ছিনতাইকারী থেকে দুবাইয়ের স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খান

আগের সংবাদ

বিশুদ্ধ পানি ছাড়াই স্বাস্থ্যসেবা! : উপকূলীয় হাসপাতালগুলোতে বিশুদ্ধ পানির সংকট, দেশের ২১ শতাংশ হাসপাতালে নেই বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা

পরের সংবাদ

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির সমালোচনা যুক্তরাষ্ট্রের

প্রকাশিত: মার্চ ২১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ২০২২ সালে মানবাধিকার কেমন ছিল সে বিষয়ে গতকাল সোমবার বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তারা। এতে শুরুতেই ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ওপর আলোকপাত করে বলা হয়েছে, ওই নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয়বার ৫ বছর মেয়াদে ক্ষমতায় আসে। কিন্তু ওই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু ছিল না বলে মত দিয়েছেন পর্যবেক্ষকরা। এর কারণ ব্যালট বাক্স ভরাট করা, বিরোধী দলীয় এজেন্ট ও ভোটারদের ভীতি প্রদর্শনসহ নানা অনিয়ম।
রিপোর্টে আরো বলা হয়, রাজনৈতিক বন্দি ও আটক ব্যক্তিদের নিয়ে অনেক রিপোর্ট আছে। রাজনৈতিক কারণে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের রিপোর্ট আছে। এক্ষেত্রে জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি দেখানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বেআইনি হত্যা বা খেয়ালখুশিমতো হত্যাকাণ্ড গত বছর অব্যাহত ছিল। নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের অপরাধ থেকে এবং দুর্নীতি থেকে দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে। নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের মধ্যে আছে পুলিশ, সীমান্ত প্রহরী, সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিট, যেমন র‌্যাব। তারা অভ্যন্তরীণ এবং সীমান্তের নিরাপত্তা রক্ষা করেন। অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় সেনাবাহিনীর কিছু দায়িত্ব আছে। নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা রিপোর্ট করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। আর সেনাবাহিনী রিপোর্ট করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিশ্বাসযোগ্য বহু রিপোর্ট আছে। এর মধ্যে আছে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, জোরপূর্বক গুম, নির্যাতন ও নিষ্ঠুরতা, অমানবিকতা, সরকার দ্বারা অশোভন আচরণ ও শাস্তি দেয়াসহ বেআইনি ও খেয়ালখুশিমতো খুন। জেলখানায় রয়েছে কষ্টকর ও জীবনের প্রতি হুমকির মতো পরিস্থিতি। খেয়ালখুশি মতো গ্রেপ্তার ও আটক করা হয়। রাজনৈতিক ব্যক্তিদের জেলে আটকে রাখা হয়েছে অথবা আটক দেখানো হয়ছে। অন্য দেশে ব্যক্তি বিশেষের বিরুদ্ধে নিষ্পেষণ করা হয়। বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় রয়েছে গুরুতর সমস্যা। প্রাইভেসিতে খেয়ালখুশিমতো অথবা বেআইনিভাবে হস্তক্ষেপ করা হয়। মুক্ত মত প্রকাশ এবং মিডিয়ার স্বাধীনতায় আছে গুরুতর বিধিনিষেধ। আছে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা অথবা সহিংসতার হুমকি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অন্যায়ভাবে সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার করা হয় অথবা বিচার করা হয়। আছে সেন্সরশিপ। মত প্রকাশকে সীমিত করতে অপরাধবিষয়ক আইন প্রয়োগ করা হয় অথবা হুমকি দেয়া হয়। বাংলাদেশে ইন্টারনেট স্বাধীনতায় আছে গুরুতর বিধিনিষেধ। শান্তিপূর্ণ সমাবেশ এবং স্বাধীন জমায়েতের স্বাধীনতায় ব্যাপকভাবে হস্তক্ষেপ করা হয়। সংগঠনের ওপর, তহবিল অথবা বেসরকারি সংগঠন ও নাগরিক সমাজের সংগঠনের বিরুদ্ধে আছে কঠোর আইন। অভ্যন্তরীণ অথবা আন্তর্জাতিক মানবাধিকারবিষয়ক সংগঠনের বিরুদ্ধে সরকার মারাত্মকভাবে বিধিনিষেধ দিয়েছে বা হয়রান করছে। তদন্তে ঘাটতি আছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে স্বাধীন ট্রেড ইউনিয়ন এবং শ্রমিকদের অধিকারের জন্য মুক্তভাবে সমাবেশ করা এবং সম্মিলিতভাবে দর কষাকষি করার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আছে। নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের নিয়ম লঙ্ঘন এবং দুর্নীতির ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে দায়মুক্তি দেয়ার বহু রিপোর্ট আছে।

যেসব কর্মকর্তা বা নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন বা দুর্নীতিতে যুক্ত হয়েছেন তাদের শনাক্ত করা, তদন্ত করা, বিচারের আওতায় আনা এবং শাস্তি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সরকার খুব কমই পদক্ষেপ নিয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়