নায়িকা মাহি ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা

আগের সংবাদ

শিবচরে বাস খাদে, নিহত ১৯ : আন্ডারপাসের দেয়ালে ধাক্কা লেগে দুমড়েমুচড়ে যায় বাসটি > আহত ১৫ জনের ৮ জন ঢামেকে

পরের সংবাদ

রাণীনগর থানাপ্রাঙ্গণে সমন্বিত সবজি চাষ

প্রকাশিত: মার্চ ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নওগাঁ থেকে মো. আবু বকর সিদ্দিক : নওগাঁর রাণীনগর থানাপ্রাঙ্গণের পরিত্যক্ত জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে বিষমুক্ত সমন্বিত সবজির বাগান। থানার এই সবজির বাগান সাধারণ মানুষদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। নিজেদের বাড়ির আশপাশের পরিত্যক্ত জমি ফেলে না রেখে সেখানে একটু সময় আর শ্রম দিয়ে সবজি চাষ করে নিজেদের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি আশপাশের মানুষদের মাঝেও সরবরাহ সম্ভব। তারই এক অনন্য দৃষ্টান্ত থানা প্রাঙ্গণে গড়ে তোলা এই বিষমুক্ত সমন্বিত সবজির বাগানটি।
বর্তমানে পুরো থানা প্রাঙ্গণ একটি সবুজের বেষ্টনিতে পরিণত হয়েছে। থানায় সেবা নিতে আসা উপজেলার পারইল গ্রামের বাবলু রহমান থানার পরিবেশ নিয়ে তার অভিমত ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন- একসময় থানা প্রাঙ্গণকে মনে হতো একটি ছোটখাটো জঙ্গলের মতো। এখানে সেখানে পড়ে থাকত ময়লা আর আবর্জনা। সন্ধ্যার পর থানার মধ্যে শেয়ালদের বিচরন ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্তু এখন থানায় এসে কাজ শেষে পুরো প্রাঙ্গণটিকে একবার ঘুরে না দেখলে মনে অতৃপ্তি থেকে যায়। বিশেষ করে সবজির বাগান, মসজিদসংলগ্ন স্থানে ফুলের ছোট্ট বাগান ও থানার মূল ভবনে প্রবেশ করতেই সুসজ্জিত ফুলের বাগান দেখে চোখ জুড়ে যায়। অন্যান্য থানায় এমন পরিবেশ সচরাচর চোখে পড়ে না।
এ ব্যাপারে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ ভোরের কাগজকে বলেন- মানবিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা ‘এক ইঞ্চি জমিও যেন পরিত্যক্ত পড়ে না থাকে’ সেই মোতাবেক পূর্বের স্যারদের বাগান গড়ে তোলার সূচনাকে আমি বৃহৎ আকারের রূপ দান করার চেষ্টা করেছি মাত্র। আমি এই থানায় যোগদানের পরই পরিত্যক্ত সব জমিগুলোতে চাষাবাদ শুরু করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। তারই ধারাবাহিকতায় থানার উত্তর দিকে ছোট্ট একটি বাগান ছিল সেটাকে সম্প্রসারিত করে সেখানে উপজেলা কৃষি বিভাগের সহায়তায় শীতকালীন বিভিন্ন সবজির চাষ শুরু করি।
বর্তমানে বাগানে পেঁয়াজ, বেগুন, মরিচ, ধনিয়া, স্কোয়াশ, সূর্যমুখি, লালশাক, সবুজশাক, ঢেড়স, পেঁপে, সজনে, লাউসহ বিভিন্ন সবজির গাছ শোভা পাচ্ছে। এছাড়াও বরই বাগানে শোভা পাচ্ছে নানা ধরনের বরই। আমরা যারা থানায় কর্মরত আছি তারা সবাই সাধ্যমতো এই বাগাটিতে সময় দেয়ার চেষ্টা করি। এতে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করতে পারছি। এসব সবজি দিয়ে আমাদের চাহিদা পূরণ হচ্ছে। তিনি বলেন- থানায় আবাসিক কর্মকর্তাসহ সব পুলিশ সদস্যদের জন্য প্রতিদিন যে রান্না করা হয় সেই রান্নার সিংহভাগ সবজি এই বাগান থেকে পাওয়া যাচ্ছে। এতে একদিকে যেমন অর্থের সাশ্রয় হচ্ছে অপরদিকে বাগানে মাত্রারিক্ত কীটনাশকের ব্যবহার না করায় ক্ষতির হাত থেকে পরিবেশসহ আমরা নিজেরাও রক্ষা পাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন থানার পশ্চিম দিকে পরিত্যক্ত পড়ে থাকা প্রায় ৮ শতাংশ জমির আগাছা ও জঙ্গল পরিস্কার করে মাটি দিয়ে ভরাট করে একটি আ¤্রপালি আমের বাগান তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। আমবাগানটি তৈরি হলে বাগানে উৎপাদিত আম দিয়ে থানায় কর্মরত সব সদস্যরা বিষমুক্ত আমের মাধ্যমে নিজেদের পরিবারের চাহিদা পূরণ করতে পারবেন। এছাড়াও থানা মূল ভবনের মাঝখানের পরিত্যক্ত জায়গাটিও পরিষ্কার করে একটি বাগান তৈরি করেছি। সেখানে বর্তমানে শোভা পাচ্ছে ড্রাগন ফল, বেদেনা ফলের গাছ, গোলাপ, পাতাবাহারসহ বিভিন্ন ধরনের ফুলের গাছ।
প্রতিদিন সকালে চোখ মেললেই বাগানে ফুটে থাকা বিভিন্ন ফুল দেখলেই এক ভালোলাগার অনুপ্রেরণা হৃদয়ের মাঝে কাজ করে ফলে ভালো কাজ করার মধ্যদিয়ে সুন্দর একটি দিন কাটানোর আগ্রহের জন্ম নেয় মনে। এছাড়াও প্রতিনিয়তই থানা প্রাঙ্গণে জন্ম নেয়া জঙ্গলগুলো পরিষ্কার করার মধ্যদিয়ে পুরো থানা প্রাঙ্গণকে পরিচ্ছন্ন একটি মনোরম, ছিমছাম ও সুন্দর একটি পরিবেশ হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমি আশা রাখি পরবর্তীতে যারা এই থানায় আসবেন তারাও এই সৃজনশীল কাজগুলোর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়