দুদক চেয়ারম্যান : দুর্নীতি নির্মূলে প্রভাবমুক্ত থেকে কাজ করবে দুদক

আগের সংবাদ

সড়কে শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে : আইন ও বিধিমালার পরও সড়ক আইনের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন নেই

পরের সংবাদ

উপকূলীয় হাসপাতালে বিশুদ্ধ পানির সংকট : সমাধানে সংশ্লিষ্টদের সম্মিলিত উদ্যোগ জরুরি

প্রকাশিত: মার্চ ২৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অপরিকল্পিতভাবে ভূগর্ভের পানি উত্তোলন এবং লবণাক্ততার সমস্যায় দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে নিরাপদ ও সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। দিন দিন এ সংকট আরো প্রকট হচ্ছে। বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলের হাসপাতালগুলোতে এ সংকট চরমে। অবকাঠামো থাকলেও নিরাপদ ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা না থাকায় ভোগান্তি বাড়ছে রোগী ও রোগীর স্বজনদের। নিরাপদ পানির ব্যবস্থা না থাকায় হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের সংক্রমণের ঝুঁকিও বেড়েছে। গত বছর বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় এবারে শীতের পর থেকেই খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট ও এর আশপাশের অঞ্চলের গভীর নলকূপ থেকে পানি উঠছে না। সুপেয় পানির অন্য উৎসগুলো লবণাক্ত হয়ে পড়েছে। লবণ পানি পরিশোধনে যে ফিল্টারগুলো বসানো হয়েছিল সেগুলোও অকেজো হয়ে পড়ায় দুষ্কর হয়ে পড়েছে বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ। ফিল্টার মেরামত ও প্রয়োজনে নতুন ফিল্টার বসানোর বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের গড়িমসি মোটেও কাম্য নয়। বিশেষত হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপদ সুপেয় পানি সরবরাহ করা জরুরি। হাসপাতালে খাবার পানির পাশাপাশি অস্ত্রোপচার, হাত ধোয়া, রোগীর ব্যবহৃত থালা বাসন, বিছানার চাদর ও পোশাক পরিষ্কারের ক্ষেত্রেও নিরাপদ পানি জরুরি। এসব কাজে ব্যবহৃত পানিতে ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু থাকলে রোগীর সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। অথচ উপকূলীয় অঞ্চলের অনেক হাসপাতালে হাসপাতাল পরিচালনার জন্য ন্যূনতম যেটুকু পানি দরকার তাও নেই। এমন পরিস্থিতি শঙ্কাজনক। উপকূলীয় এলাকার জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সরকারকে অবিলম্বে সময়োপযোগী ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। উপকূলীয় এলাকার হাসপাতালগুলোতে সুপেয় পানি নিশ্চিতের দায়িত্ব কার- এ নিয়েও রয়েছে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে একে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানোর প্রবণতা। এই দোষারোপ কোনো সমাধান নয়। এ সংকট সমাধানে সম্মিলিত উদ্যোগ জরুরি। উপকূলবাসী দিনের পর দিন বিশুদ্ধ পানির অভাবে ভুগবে- এটি হতে পারে না। গত বছরের শেষ দিকে প্রকাশিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের ২১ শতাংশ হাসপাতালে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের যথাযথ ব্যবস্থা নেই। পানি প্রাপ্যতার দিক থেকে সরকারি হাসপাতালের চিত্রটা বেসরকারি হাসপাতালের চেয়ে খারাপ। ৮৮ শতাংশ বেসরকারি হাসপাতালে মৌলিক পানি সরবরাহ সেবার ব্যবস্থা আছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানে তা ৭১ শতাংশ। অর্থাৎ ২৯ শতাংশ সরকারি হাসপাতাল পানির সংকটের মধ্যেই মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের তথ্যমতে, দেশের ৪১ জেলার ১৯২ উপজেলায় তীব্র পানি সংকট দেখা দিয়েছে। রাজধানীতে পানির স্তর ভূপৃষ্ঠ থেকে গড়ে ২১২ ফুট নিচে নেমে গেছে। বেসরকারি সংস্থা ওয়াটার এইডের গবেষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশের ২ কোটিরও বেশি মানুষ নিরাপদ পানি থেকে বঞ্চিত। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি একাধিক সংস্থার গবেষণায় দেখা গেছে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলসহ অনেক এলাকাতেই শুরু হয়েছে মরুকরণ প্রক্রিয়া। আমরা মনে করি, উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টির পানি যথাযথভাবে সংরক্ষণ করলে সুপেয় পানির চাহিদা কিছুটা হলেও মিটবে। এ ছাড়া সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে একযোগে কাজ করলে এ সমস্যা থেকে অনেকটাই পরিত্রাণ মিলবে বলে আশা করি। হাসপাতালে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য অবিলম্বে সরকারের আলাদা প্রকল্প বাস্তবায়ন জরুরি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়