ছিনতাইকারী থেকে দুবাইয়ের স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খান

আগের সংবাদ

বিশুদ্ধ পানি ছাড়াই স্বাস্থ্যসেবা! : উপকূলীয় হাসপাতালগুলোতে বিশুদ্ধ পানির সংকট, দেশের ২১ শতাংশ হাসপাতালে নেই বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা

পরের সংবাদ

সোনালী চেলা নদীতে নির্মাণ হচ্ছে সেতু : লাঘব হবে লাখো মানুষের দুর্ভোগ

প্রকাশিত: মার্চ ২১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শংকর দত্ত, ছাতক (সুনামগঞ্জ) থেকে : সুনামগঞ্জের ছাতকের সোনালী চেলা নদীর উপড়ে নির্মিত সেতুতে শুধু ছাতকের নয় সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ ও দোয়ারা বাজার উপজেলার লাখো লাখো মানুষের দুর্ভোগ লাগবে হবে। উন্নত হবে এই অঞ্চলের লোকজনের জীবনমান। এটি হবে ওই অঞ্চলের জন্য আরেক পদ্মা সেতু।
জানা যায়, ২০২০ সাল থেকে শুরু হয় সেতুটির নির্মাণকাজ। সেতুর নির্মাণ কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২ কোটি টাকা। ছাতক উপজেলার বৃহত্তম সেতু যার দৈর্ঘ্য ৪৭০ মিটার। সেতুটির ১৩ জোড়ার ২৬টি পাকা পিলারের কাজ শেষ হয়ে গার্ডার স্থাপনের কাজ চলছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৬৫ ভাগ কাজ হয়েছে বাকিটা চলমান রয়েছে। ছাতক অংশে গ্রার্ডার স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। এখন সেতুটির কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা অংশের গ্রার্ডার স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে ছাতকের গোয়ালগাঁওয়ে সোনালী চেলা নদী উপর সেতু নির্মাণে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক।
এদিকে, বহুল প্রত্যাশিত সোনালী চেলা নদীর ওপর গোয়ালগাঁও এলাকায় সেতু নির্মাণকাজ দ্রুত গতিতে চলছে। এই সেতু নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে ছাতক-দোয়ারা-কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। ফলে তিন উপজেলার যাতায়াতে দুর্ভোগ কমবে এবং এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নও ত্বরান্বিত হবে বলে জানান স্থানীয় এলাকাবাসী।
স¤প্রতি নির্মাণাধীন সেতুর কাজের অবস্থা পরিদর্শন করেছেন এলজিইডি’র সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সেতুর নির্মাণকাজ চলতি বছরের শেষ দিকে সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছে তারা।
সংসদ মুহিবুর রহমান মানিক জানান, আওয়ামী লীগ সরকার সব সময়ই উন্নয়নে বিশ্বাসী। তিনি বলেন, ব্রিজের কাজ দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে। ব্রিজের কাজ শেষ হলে তিন উপজেলার লাখ লাখ মানুষের জীবনে উন্নয়ন বিপ্লব ঘটবে। শিক্ষা, ব্যবসা, চিকিৎসকাসহ নানামুখী উন্নয়ন প্রসার হবে।
এক সময় ছাতক-দোয়ারাবাজার ও কোম্পানীগঞ্জের কিছু অংশ নিয়ে বৃহত্তম ছাতক উপজেলা ছিল। স্বাধীনতার পর দোয়ারাবাজার ও কোম্পানীগঞ্জ পৃথক উপজেলা হিসেবে গঠিত হয়। তিনটি উপজেলার উত্তর সীমান্তে ভারতের মেঘালয় রাজ্য ঘেঁষে সোনালী চেলা ও মরা চেলা নদী এসে যুক্ত হয়েছে সুরমা নদীতে মূলত নদী কেন্দ্রিক এখানে গড়ে উঠে পাথর, চুনাপাথর, বালুসহ বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্য। ব্রিটিশ আমল থেকেই এখানে গড়ে উঠেছে একাধিক ছোট-বড় শিল্প-কারখানা।
১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত ছাতক উপজেলা। এই উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে সোনালী চেলা নদী। এই নদী পথে স্টিল ও কাঠের নৌকা দিয়ে পরিবহন করা হয় বালু-পাথর। ছাতকের সুরমা নদীর অপরপাশে রয়েছে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার তেলিখাল ইউনিয়নসহ অন্যান্য এলাকা। ইসলামপুর ও কোম্পানীগঞ্জের তেলিখাল দুই ইউনিয়নকে বিভক্তি করে রেখেছে সোনালী চেলা নদী।

হেমন্ত ও বর্ষায় মানুষ খেয়া নৌকায় পারাপারের কারণে এই অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
ইসলামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিলন সিংহ বলেন, এই সেতু চালু হলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বুড়িড়হর, লামলিগাঁও, চাটিবহর পূর্বপাড়া, সেরপুরবাজার, আমটিলাবাজার ও আমবাড়ি এলাকার হাজার হাজার মানুষ উপকৃত হবে।
কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার ছনবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা ধীরু দাম বলেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা থেকে ছাতক শহরটি তাদের পাশে। এ জন্য তারা আমবাড়ি থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকা যোগে সুরমা নদী হয়ে ছাতক শহরে নিয়মিত যাতায়াত করেন। তাদের জন্য কষ্টকর যাতায়াত ব্যবস্থা। তিনি বলেন, এই ব্রিজটি হলে আমাদের জন্য হবে আরেক পদ্মা সেতু।
ছাতক উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আফছর আহমদ বলেন, ৫২ কোটি টাকার ব্রিজের সেতুর ছাতক অংশে ২শ মিটার ও কোম্পানীগঞ্জ অংশে ৮শ মিটার এপ্রোচের কাজ হবে। তিনি বলেন, মরা চেলা নদীতে আরেকটি সেতু নির্মাণ করা হবে। পাশে একটি কালভার্ট নির্মাণ করা হলেই নোয়ারাই সড়কের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপিত হবে। এর নির্মাণ কাজের দায়িত্বে রয়েছে মেসার্স নরারুন নামের এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়