দুদক চেয়ারম্যান : দুর্নীতি নির্মূলে প্রভাবমুক্ত থেকে কাজ করবে দুদক

আগের সংবাদ

সড়কে শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে : আইন ও বিধিমালার পরও সড়ক আইনের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন নেই

পরের সংবাদ

পশ্চিমাদের বিরোধিতা : যুদ্ধ বন্ধ ও শান্তি আলোচনায় চীনকে চায় ইউক্রেন

প্রকাশিত: মার্চ ২৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শাহরিয়ার বিপ্লব : পশ্চিমাদের বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতার পরও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধ এবং শান্তি আলোচনায় চীনকে চায় ইউক্রেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠকের পর গত মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে এমন আভাস পাওয়া গেছে।
খবরে প্রকাশ, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তিন দিনের রাশিয়া সফরে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে একের পর এক ধারাবাহিক সভা করেছেন। নৈশভোজে সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের নিদর্শনস্বরূপ বিভিন্ন কর্মর্সূচির পর দুই নেতা যৌথ বিবৃতি ও নথিতে স্বাক্ষর করেছেন। সফল সফর শেষে গতকাল তিনি দেশে ফিরে যান। উভয় নেতা বাণিজ্য, শিল্প, বিজ্ঞান ও সামরিক খাতে সহযোগিতা স¤প্রসারণের লক্ষ্যে এক ডজনেরও বেশি নথিতে স্বাক্ষর করার মাধ্যমে মস্কো-বেইজিং বন্ধুত্ব জোরদার করেছেন। গত মঙ্গলবার ক্রেমলিনে কয়েক ঘণ্টাব্যাপী শীর্ষ বৈঠকে দুই নেতা ইউক্রেনের শান্তির সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা করেছেন বলে জানিয়েছে রুশ গণমাধ্যম আরটি।
আগামীর সম্ভাবনা : বৈঠকের পর আনুষ্ঠানিক নৈশভোজে পুতিন বলেছেন, বিশ্ব শক্তিগুলো যারা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য এবং যাদের এই গ্রহের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা বজায় রাখার বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে তারা

কীভাবে পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলবে এটি তার একটি উদাহরণ।
সম্পর্ক গভীরতার কথা : দুজনের যৌথ ঘোষণায় বলা হয়, রাশিয়া ও চীন ব্যাপক অংশীদারিত্ব ও কৌশলগত মিথস্ক্রিয়ার একটি নতুন যুগে প্রবেশের মাধ্যমে সম্পর্ক গভীর করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। তারা ২০৩০ সালের মধ্যে অর্থনৈতিক সহয়োগিতার মূল ক্ষেত্রগুলোর জন্য একটি উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করবে। শি আর পুতিন একে অপরকে ‘প্রিয় বন্ধু’ বলে সম্বোধন করেন, অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারের প্রতিশ্রæতি দেয়ার পাশাপাশি দুদেশের মধ্যকার সম্পর্ককে ‘যে কোনো সময়ের মধ্যে সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ’ বলে অভিহিত করেন।
পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ : যৌথ ঘোষণায় দুই নেতাই বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা ক্ষুণ্ন করছে। ন্যাটো তাদের এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এসে অন্যায় প্রভাব দেখাচ্ছে। চীনের দেয়া শান্তি প্রস্তাব পশ্চিমা দেশগুলো প্রত্যাখ্যান করায় তাদের দোষারোপ করেন পুতিন। তবে শি ইউক্রেন নিয়ে বলেন, এই ইস্যুতে ‘চীনের অবস্থান নিরপেক্ষ’।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ইউক্রেনের পশ্চিমা সমর্থক বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মস্কোর সঙ্গে কোনো আলোচনায় কিয়েভকে বসতে দেবে না। মঙ্গলবার মস্কোয় ভøাদিমির পুতিন এবং শি জিনপিংয়ের মধ্যে আলোচনার ফাঁকে তিনি এ মন্তব্য করেন। পেসকভকে ঊর্ধ্বতন পশ্চিমা কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক বিবৃতি সম্পর্কে মন্তব্য করতে বলা হলে তিনি বলেন, ইউক্রেনের জন্য যে কোনো শান্তি উদ্যোগ কার্যকর করতে দেবে না পশ্চিমারা। বিশেষ করে ওয়াশিংটন কোনো না কোনো অজুহাতে কিয়েভ শান্তি আলোচনায় প্রবেশ করতে দেবে না। শান্তির আহ্বানের পরিবর্তে যুদ্ধে উসকানি দেয়াই তাদের কাজ।
চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পুতিন আরো বলেন, চীনা শান্তি প্রস্তাবের অনেক শর্ত গ্রহণ করার মতো। এর মধ্য দিয়ে ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার ভিত্তি হতে পারে এ প্রস্তাব। কিন্তু সেটা তখনই সম্ভব হবে, যখন কিয়েভ ও পশ্চিমারা শান্তির জন্য প্রস্তুত থাকবে।
পশ্চিমা প্রতিক্রিয়া : চীনা প্রেসিডেন্টের মস্কো সফর ঘিরে পশ্চিমাদের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তাদের ভয়ের কারণ চীন যদি রাশিয়াকে সামরিক সহায়তা দেয় তাহলে যুদ্ধের মোড় ঘুরে যেতে পারে। এ বিষয়ে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে সাংবাদিকদের বলেন, এটা উদ্বেগের কারণ।
দুই বিশ্বনেতার বৈঠক নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে হোয়াইট হাউস। চীনের অবস্থান মোটেও নিরপেক্ষ নয় বলে দাবি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে শি জিনপিং যখন মস্কো সফরে করছেন, ঠিক তখনই কিয়েভে আকস্মিক সফর করেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। ভারত সফর শেষে টোকিও না ফিরে তিনি পোল্যান্ড হয়ে কিয়েভে যান। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, রুশ সেনারা ইউক্রেন ছেড়ে যাওয়ার আগে একটি যুদ্ধবিরতির আহ্বান যুদ্ধে রাশিয়ার বিজয়কে সমর্থন জোগাবে।
জেলেনেস্কি কী করবেন : ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি কী করবেন তা নিয়েই রয়েছে সংবাদ মাধ্যমের আগ্রহ। গত মঙ্গলবার কিয়েভে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি চীনের প্রতি এমন আগ্রহের কথা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার ভিত্তি হতে পারে চীনের শান্তি প্রস্তাব। আমরা চাই চীন আলোচনা প্রক্রিয়ায় যুক্ত হোক এবং আমরা তাদের উত্তরের অপেক্ষায় রয়েছি। ইউক্রেনে টেকসই উপায়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার আলোচনায় যুক্ত হতে চীনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়