মানবতাবিরোধী অপরাধ : দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে চারজনের আপিল

আগের সংবাদ

ঝিকরগাছা : বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী স্কুল পরিদর্শন করলেন উপসচিব

পরের সংবাদ

এসডিজি ৬ : লক্ষ্য অর্জনে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ আমলে নিন

প্রকাশিত: মার্চ ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আজ বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশেও নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে বিশ্ব পানি দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য- ‘পানি ও স্যানিটেশন সংকট সমাধানে পরিবর্তন ত্বরান্বিতকরণ’। ভূগর্ভস্থ পানির অতি ব্যবহারের ফলে পানির স্তর ক্রমে নিচে নেমে যাচ্ছে, সংকট দেখা দিচ্ছে সুপেয় পানির। পানি সংকট মোকাবিলা এবং পানি দূষণের হুমকি রোধে বর্জ্য পানির আধুনিক ব্যবস্থাপনা এবং বর্জ্য পানি পরিশোধন ও পুনর্ব্যবহার একটি বড় সমাধান হতে পারে। এছাড়া সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা জরুরি। এ বাস্তবতায় বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পানি দিবস পালন এবং পানি দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) ৬ নম্বরেই নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশনের উল্লেখ রয়েছে। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দেশে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে চলছে নানা কার্যক্রম। তবে এর গতি আশানুরূপ না হওয়ায় নির্ধারিত সময়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে সংশয় রয়েছে। এ কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে হবে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সমন্বিত প্রচেষ্টা এবং কাজের গতি আরো ৪ গুণ বাড়ানোর তাগিদও দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ আমলে নিতে হবে সংশ্লিষ্টদের। বিশ্ব পানি দিবসকে সামনে রেখে গত সোমবার ভোরের কাগজ, এনজিও ফোরাম ফর পাবলিক হেলথ এবং বাংলাদেশ ওয়াটার ইন্টিগ্রিটি নেটওয়ার্ক (বাউইন) যৌথভাবে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সেমিনারের আয়োজন করে। সেমিনারে বক্তারা পানি ও স্যানিটেশনের লক্ষ্য অর্জনে একযোগে ও দ্রুততার সঙ্গে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া পানির গুণগত মানের দিকে নজর দেয়াসহ ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে এর পরিকল্পিত ব্যবহার, ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগের যেমন- পুকুর-দীঘি, খাল-বিল, নদ-নদীর পানির ব্যবহার বাড়ানো এবং শিল্পকারখানায় পানি পুনর্ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। সেমিনারে ভোরের কাগজ সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত পানি ও স্যানিটেশনের অগ্রগতির বিষয়কে দেশের জন্য একটি বড় অগ্রগতির নির্দেশক হিসেবে উল্লেখ করেন। ২০২৬ সালের পর পানি ও স্যানিটেশনের সুবিধা মানুষের জন্য সহজলভ্য করার বিষয়টি দেশের অগ্রগতির নির্ণায়ক হবে বলে এ বিষয়ে কাজের গতি বৃদ্ধিতে জোর দেন তিনি। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন করতে হলে ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন বা পয়ঃনিষ্কাশন নিশ্চিত করতে হবে। বৈশ্বিকভাবে ৮০ শতাংশ পানি দূষিত হয়ে পরিবেশে চলে যাচ্ছে। যা একদিন ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। পৃথিবীর ১৮ বিলিয়ন মানুষ অপরিশোধিত পানি ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছে। ৬৬৩ মিলিয়ন মানুষের নির্দিষ্ট কোনো পানির উৎস নেই। ঢাকায় যে পরিমাণ বর্জ্য পানি তৈরি হচ্ছে তার ৮০ শতাংশই ব্যবস্থাপনার বাইরে থেকে যাচ্ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি এবং ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে দুটি লক্ষ্যের সমন্বয়ে কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করেই আমাদের এগোতে হবে। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন, খরা, পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়াসহ বেশ কিছু সমস্যা এসডিজির লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্যানিটেশনের ক্ষেত্রেও আমাদের অগ্রগতি কম। এসব সমস্যা সমাধানে গবেষণা ও তদারকি বাড়ানো এবং বরাদ্দকৃত অর্থের সুষ্ঠু ব্যবহার জরুরি। বাংলাদেশে পানি ব্যবস্থাপনা নীতি সময়োপযোগী করতে হবে। যুগোপযোগী পানি ব্যবস্থাপনা নীতি প্রণয়নের পাশাপাশি পানি, জনস্বাস্থ্য ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সম্পৃক্ত সংস্থা বা সরকারি বিভাগগুলোর সমন্বয়ও বিশেষ প্রয়োজন। আমরা আশা করব সরকারের নীতিনির্ধারকরা এসব বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি দেবেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়