শেয়ারট্রিপ : অনলাইনে তারিখ পরিবর্তন ও রিফান্ড সেবা চালু

আগের সংবাদ

চিকিৎসা ব্যয়ে পিষ্ট রোগীরা : চিকিৎসায় রোগীর নিজস্ব ব্যয় প্রায় ৭০ শতাংশ, সবচেয়ে বেশি ব্যয় ওষুধ কিনতে- ৬৫ শতাংশ

পরের সংবাদ

সাঁওতালদের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগের সুফল নেই : ঠাকুরগাঁওয়ে বন্যপ্রাণী শিকার বন্ধ হচ্ছে না

প্রকাশিত: মার্চ ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৭, ২০২৩ , ১২:৪৮ পূর্বাহ্ণ

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁওয়ে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের পক্ষ থেকে সাঁওতালদের মূল শ্রোতধারায় আনতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও বণ্যপ্রাণী শিকার বন্ধ হচ্ছে না। তারা বিশেষ দিবস ছাড়াও দলবেঁধে বিভিন্ন এলাকায় নির্বিঘেœ হত্যা করছে এসব বন্যপ্রাণী। মাঝে মধ্যেই নানা বয়সিদের নিয়ে দল গঠন করে বিভিন্ন এলাকায়, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, শেয়াল, বেজি, বাগডাসা, বনবিড়ালসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করতে দেখা যায়।
কিছুদিন আগে লক্ষ্য করা যেত সাঁওতালদের বিশেষ দিবস উপলক্ষে বণ্যপ্রাণী শিকার করা হতো। তবে ধীরে ধীরে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি সংস্থা সাঁওতালদের নিয়ে কাজ শুরু করে। তাদের মূল ¯্রােতধারায় নিয়ে আসতে নেয়া হয় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপও। বন্যপ্রাণী হত্যার প্রবণতা কমলেও এখনো সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়নি। বর্তমানে বিশেষ দিবস বা দিন ছাড়াও দেদার জেলার বিভিন্ন স্থানে এসব পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী প্রাণীকে হত্যার চিত্র চোখে পড়ে। এ কারণে বন্যপ্রাণী আজ হুমকির মুখে। বর্তমানে এমনিতেই বিভিন্ন বণ্যপ্রাণী বিলুপ্তপ্রায়; এর উপর এভাবে শিকার চলমান থাকলে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
সম্প্রতি সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের বুড়িবাঁধ এলাকায় চোখে পড়ে একদল সাঁওতাল গম, ভুট্ট্রা ক্ষেতে বন্যপ্রাণী শিকার করছেন। এ সময় তারা তীর-ধনুক, বল্লম, লাঠিসোটা দিয়ে বেশ কয়েকটি বেজি হত্যা করে। তাদের শিকার করা দেখতে উৎসুক মানুষজন সেখানে ভিড় জমায়। লক্ষ্য করা যায়, সাঁওতালদের ৪-৫ জনের দলটি গম ক্ষেতের ভেতরে লাঠি দিয়ে আঘাত করছে এবং মুখ দিয়ে শব্দ করছে। এ সময় বেজিরা প্রাণভয়ে এদিক-ওদিক ছুটাছুটি করতে থাকে। তখন সাঁওতালরা তীর ছুড়ে তাদের শিকার করেন। শিকারিদের নাম, পরিচয় জানতে চাইলে তারা তা জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়ে শুধু জানায় তারা সাঁওতাল, তাদের বাড়ি সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের ফাড়াবাড়ি শিমুলতলীতে।
এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও আদিবাসী পরিষদের উপদেষ্টা এডভোকেট ইমরান হোসেন চৌধুরী বলেন, এখন বন্যপ্রাণী মারে না ওরা। বর্তমানে শিকার নাই। সাঁওতালরা যাতে বন্যপ্রাণী হত্যা না করে সে জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ওদেরকে সংগঠন থেকে নিষেধ করা হয়েছে, যে এটি বেআইনি। ই-এসডিও প্রেমদীপ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের সতর্ক করা হয়েছে; তাই এখন আর এ জাতীয় ঘটনা ঘটেনা।
ঠাকুরগাঁও বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী যে কোনো ধরনের বন্যপ্রাণী শিকার করা সম্পূর্ণ বেআইনি। বন বিভাগের পক্ষ থেকে সাঁওতালদের বন্যপ্রাণী শিকার বন্ধে কোনো প্রকল্প চালু নেই। তবে বেসরকারি সংস্থাগুলো ইচ্ছা করলে তাদের নিয়ে কাজ করতে পারে। আমরা যে কোনো প্রোগ্রামে গেলে তাদের যথাসাধ্য বোঝানোর চেষ্টা করি।
বণ্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট বাংলাদেশের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান কনক রায় বলেন, ইতোমধ্যে দেশের প্রায় সব জায়গাতেই সাঁওতাল সম্প্রদায়ের মানুষের বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, যে এটি একটি অপরাধ। এর জন্য শাস্তির বিধানও রয়েছে। তবে বন্যপ্রাণী হত্যা বন্ধে সচেতনতামূলক কার্যক্রমগুলো বৃদ্ধি করতে হবে। বন্যপ্রাণী রক্ষা করলে আমাদের কি উপকার রয়েছে তা তাদের জানাতে হবে। নির্দিষ্ট এলাকার তথ্য থাকলে আমাদের জানালে আমরা ওই এলাকায় গণসচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমে বন্যপ্রাণী হত্যা রোধ করতে পারব।
বন্যপ্রাণী ধরা, মারা, খাওয়া, ক্রয়-বিক্রয়, পাচার, দখলে রাখা বা শিকার করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। বন্যপ্রাণী দেশের সম্পদ, জীবন, জীবিকা ও পরিবেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত অপরাধ দমনে সবাই এগিয়ে আসবেন এবং এসব জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ভূমিকা রাখবেন এমনটাই প্রত্যাশা সবার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়