ছিনতাইকারী থেকে দুবাইয়ের স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খান

আগের সংবাদ

বিশুদ্ধ পানি ছাড়াই স্বাস্থ্যসেবা! : উপকূলীয় হাসপাতালগুলোতে বিশুদ্ধ পানির সংকট, দেশের ২১ শতাংশ হাসপাতালে নেই বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা

পরের সংবাদ

ম্যাচের মোড় ঘোরাতে ওস্তাদ মিরাজ-ইবাদত

প্রকাশিত: মার্চ ২১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ক্রিকেটের সীমিত ওভারের সংস্করণগুলোতে বাংলাদেশ ক্রিকেটের উন্নতির পুরোটাই দৃশ্যমান। এমনও সময় ছিল যখন বাংলাদেশ দলের ওপেনাররা সাজঘরে ফেরার পর পরাজয় প্রায় নিশ্চিত ধরে নেয়া হতো। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে ৭ উইকেট হারানোর পরও টাইগারদের স্কোরবোর্ডে রান যোগ হয়। ব্যাটাররা যেমন অনুশীলনের মাধ্যমে নিজেদের সমৃদ্ধ করছেন তেমনি বোলাররাও তারকা ব্যাটসম্যানদের শক্ত অবস্থানে থাকাকালে আটকে দেয়ার সামর্থ্য অর্জন করছেন। এর উল্লেখযোগ্য উদাহরণ টাইগার অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ এবং পেসার ইবাদত হোসেন। মিরাজ প্রয়োজনের মুহূর্তে ব্যাট হাতে যেমন রানে গতি দিয়ে দলকে জয় পর্যন্ত পৌঁছাতে সক্ষম, বল হাতেও তেমনি প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের আটকে দিয়ে দলকে জয় এনে দিতে পারেন তিনি।
চলতি বছরে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচের মুখোমুখি হয় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিপক্ষীয় ওয়ানডে সিরিজের মধ্য দিয়ে। ম্যাচটিতে দলীয় সফলতা না পেলেও বল হাতে সফল ছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ১০ ওভার বল হাতে লড়াই করে তিনি ৩৫ রান খরচ করে ২টি উইকেট তুলেন। ওয়ানডে সিরিজ হাতছাড়া করার ম্যাচেও তিনি ২ উইকেট তুলে দলকে রক্ষা করার চেষ্টা ভালোভাবেই করেন। হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর ম্যাচে তিনি স্যাম কারানের গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটি তুলেছিলেন। এরপর আসে ইংলিশদের বিপক্ষে ২০ ওভারের ক্রিকেট সিরিজ। ক্রিকেটের এই সংস্করণেই সবচেয়ে বেশি দুর্বলতা টাইগারদের। তবে এ বছর দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের ঠেকানোর কাজটা সম্মিলিতভাবে ভালোই করেন টাইগাররা। সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে নতুনদের সুযোগ দেয়ার লক্ষ্যে মিরাজকে একাদশে রাখেননি দ্বিতীয় দফায় বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচের দায়িত্বে আসা লঙ্কান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। প্রথম ম্যাচে জয়লাভ করে সিরিজ জয়ের আশা জাগে বাংলাদেশের। সিরিজ নিশ্চিত করার ম্যাচে কোচের ভরসার জায়গা হয়ে ওঠেন মিরাজ। ম্যাচটিতে ৪ ওভার বল করে ১২ রান খরচে ৪ জন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটসম্যানকে মাঠছাড়া করেন তিনি। সঙ্গে ব্যাট হাতেও তিনি আলো ছড়ান সেদিন। গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে ১৬ বলে স্কোরবোর্ডে ২০ রান যোগ করে বাংলাদেশের জয়ের পথ সহজ করতে অসামান্য অবদান ছিল তার।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে দেখা যায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ভিন্ন রূপ। প্রথমেই তিন উইকেট হারিয়ে যখন দলের অবস্থা শোচনীয় তখন হাল ধরেন সাকিব আল হাসান এবং তাওহিদ হৃদয়। ব্যাটারদের ভালো সংগ্রহের কারণে জয়ের জন্য প্রয়োজন পড়ে বোলারদের লড়াকু আক্রমণ। আর বাংলাদেশ দলের হয়ে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সেই কাজটা করে দেন ইবাদত হোসেন। বল হাতে লড়েন সাত ওভারের এক বল কম। তবে এর মধ্যেই তিনি বিদায় করেন ৪ জন ব্যাটসম্যানকে। এর মধ্যে আছেন পল স্টার্লিং এবং হ্যারি ট্যাকটরের মতো ব্যাটারও।
চলতি বছরের নিজেদের আলোতে দলকে রাঙিয়ে তুলতে কেবল শুরু করলেন মিরাজ ও ইবাদত। ২০২২ সালেও দলে অসামান্য অনেক অবদান ছিল তাদের। সম্প্রতি ভারতের ক্রীড়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইএসপিএন ক্রিকইনফো নিজেদের ওয়েবসাইটে তাদের পারফরম্যান্সের প্রতি সুবিচার করে মিরাজকে ২০২২ সালের বর্ষসেরা ওয়ানডে ব্যাটিং পারফর্মার এবং ইবাদতকে বর্ষসেরা টেস্ট বোলারের স্বীকৃতি প্রদান করে। গত বছরের শুরুর দিকে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে নিউজিল্যান্ডের মাটি টেস্ট জয় পায় টাইগাররা। এই জয় ছিল বাংলাদেশের একটি রেকর্ড গড়া জয়। কেননা এটিই বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের প্রথম কোনো টেস্ট জয় ছিল। ইতিহাস গড়া এই জয়ের পেছনে বড় অবদান ছিল ইবাদত হোসেনের। কিউই ব্যাটারদের সামনে মোট ২১ ওভার বল করে ৬ ওভার কোনো রানই দেননি এই পেসার। এর মধ্যে মাত্র ৪৬ রান খরচ করে ৬টি উইকেট তুলে দলকে জয়ের দিকে এগিয়ে নেন লাল-সবুজের এই প্রতিনিধি। তার অসাধারণ বোলিং আক্রমণে মাত্র ১৬৯ রানেই আটকে যায় নিউজিল্যান্ডের ইনিংস। ফলে ৪০ রানের সহজ তাড়া করে জয় পায় টাইগাররা।
গেল বছরের সেরা ওয়ানডে পারফর্মার হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া মেহেদী হাসান মিরাজ ব্যাট হাতে দলের ভরসার জায়গা তৈরি করে নেন। গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশের সর্বশেষ ভারত সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে দুরবস্থায় পড়ে টাইগাররা। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ৬৯ রানেই ৬ ব্যাটার সাজঘরে ফিরে যান। এমন অবস্থায় লজ্জাজনক পরাজয়ের শঙ্কায় পড়ে বাংলাদেশ। কঠিন পরিস্থিতিতে ৮ নম্বরে ব্যাট হাতে নেমে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করেন মিরাজ।

:: শাহাদাত হোসেন কিফাত

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়