দুদক চেয়ারম্যান : দুর্নীতি নির্মূলে প্রভাবমুক্ত থেকে কাজ করবে দুদক

আগের সংবাদ

সড়কে শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে : আইন ও বিধিমালার পরও সড়ক আইনের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন নেই

পরের সংবাদ

আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী : বঙ্গবন্ধুর দেশে কেউ গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না > গৃহহীন-ভূমিহীনমুক্ত ৭ জেলা ও ১৫৯ উপজেলা

প্রকাশিত: মার্চ ২৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আরো প্রায় ৪০ হাজার গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবার বিনামূল্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া উপহারের ঘর পেল। এ সংখ্যা ৩৯ হাজার ৩৬৫টি। বাড়িগুলো আধাপাকা। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে গতকাল বুধবার এসব ঘর হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় চতুর্থ ধাপে ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে আরো সাতটি জেলা ও ১৫৯টি উপজেলাকে গৃহহীন ও ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল যে ৭ জেলা ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয় সেগুলো হলো- মাদারীপুর, গাজীপুর, নরসিংদী, জয়পুরহাট, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও চুয়াডাঙ্গা। এর আগে তিনি পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলার সব উপজেলাসহ ৫২টি উপজেলাকে গৃহহীন-ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করেন। এ নিয়ে সারাদেশে সর্বমোট ৯টি জেলা ও ২১১টি উপজেলা গৃহহীন-ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোহাম্মদ তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া। এ সময় ঘরপ্রাপ্তদের পরিবর্তিত জীবনযাত্রার ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়। প্রধানমন্ত্রী গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার নয়াপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প, সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার নোয়াগাঁও আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং বরিশালের বানারীপাড়ার উত্তরপাড় আশ্রয়ণ প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভূমিহীনদের ঘর দেয়ার সবচেয়ে বড় অর্জন হলো দুস্থ মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। জাতির পিতা দেশকে দরিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত করে বাংলাদেশের দুর্দশাগ্রস্ত মানুষকে একটি উন্নত ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন দিতে চেয়েছিলেন। যার জন্য আমাদের সরকার অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। কোনো জেলায় কেউ গৃহহীন ও ভূমিহীন আছে কিনা তা জানতে তালিকা তৈরির আমি নির্দেশ দিয়েছি। কারণ প্রত্যেক ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের জন্য আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা আমাদের লক্ষ্য। তাই আমরা প্রত্যেককে বাড়ি দিচ্ছি, আরো দেব। আমরা চাই প্রতিটি মানুষ বাড়ি, আশ্রয় ও জীবিকার সুযোগ পাবে। তারা আর সমাজের বোঝা হয়ে থাকবে না। প্রত্যেকে নিজের পায়ে দাঁড়াবে। সম্মানের সঙ্গে বসবাস করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর দেশে কেউ গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না। তিনি ১৯৭২ সালে গৃহহীনদের জন্য পুনর্বাসন কর্মসূচি চালু করেন। তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরা ১৯৯৭ সালে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের বাড়িঘর ও জমির মালিকানা দেয়ার উদ্যোগ নেই। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে, জনগণের কল্যাণে কাজ করে। জনগণ এর সুফল পায়।
১৯৯১ সালে বিএনপি আমলে ঘূর্ণিঝড়ের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বিরোধী দলে থাকলেও আমরাই জনগণের পাশে ছিলাম। আমরা প্রথমে ঘূর্ণিঝড়কবলিত মানুষের কাছে গিয়েছিলাম। কিন্তু তৎকালীন সরকারপ্রধান ঘুমিয়ে ছিল। তারা কিছুই জানতেন না। তিনি বলেন, আমরা সরকারে এসে জলবায়ু উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দিতে কক্সবাজার শহরের উপকণ্ঠে ‘খুরুশকুল আশ্রয়ণ পরিকল্পনা’ নামে একটি প্রকল্প নেই।

এই প্রকল্পে যাদের আশ্রয় দেয়া হয়েছিল, তারা বেশির ভাগই ৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের শিকার। ওই সময় প্রায় ৪ হাজার জলবায়ু উদ্বাস্তু অনেকগুলো পাঁচতলা বাড়ির ফ্ল্যাটে আশ্রয় নিয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু ও পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য আমরা যাদের জমি অধিগ্রহণ করেছিলাম। তাদেরও বাড়ি করে দিয়েছি। কেউ ঠিকানা ছাড়া থাকবে না। আমরা তাদের শুধু ঘরই দিইনি, বিশুদ্ধ খাবার পানি ও বিদ্যুতের ব্যবস্থাও করে দিয়েছি। তাদের জীবিকার জন্য ঋণও দিয়েছি। তারা এখন দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। জাতির পিতা ঘোষণা করেছিলেন যে, একজন ব্যক্তি ১০০ বিঘা জমির অধিকারী হতে পারবে। এর অতিরিক্ত পরিমাণ জমি কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের প্রথম ধাপে ৬৩ হাজার ৯৯৯টি, দ্বিতীয় ধাপে ৫৩ হাজার ৩৩০টি এবং তৃতীয় ধাপে ৫৯ হাজার ১৩৩টি বাড়ি হস্তান্তর করেন। গতকাল আরো ৩৯ হাজার ৩৬৫টি ঘর বিতরণের মাধ্যমে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মোট ২ লাখ ১৫ হাজার ৮২৭টি।
জানা গেছে, আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে ১৯৯৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট ৭ লাখ ৭১ হাজার ৩০১টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। পুনর্বাসিত মানুষের সংখ্যা ৩৮ লাখ ৫৬ হাজার ৫০৫ জন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়