মানবতাবিরোধী অপরাধ : দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে চারজনের আপিল

আগের সংবাদ

ঝিকরগাছা : বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী স্কুল পরিদর্শন করলেন উপসচিব

পরের সংবাদ

শিক্ষা অফিসারের অনিয়মের তদন্ত ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্টা : উখিয়া

প্রকাশিত: মার্চ ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জসিম আজাদ, উখিয়া (কক্সবাজার) থেকে : কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার গুলশান আক্তারের বিরুদ্ধে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে পদোন্নতি দেয়া, বিধি লঙ্ঘন করে প্রেষণে পাঠোনো, স্বেচ্ছাচারিতা, অশালীন ব্যবহারসহ নানা অভিযোগের তদন্ত ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা শিক্ষা অফিসার গুলশান আক্তার উখিয়ায় যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন। তাকে সহযোগিতা করছেন প্রধান শিক্ষক (চলতি দায়িত্ব) যথাক্রমে পূরবী প্রভা রুদ্র, হাতিরঘোনা সাইরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (চলতি দায়িত্ব) নাসির উদ্দিন, ইনানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (চলতি দায়িত্ব) এখলাছুর রহমান।
প্রথমদিকে অধীনস্থরা এসব কর্মকাণ্ডে চুপ থাকলেও পরবর্তীতে কয়েকজন মুখ খুলতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের অধীনস্থ কয়েকজন শিক্ষক যথাক্রমে তানভীর মাহমুদ খন্দকার, বেলাল আহমেদ, নুরুল্লাহ, সৈয়দ আলম, আব্দুল মালেক ও সাংবাদিক জসিম আজাদ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর ওই শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে অনিয়ম তদন্তের আবেদন জানান। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিক শিক্ষা চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় উপপরিচালক ড. মো. শফিকুল ইসলামকে উখিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার গুলশান আক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন শফিকুল ইসলাম। এদিকে গত ১৫ মার্চ অভিযুক্ত শিক্ষা অফিসার গুলশান আক্তার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে আভিযোগকারীদের আগামী ২২ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টায় তার কার্যালয়ে তদন্তানুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে বলা হয়। ওই চিঠিতে তিনি কক্সবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার স্মারক নং-জেপ্রাশিঅ/কক্স/ ২৩/২৫২(১০) প্রেরিত চিঠির নির্দেশনা মোতাবেক এই আহ্বান করা হয় বলে জানান। যদিও এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চিঠিটি অধিকাংশ আভিযোগকারীর হাতে পৌঁছায়নি।
অভিযুক্ত শিক্ষা অফিসারের ইস্যু করা চিঠির বিষয়ে অভিযোগকারীরা বলেন, স¤প্রতি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তদন্তের নামে এক ধরনের প্রহসন করছেন। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তাকে দিয়ে তদন্ত কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এটি চোরকে বিচার করতে দেয়ার মতোই। এছাড়া তদন্তানুষ্ঠানে উখিয়ার ৭৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। যার ফলে প্রতীয়মান হয় যে এটি কোনো তদন্ত হবে না। বরং তদন্তের নামে নাটক করার পাঁয়তারা করছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার।
এ ব্যাপারে জানতে উখিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার গুলশান আক্তারকে মোবাইল করা হলে তা রিসিভ করে কথা না বলে কেটে দেন তিনি।
কক্সবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মনছুর আলী চৌধুরী বলেন, তদন্তের স্বার্থে আমাকে অভিযোগকারী, অভিযুক্তসহ শিক্ষক-কর্মচারীর সঙ্গে কথা বলতে হতে পারে। অভিযুক্ত উপজেলা শিক্ষা অফিসার অভিযোগকারীদের চিঠি ইস্যু করতে পারেন না। এ ব্যাপারে উখিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সঙ্গে কথা বলব।
প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের বিভাগীয় উপপরিচালক ড. মো. শফিকুল ইসলাম জানান, এ বিষয়টি কঠোর নজরদারিতে রেখেছেন তিনি। তদন্তে কোনো গাফিলতি হলে প্রয়োজনে পুনঃতদন্তের ব্যবস্থা করা হবে এবং তদন্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। উল্লেখ্য, প্রাথমিক শিক্ষা চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় উপপরিচালক ড. মো. শফিকুল ইসলাম প্রেরিত ওই চিঠিটি প্রাপ্তির ১০ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা। কিন্তু এখনো তা জমা দেয়া হয়নি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়