় বাস্তবতা ও জনজীবন সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল ছিলেন না। তদুপরি থাকতে হতো গোপনে। ওদিকে আবার রুচিতে তিনি অভিজাত। তার পড়াশোনাটা ছিল অক্সফোর্ডে, চর্চা করতেন সাহিত্যের। ছোটগল্প লিখেছেন, গবেষণাগ্রন্থ লিখেছেন। তিনি হয়তো ভেবেছিলেন সামরিক বাহিনীর ভেতরকার ‘প্রগতিশীল’ অংশের সহযোগিতায় বিপ্লব করাটা অসম্ভব হবে না। পার্টির সিদ্ধান্ত নিয়েই তিনি আকবর খানের উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। বিচারে তার চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়। কারামুক্তির কিছুদিন পরে তিনি ভারতে চলে যান।
অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর লিয়াকত আলী খান গণপরিষদে আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করেন যে সামরিক আধিপত্যের অধীনে কমিউনিস্ট মডেলের একটি সরকার গঠনের ষড়যন্ত্র হয়েছিল, সেটিকে ব্যর্থ করে দেয়া হয়েছে। তার পক্ষে এতে উৎফুল্ল হওয়ার একটি নয়, দুটি কারণ ছিল। প্রথমটি হলো তিনি নিজে রক্ষা পেয়েছেন, দ্বিতীয়টি হলো কমিউনিজমের আশঙ্কা নির্মূল করা গেছে। তিনি ঘোরতর কমিউনিজমবিরোধী ছিলেন। কিন্তু ভদ্রলোক শেষ পর্যন্ত বাঁচতে পারেননি, ২১ মার্চ তিনি গণপরিষদে বক্তৃতা দেন, ৭ মাসের মাথায় ওই রাওয়ালপিন্ডিতেই তিনি নিহত হলেন। কমিউনিজমপন্থিদের হাতে অবশ্যই নয়, সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ আছে যে অস্ত্রধারী হাতটি ছিল খোদ সামরিক বাহিনীরই; যে জন্য ঘাতক ও ষড়যন্ত্রকারীদের কেউই ধরা পড়েনি। এই হত্যাকাণ্ডের ফল হলো এই যে, ঝানু পাঞ্জাবি আমলা গোলাম মোহাম্মদ গভর্নর জেনারেল হয়ে বসলেন। পরবর্তী সময়ে আরেক পাঞ্জাবি আমলা চৌধুরী মোহাম্মদ আলী প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। সামরিক-অসামরিক আমলাতন্ত্রের জয়জয়কার পড়ে গেল। ‘সন্দেহভাজনদের’কে বিতাড়িত করে দিয়ে আইয়ুব খান সেনাবাহিনীতে একচ্ছত্র কর্তৃত্ব স্থাপন করে ফেললেন। ভিন্ন মতের কোনো স্থান রইল না। অফিসার ও সৈনিক সবার জন্যই নানা রকমের সুবিধা করে দিলেন। মার্কিন সাহায্য স্রোতের মতো বইতে থাকল; দেশের সম্পদ লুণ্ঠনও অবাধে চলল। এভাবে একটানা ১১ বছর ধরে শাসন চলল তার। দেশে গণতন্ত্রের নামনিশানা রইল না। ঠিকাদার, টাউট, আমলা, সর্বোপরি সামরিক বাহিনীর পোয়াবারো চলতে থাকল।
বিপদ ঘটল ১৯৬৫’র যুদ্ধের পরে। ওই যুদ্ধ কোনো গৌরব আনল না। এদিকে শেখ মুজিব ছয় দফা দিলেন। সেনাবাহিনীর বাঙালি সদস্যরা ‘ষড়যন্ত্র’ করছে বলে জানা গেল। ষড়যন্ত্রের সঙ্গে শেখ মুজিবকে জড়ানো হলো। সেনাকর্তারা হিসাব করেছিলেন, ঢাকায় প্রকাশ্য বিচারে করে মুজিবকে রাষ্ট্রদ্রোহী প্রতিপন্ন করে তার প্রতি জনগণের ধিক্কার ফেনিয়ে তুলবেন এবং নির্বিঘেœ তাকে এমনকি ফাঁসি দিয়ে দিতেও পারবেন। ফলটা হলো কিন্তু সম্পূর্ণ উল্টো। শেখ মুজিব পাকিস্তানি রাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করার সাহস রাখেন দেখে এবং তিনি বাঙালিদের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন এই কারণে তাকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র চলছে ধারণা করে বাঙালি জনমত তার পক্ষে চলে গেল এবং তিনি গগনচুম্বী জনপ্রিয়তা লাভ করলেন। এই ফাঁকে চতুর ও উচ্চাকাক্সক্ষী ভুট্টো পশ্চিম পাকিস্তানের নেতা হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার জন্য রুটি, কাপড় ও আবাসের ‘সমাজতান্ত্রিক’ দাবি তুলে তুলকালাম কাণ্ড শুরু করে দিলেন। পরিণতিতে ইয়াহিয়া খানের হাতে ক্ষমতা দিয়ে সরে পড়তে বাধ্য হলেন। জনবিক্ষোভের মুখে ইয়াহিয়া খানের পক্ষে সংখ্যাসাম্য ও এক ইউনিট ওই দুয়ের কোনোটাই টিকিয়ে রাখা সম্ভব ছিল না। জনমতকে ঠাণ্ডা রাখার জন্য নির্বাচনও দিতে হলো। সংখ্যাসাম্য ভেঙে তার জায়গায় প্রাপ্ত বয়স্ক ভোট চালু করার ফলে নির্বাচনের জন্য পরিকল্পিত ৩০০ আসনের মধ্যে ১৬২টি পড়ল পূর্ব পাকিস্তানের ভাগে, ১৩৮টি পেল পশ্চিম পাকিস্তান। ওদিকে এক ইউনিট ভেঙে দেয়ার দরুন পশ্চিম পাকিস্তানে ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদের যে স্বীকৃতিকে দাবিয়ে রাখা হয়েছিল সেটি মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার সুযোগ পেল। সত্তর সালের নির্বাচনের ফল যা দাঁড়াল তা ছিল সেনাশাসকদের জন্য আতঙ্কজনক এবং পাকিস্তানি জাতীয়তাবাদের জন্য বিপর্যয়সূচক। দেখা গেল সামরিক কর্তাদের সব হিসাব-নিকাশ নাকচ করে দিয়ে বাঙালি জাতীয়তাবাদের সমর্থক আওয়ামী লীগ দুটি আসন বাদ দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের সবক’টি আসনে জয়ী হয়েছে, তবে পশ্চিম পাকিস্তানে তারা একটিও আসন পায়নি। ওদিকে পশ্চিম পাকিস্তানের ১৩২টি আসনের মধ্যে ভুট্টোর দল সবগুলো আসন পাবে কি বেলুচিস্তানে কোনো আসনই পায়নি, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে পেয়েছে মাত্র একটি আসন, পাঞ্জাব ও সিন্ধু প্রদেশেও একেবারে যে একচ্ছত্র হয়েছে তাও নয়; সব মিলিয়ে তাদের আসন ৮১টি। সর্বপাকিস্তানি দল মুসলিম লীগ ততদিনে তিন ভাগ হয়ে গেছে এবং তিন ভাগের প্রাপ্ত আসন যোগ করে সাকল্যে দাঁড়িয়েছে ১৮; তবে পূর্ব পাকিস্তানে তাদের আসন সংখ্যা শূন্য। জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে পূর্ব পাকিস্তানে আসন পাওয়ার প্রশ্নই ওঠেনি, পশ্চিম পাকিস্তানে কোনোমতে তারা পেয়েছে চারটি আসন। ব্যাপারটা দাঁড়াল এই রকমের, ভোটের ফল অনুযায়ী শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রধানমন্ত্রী করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় রইল না। পশ্চিম পাকিস্তানের জনগণের জন্য যেমন-তেমন, সেনাশাসকদের জন্য সেটা ছিল অশনিসংকেত। একাত্তরের যুদ্ধের পরে তাদের কেউ কেউ যুদ্ধকালের কাহিনী লিখেছেন; সেসব কাহিনীতে বিপন্নদশার নানা কারণ দেখা যায়। যেমন ভয় ছিল শেখ মুজিব প্রধানমন্ত্রী হলে তিনি সামরিক খাতে ব্যয় কমিয়ে দেবেন এবং সামরিক বাহিনীতে বাঙালিদের ভর্তি করতে চাইবেন। তাহলে সেনাকর্তারা তো বটেই সেনাসদস্যরাও যেসব সুযোগ-সুবিধা ও ক্ষমতা নির্বিঘেœ ভোগ করছিলেন সেগুলোর কোনোটাই অক্ষত থাকবে না। বাঙালিদেরকে শান্ত করার জন্য ইয়াহিয়া খান ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, সেনাবাহিনীতে তাদের সংখ্যা দ্বিগুণ করা হবে; তদনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়াও শুরু হয়েছিল, কিন্তু দ্বিগুণ হয়েও যে বাঙালিরা সন্তুষ্ট হবে এমন লক্ষণ দেখা যাচ্ছিল না, বরঞ্চ এমন আভাস পাওয়া যাচ্ছিল যে বাঙালিরা জনসংখ্যার অনুপাতে সেনাবাহিনীতে অংশ চাইবে; সে ক্ষেত্রে দেখা যাবে যে ৭.৫ শতাংশকে দ্বিগুণ করে ১৫ শতাংশ করলে চলবে না, বহুগুণে বাড়িয়ে ৫৬ শতাংশ করতে হবে। এবং তখন এমন অবস্থা দাঁড়াবে যে, বাঙালি সেনারা আর পাঞ্জাবি অফিসারদের জুতো পালিশ করবে না, পাঞ্জাবিরাই বাঙালিদের জুতো পালিশ করা শুরু করবে। পাঞ্জাবি সেনাকর্মকর্তাদের জন্য এসব কী ভয়ংকর এক দুঃস্বপ্ন! তাছাড়া বাঙালিরা যদি আনুপাতিক হারে অংশ চায়, তাহলে সিন্ধী, পাঠান, বেলুচ, মোহাজেররাই বা চুপ করে থাকবে কেন? তারাও ন্যায়বিচার চাইবে। ফলে পাঞ্জাবি আধিপত্যের সর্বনাশ ঘটবে, সেনাবাহিনী তার ‘বিশ্ববিখ্যাত’ শক্তি ও সংগঠন হারাবে। আর ওই বাহিনীই যদি ভেঙে পড়ল তাহলে পাকিস্তানের আর রইল কী?
ছোটখাটো আশঙ্কা আরো ছিল। যেমন কর্নেল ওসমানী যদি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হন তাহলে অবস্থাটা কেমন দাঁড়াবে, এই দুশ্চিন্তা! তিনি তো যারা তার ওপর অসদাচরণ করেছে তাদেরকে ছেড়ে কথা বলবেন না। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় যারা শেখ মুজিবকে জড়িয়েছিল, সেই সব অফিসারই বা কি করে পার পাবে? ব্যবসা-বাণিজ্য শিল্প-কারখানা বাঙালিদের হাতে চলে যাওয়া শুরু করবে। শেষ পর্যন্ত রাওয়ালপিন্ডি থেকে রাজধানীকে ঢাকায় সরিয়ে নেয়ার দাবি যে উঠবে না তাই বা কে নিশ্চিত করতে পারে?

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী : ইমেরিটাস অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়