নায়িকা মাহি ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা

আগের সংবাদ

শিবচরে বাস খাদে, নিহত ১৯ : আন্ডারপাসের দেয়ালে ধাক্কা লেগে দুমড়েমুচড়ে যায় বাসটি > আহত ১৫ জনের ৮ জন ঢামেকে

পরের সংবাদ

রঙিন ভবিষ্যতের ইঙ্গিত হৃদয়ে

প্রকাশিত: মার্চ ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাংলাদেশ জাতীয় দলের ১৪০তম ওয়ানডে ক্রিকেটার হিসেবে গতকাল আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক হয় তৌহিদ হৃদয়ের। চলতি মাসের শুরুর দিকে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অভিষেকের পর ইংলিশদের প্রথমবার পরাজিত করার ম্যাচে ভালোই অবদান ছিল তার।
এবার আইরিশদের বিপক্ষেও গতকাল ওয়ানডে অভিষেকের ম্যাচেই ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি তুলে নিয়ে নিজের রঙিন ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিলেন তিনি। শুধু অর্ধশত রান করেই নিজেকে গুটিয়ে রাখেননি বাংলাদেশ দলে নতুন অভিষিক্ত এই টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান। সাকিবের সেঞ্চুরির আশা জাগিয়ে অপ্রত্যাশিত বিদায়ের পর দলের ভালো সংগ্রহ গড়ার দায়িত্বটা মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে জুটি বেঁধে ভালোভাবেই পালন করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত তিনিও ৮ রানের হতাশা নিয়ে ৮৫ বলে ৯২ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন।
অভিষেকের ম্যাচে দলকে দারুণ একটি ইনিংস উপহার দিয়ে সেঞ্চুরির আশা জাগিয়েও ৮ রানের আক্ষেপে পুড়ে বিদায় নেন তৌহিদ হৃদয়। সেঞ্চুরি করতে না পারলেও ওয়ানডে অভিষেকে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েছেন তিনি। তার আগে ২০১১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অভিষেকে ৬৩ রান করেছিলেন নাসির হোসেন। এরপর আর কোনো বাংলাদেশি ক্রিকেটার অভিষেক ম্যাচে ৬৩ রান টপকে নাসিরের রেকর্ডে হানা দিতে পারেননি। সেঞ্চুরির দেখা পেলে বাংলাদেশ ক্রিকেটে নতুন এক ইতিহাস গড়তে পারতেন হৃদয়। ইতিহাসে নিজের নাম তুলতে না পারলেও ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচেই অনাকাক্সিক্ষত আরেকটি রেকর্ডে নাম তুলেছেন তিনি। ওয়ানডে অভিষেকে নব্বইয়ের বেশি রান করে আউট হওয়া ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হৃদয়। তার আগে নব্বই পেরিয়ে আউট হওয়া পাঁচ ব্যাটসম্যানের মধ্যে স্টিফেন ফ্লেমিং ৯০ রান করে, ফিল জ্যাকস ৯৪ রান করে, ওয়েন মরগ্যান ৯৯ রান করে, রাসি ফন ডার ডাসেন ৯৩ রান করে এবং শামারা ব্রুকস ৯৩ করে সাজঘরের পথ ধরেন। তাছাড়া নিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে ৯৯ রানের অপরাজিত একটি ইনিংস খেলেছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের স্বপ্নিল পাতিল।
আইরিশদের বিপক্ষে শুরুটা খুব একটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ম্যাচ মাঠে গড়ানোর মাত্র তিন ওভার চলাকালে বিদায় নেন টাইগার দলের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। আরেক ওপেনার লিটন কুমার দাসের সঙ্গে জুটি বেঁধে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন ইংলিশদের হোয়াইটওয়াশের নায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। দশম ওভারে অবস্থান শক্ত করেই বিদায় নেন লিটন। এর পরপরই মাঠ ছাড়েন শান্ত। দুই ভরসাযোগ্য ব্যাটারকে হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। তখন সাকিব আল হাসানের সঙ্গে জুটি গড়েন গতকালের ম্যাচে অভিষেকের ক্যাপ পড়া তৌহিদ হৃদয়। তাকে অপর প্রান্তে রেখে রানের গতি বাড়ান সাকিব আল হাসান।
সাকিবের ভালো সংগ্রহ গড়ার ফাঁকে সুযোগ পেয়ে নিজের প্রথম ম্যাচে ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি তুলে নেন হৃদয়। সাকিব সেঞ্চুরি থেকে ৭ রান আগে থাকতেই বিদায় নেন। এরপর পিচে আসেন মুশফিক। মিস্টার ডিপেন্ডেবল মাঠে নেমেই ব্যাট চালাতে শুরু করেন। সঙ্গে স্বীয় আলোকচ্ছটায় দলের রানকে উজ্জ্বল করে তুলতে শুরু করেন হৃদয়ও। একের পর এক ছক্কা-চারে রানের রেখাচিত্র ঊর্ধŸমুখী করেন মুশফিক-হৃদয়। শেষ পর্যন্ত মুশফিকের বিদায়ের ওভারেই বোল্ড হয়ে ফিরে যান গতকাল অভিষিক্ত তৌহিদ হৃদয়। ৯২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস গড়ার পথে তিনি ২টি ছক্কা ও ৮টি বাউন্ডারি হাঁকান। ওয়ানডে ক্রিকেটে এক ইনিংসে দুই ব্যাটসম্যানের নব্বইয়ের ঘরে আউট হওয়ার ১১তম ঘটনা এটি।
এর আগে ইংলিশদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে খেলা প্রথম ম্যাচেই তিনি একশর বেশি স্ট্রাইক রেট ধরে রেখে ব্যাট চালিয়েছিলেন। দলের কোণঠাসা মুহূর্তে নাজমুল হাসান শান্তর সঙ্গী হয়ে তিনি ক্যারিয়ারের প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ১৭ বলে ২৪ রান করেন। ম্যাচটিতে তার স্ট্রাইক রেট ছিল ১৪১ এরও বেশি। দ্বিতীয় ম্যাচে তিনি ১৮ বল খেলে ১৭ রান করেন। তৃতীয় ম্যাচে তিনি ব্যাট হাতে নামার সুযোগ পাননি।
বাংলাদেশ জাতীয় দলের ওয়ানডে জার্সিতে গত বছরের আগস্টের পর সুযোগ পাওয়া প্রথম খেলোয়াড় হৃদয়। তার আগে ১৩৯তম ওয়ানডে ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক হয়েছিল এবাদত হোসেনের। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে নামার আগে হৃদয়কে অভিষেক ক্যাপ পড়িয়ে দেন মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে ২০২০ বিশ্বকাপজয়ী দলের একাদশে ছিলেন হৃদয়। মূলত যুবাদের সেই বিশ্ব আসরে পারফর্ম করেই লাইমলাইটে আসেন তিনি। এরপর বিসিবির এইচপি দলের হয়েও খেলার সুযোগ পান তিনি।
সর্বশেষ তিনি নজরকাড়া পারফরম্যান্স করেছিলেন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) নবম আসরে সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে। ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক লিগে খেলার মাধ্যমেই তিনি প্রতিপক্ষ হিসেবে কিছু বিশ্বমানের বোলারদের মুখোমুখি হয়েছিলেন। এই সামান্য অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েই তিনি প্রথম ম্যাচে রেকর্ডবুকে নিজের নাম তুললেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়