আশালতা : নজরুলের উত্থান-পতনময় জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য নাম

আগের সংবাদ

বর্ষায় জলাবদ্ধতার আশঙ্কা চট্টগ্রাম নগরবাসীর : চসিক-চউক ব্যস্ত দোষারোপে

পরের সংবাদ

শির সফরে শান্তি কতদূর : কথা হবে জেলেনস্কির সঙ্গেও > ইউক্রেন যুদ্ধ

প্রকাশিত: মার্চ ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শাহরিয়ার বিপ্লব : মধ্যপ্রাচ্যে কূটনৈতিক সাফল্যের পর চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং এবার প্রকাশ্যে আরেকটা খেলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন মস্কো ও ইউক্রেন নিয়ে। এই খেলার অংশ হিসাবে আগামী সোমবারই মস্কো যাচ্ছেন চীনের প্রসিডেন্ট। সেখানে তিন দিন থাকবেন তিনি। এই সফরের পরই শি কথা বলবেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির জেলেনস্কির সঙ্গেও। এমন খবর দিয়েছে রয়টার ও পলিটিকো।
জেলেনস্কির মুখপাত্র সের্গেই নিকোফোরভ আসন্ন আলোচনাকে অস্বীকার করেন নাই। তবে তিনি বলেন, আমার কাছে কোনো অতিরিক্ত তথ্য নেই। ইতোমধ্যে বেইজিং একটি অস্পষ্ট শব্দে শান্তি প্রস্তাব দিয়েছে। জেলেনস্কি বলেছেন যে, তিনি শির সঙ্গে বৈঠকে পরিকল্পনার অংশ নিয়ে আলোচনার জন্য উন্মুক্ত থাকবেন।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল গত সপ্তাহে বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত একটি সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে চলমান দ্ব›দ্ব শুরুর পর প্রথমবারের মতো ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলার পরিকল্পনা করেছেন। তবে পত্রিকাটি জানিয়েছে, সম্ভবত শি জিনপিংয়ের মস্কো সফরের পর পরের সপ্তাহের প্রথম দিকে শি জেলেনস্কির সঙ্গে ভার্চুয়াল কথা বলবেন। ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে ইউক্রেনে শান্তির পথ প্রশস্ত করতে চীন তার নিজস্ব ১২ দফা রোডম্যাপ দিয়েছিল। যে শান্তি পরিকল্পনাটি পশ্চিমে গুরুত্ব পায়নি। পশ্চিমারা যখন সক্রিয়ভাবে ইউক্রেনকে অস্ত্র দিয়ে সমর্থন করছে এবং মস্কোর ওপর অভূতপূর্ব নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে, চীন তখন বারবার সংঘাতের সব পক্ষকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব

শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে।
বাখমুত ঘিরেই আলোচনা : গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই উভয় পক্ষই পূর্ব ইউক্রেনের একটি ছোট বিধ্বস্ত শহর বাখমুতে নিরলস লড়াইয়ের বর্ণনা দিয়েছে। বাখমুতের ধ্বংসাবশেষ নিয়ে মাসব্যাপী লড়াই, যাকে বিভিন্ন মহল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ইউরোপের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী পদাতিক যুদ্ধ হিসাবে বর্ণনা করছে। মস্কো চাচ্ছে বাখমুতসহ আশপাশের বাকি দোনেৎস্ক অঞ্চল দখল ধরে রাখতে।

কিয়েভ বলছে এটি তারা হাতছাড়া করবে না। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই যুদ্ধকে সবচেয়ে কঠিন বলে বর্ণনা করেছেন। উভয় পক্ষই ডোনেটস্ক পিপলস রিপাবলিক শহরের কৌশলগত গুরুত্ব স্বীকার করে। বিষয়টির সঙ্গে পরিচিতরা বলেছেন, মস্কো এবং কিয়েভ উভয়েই পূর্বাঞ্চলীয় শহরটিতে যুদ্ধের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে তীব্র লড়াইয়ের কথা জানিয়েছে। যদি আলোচনা ফলপ্রসূ হয় তবে সম্ভবত এটিই ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধের সর্বশেষ প্রদর্শন হিসাবে চিত্রিত হতে পারে।
প্রত্যাশা বাড়ছে : ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল গত মাসে রিপোর্ট করেছিল যে, এপ্রিল বা মে মাসের শুরুতে শির মস্কো সফর হতে পারে। কিন্তু প্রত্যাশার চেয়েও দ্রুত হতে যাচ্ছে এই সফর। এটি সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে শান্তির পক্ষে সবচেয়ে বড় আয়োজন। যা পশ্চিমারা সন্দেহের চোখে দেখছে।
শির সফরসূচি : শির রাশিয়া সফর নিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে বলা হয়, রুশ প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির পুতিনের আমন্ত্রণে চীনা প্রেসিডেন্ট সি ২০ থেকে ২২ মার্চ রাশিয়া সফর করবেন। মস্কো সফরকালে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেছেন, এই বৈঠকের উদ্দেশ্য হবে দ্বিপক্ষীয় আস্থা আরো গভীর করা। গতকাল শুক্রবার এক টুইটবার্তায় চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনিইং বলেছেন, শি’র এ সফর হতে যাচ্ছে ‘বন্ধুত্ব ও শান্তির’।
শির সফর নিয়ে ক্রেমলিনও বিবৃতি দিয়েছে। সেখানে বলা হয়, পুতিন ও শি তাদের মধ্যকার বৈঠকে কৌশলগত সহযোগিতা নিয়ে কথা বলবেন। ক্রেমলিন বলেছে, রাশিয়া-চীনের মধ্যকার সামগ্রিক অংশীদারত্ব ও কৌশলগত সহযোগিতাকে আরো গভীর করার বিষয়ে দুই নেতা আলোচনা করবেন। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ নথিতে দুই নেতা সই করবেন। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত বৃহস্পতিবার মস্কো ও কিয়েভকে ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব’ শান্তি আলোচনা পুনরায় শুরুর আহ্বান জানিয়েছেন। কিয়েভ বলেছে, বেইজিংয়ের এই আহ্বান ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতার গুরুত্ব বাড়িয়েছে।
পশ্চিমা সন্দেহ : বিবিসি লিখেছে, এমন এক সময়ে এই সফর হচ্ছে যখন রাশিয়ার মিত্র বেইজিং ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাব হাজির করেছে। পশ্চিমা দেশগুলো এই প্রস্তাবকে সন্দেহের চোখে দেখছে। রাশিয়াকে অস্ত্রশস্ত্র দেয়ার ব্যাপারেও তারা চীনকে সতর্ক করেছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন আগে বলেছিলেন, বেইজিং রাশিয়াকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করার কথা ভাবছে। চীন এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
পুতিন আসবেন ভারতে : এদিকে খবর বেরিয়েছে জি২০ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতে আসতে পারেন ভøাদিমির পুতিন। এ বছর জি২০ সম্মেলন বসছে ভারতে। ক্রেমলিন জানিয়েছে, ভারতে আসতে পারেন পুতিন। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ বলেছেন, সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। তবে এখনো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
জাতিসংঘ তদন্তে রুশ স্বস্তি : ইউক্রেনে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গণহত্যার অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে জাতিসংঘের তদন্ত দলের প্রধান নরওয়ের বিচারক এরিক মোসে জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমরা ইউক্রেনে গণহত্যার কোনো ঘটনা খুঁজে পাইনি। তবে সেখানে আমরা লক্ষ্য করেছি যে, দেশটি এ সংঘাতের এমন কিছু দিক আছে যা এ ধরনের অপরাধের ব্যাপারে প্রশ্ন তুলতে পারে। কিন্তু আমরা এখনো এখানে এমন ঘটনার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়