নায়িকা মাহি ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা

আগের সংবাদ

শিবচরে বাস খাদে, নিহত ১৯ : আন্ডারপাসের দেয়ালে ধাক্কা লেগে দুমড়েমুচড়ে যায় বাসটি > আহত ১৫ জনের ৮ জন ঢামেকে

পরের সংবাদ

আইরিশদের বিরুদ্ধে রেকর্ড গড়া জয় টাইগারদের

প্রকাশিত: মার্চ ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাওয়াশ করে আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান টাইগারদের বিপক্ষে গতকাল ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে পাত্তাই পায়নি আইরিশরা। টাইগাররা গতকাল সফরকারী আয়ারল্যান্ডকে ১৮৩ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে। যা লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের ওয়ানডে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জয়।
নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩৩৮ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে এটি টাইগারদের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। ৩৩৮ রানের জবাব দিতে নেমে ইবাদত হোসেন, নাসুম আহমেদ

এবং তাসকিনের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৩০.৫ ওভারে ১৫৫ রানে গুটিয়ে যায় আইরিশদের ইনিংস। এতে বাংলাদেশের জয় আসে ১৮৩ রানের ব্যবধানে। এর আগে রানের ব্যবধানে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয় ছিল ১৬৯ রানের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে, ২০২০ সালে। অভিষেক ম্যাচে ৮৫ বলে নান্দনিক ৯২ রানের ইনিংস খেলায় ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন তৌহিদ হৃদয়।
ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে সিলেটের মাটিতে বিসিবি একাদশের বিপক্ষে নিজেদের দাপট দেখিয়ে ছিল আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট দল। তবে গতকাল সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে টাইগারদের সামনে কোমরসোজা করে দাঁড়াতে পারেনি আইরিশরা। শুরুর দিকে বাংলাদেশি ব্যাটারদের চাপে ফেললেও সাকিব আল হাসান এবং তৌহিদ হৃদয়ের দাপুটে ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করে ৩৩৮ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে তামিম বাহিনী। এর আগে ২০১৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ ৩৩৩ রানের সংগ্রহ গড়েছিল। যা এতদিন টাইগারদের দলীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল। গতকাল সিলেটে সেই রেকর্ড ভেঙে (৩৩৮ রানের) নতুন রেকর্ড গড়েছে সাকিব-হৃদয়রা।
টস জিতে গতকাল বাংলাদেশকে আগে ব্যাট করতে পাঠায় আইরিশরা। ইনিংস ওপেন করতে নামেন টাইগার অধিনায়ক তামিম ইকবাল এবং লিটন কুমার দাস। শুরুর দিকেই হোঁচট খায় বাংলাদেশ। তৃতীয় ওভারেই মার্ক অ্যাডেইরের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে স্টার্লিংয়ের হাতে ধরা পড়েন তামিম ইকবাল। ৯ বল খেলে মাত্র ৩ রান নিয়ে তার বিদায়ে কিছুটা হলেও চাপে পড়ে স্বাগতিকরা। তিনে নামেন ইংলিশদের হোয়াইটওয়াশের নায়ক নাজমুল হাসান শান্ত। লিটন-শান্ত জুটিতে ভালোভাবেই এগিয়ে যেতে থাকে বাংলাদেশের ইনিংস। অঘটন ঘটে দশম ওভারে। কার্টিস ক্যাম্ফারের বলে ক্যাচ তুলে ফের স্টার্লিংয়ের হাতেই ধরা পড়েন ৩১ বলে ২৬ রান করা লিটন। এর ছয় ওভার পরেই আউট হন শান্ত। তিনি বিদায়ের আগে ৩৪ বল খেলে স্কোরবোর্ডে ২৫ রান যোগ করেন। তিন উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপের মধ্যে পড়ে বাংলাদেশ দল। তবে চার ও পাঁচে নামা সাকিব আল হাসান এবং এই ম্যাচ দিয়ে ওয়ানডে দলে সুযোগ পাওয়া তৌহিদ হৃদয় জুটি বেঁধে রানে গতি দিতে থাকেন। দুই ব্যাটার দলের হাল ধরে বড় সংগ্রহ গড়া সহজ করে দেন। সাকিব আল হাসান দ্বিতীয় বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে ৭০০০ রান গড়ার সঙ্গে ৮৯ বলে ৯৩ রানের একটি ইনিংস খেলে দলকে শঙ্কামুক্ত করেন। সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে সাকিব বিদায় নিলেও তাণ্ডব চালিয়ে যান হৃদয় এবং ছয়ে নামা মুশফিকুর রহিম। মিস্টার ডিপেন্ডেবল মাঠে নেমেই রানে গতি দিতে থাকেন। ২৬ বলে ৪৪ রানের ইনিংস গড়ে মুশফিক বিদায় নেয়ার ওভারেই ৮ রানের আক্ষেপ নিয়ে বিদায় নেন ৮৫ বলে ৯২ রানের ইনিংস গড়া তরুণ ব্যাটার তৌহিদ হৃদয়। এরপর তাসকিন আহমেদ, ইয়াসির আলী রাব্বী, নাসুম আহমেদ এবং মোস্তাফিজের ব্যাট থেকে আসা রানে ৮ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩৩৮ রান।
রান তাড়ায় মাঠে নেমে প্রথম দিকেই হোঁচট খায় আয়ারল্যান্ড। কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমানের বলে লেগ বিফোরের আউট হন পল স্টার্লিং। তবে রিভিউ নিয়ে জীবন পান এই ওপেনার। এরপর প্রথম ব্রেকথ্রু পেতে ১২তম ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় বাংলাদেশকে। সাকিবের বল ডিফেন্স করতে গিয়ে উইকেটরক্ষক মুশফিকের হাতে ধরা পড়েন ৩৮ বলে ৩৪ রান করা স্টিফেন দোহেনি। এর পরের ওভারেই ইবাদত হোসেনের বলে মুশফিকের হাতে ধরা পড়ে বিদায় নেন স্টার্লিং। একবার জীবন পাওয়া এই ব্যাটার ৩১ বলে স্কোরবোর্ডে ২২ রান যোগ করেন। ১৫তম ওভারে হ্যারি ট্যাকটরকে বিদায় করে নিজের দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন ইবাদত। এন্ড্রো বালবির্নিকে ফেরান আরেক পেসার তাসকিন আহমেদ। আঠারোতম ওভারে আরেকটি উইকেটের দেখা পান তাসকিন। এবার লর্কান টাকার তার বল বুঝতে না পারায় বল চলে যায় ইয়াসির আলী রাব্বীর হাতে। সিলেটের মাটিতে টানা চারটি উইকেট তুলে নেন পেসাররা। পরের ব্রেকথ্রু আসে স্পিনার নাসুম আহমেদের হাত ধরে। কার্টিস ক্যাম্ফার তার বল ডিফেন্স করতে গিয়ে লেগ বিফোরে আউট হন। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের সঙ্গে দ্বিমত থাকায় রিভিউ নিয়েও তিনি রক্ষা পাননি। নিজের ষষ্ঠ ওভারে নাসুম তুলে নেন গ্রেথ ডেলানির উইকেট। এবারও তার বল ডিফেন্স করতে গিয়ে লেগ বিফোরের শিকার হন আইরিশ ব্যাটার। নিজের দ্বিতীয় উইকেট তোলার পরের বলেই তিনি অ্যান্ডি ম্যাকব্রিনকে গোল্ডেন ডাকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিক চান্স তৈরি করেন। তবে অ্যাডেইরের সচেতনতায় হ্যাটট্রিক হাতছাড়া হয় নাসুমের। শেষ পর্যন্ত ইবাদত হোসেনের বলে ১১ বলে ১৩ রান করা মার্ক অ্যাডেইর এবং ৪৭ বলে ৪৫ রান করা জর্জ ডকরেল আউট হলে মাত্র ১৫৫ রানেই গুটিয়ে যায় আইরিশদের ইনিংস। এর মধ্য দিয়ে ১৮৩ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় পায় টাইগাররা। বল হাতে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের মধ্যে পেসার ইবাদত হোসেন ৪২ রানে ৪টি, তাসকিন আহমেদ ১৫ রানে ২টি এবং স্পিনার নাসুম আহমেদ ৪৩ রানে ৩টি উইকেট লাভ করেন। আইরিশদের অপর উইকেটটি তুলে নেন সাকিব আল হাসান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়