শেয়ারট্রিপ : অনলাইনে তারিখ পরিবর্তন ও রিফান্ড সেবা চালু

আগের সংবাদ

চিকিৎসা ব্যয়ে পিষ্ট রোগীরা : চিকিৎসায় রোগীর নিজস্ব ব্যয় প্রায় ৭০ শতাংশ, সবচেয়ে বেশি ব্যয় ওষুধ কিনতে- ৬৫ শতাংশ

পরের সংবাদ

‘ঐ মহামানব আসে’ : আনোয়ারা সৈয়দ হক

প্রকাশিত: মার্চ ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বাঙালি জাতির রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় জীবনে একটি বিশেষ দিন আজ। এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার মতো অজ ও অবহেলিত কিন্তু সবুজ-শ্যামলিমায় ভরা একটি গ্রামে অভিজাত একটি পরিবারে একটি শিশুর জন্ম হয়েছিল। বলাবাহুল্য, তিনি ছিলেন আমাদের জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান। চোখ ভিজে যায়, চোখ ভেসে যায় পানিতে যখন আমরা তার কথা স্মরণ করি। একটি ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল দেশের জন্য আমরা তার আত্মবিসর্জনের কথা ভাবি। নিপীড়িত, লাঞ্ছিত, অবমানিত একটি জাতির জন্য একটি স্বদেশ ভূমি, একটি আত্মপরিচয়ের ভূমি তৈরি করার জন্য তার আজীবন পরিশ্রম ও কঠোর সাধনার কথা ভাবি, ক্রমাগত বছরের পর বছর জেলখানার অন্ধকার কুঠুরির ভেতর তার পড়ে থাকার কথা ভাবি। তারপর তার বাঘের মতো পৌরুষের কথা ভাবি। অমিত তেজ, অকুতোভয় সিদ্ধান্ত ও ত্বরিত পরিকল্পনার কথা ভাবি।
মাতৃভূমির শৃঙ্খল মোচনের পরও তার সমগ্র পরিবারসহ অভূতপূর্ব আত্মত্যাগের কথা ভাবি। ৭ মার্চের সেই গৌরবময় ঐতিহাসিক দিনটির কথা ভাবি। আলাদিনের চেরাগের মতো ঘুমিয়ে থাকা, আত্মপরিচয়ে আত্মবিস্মৃত বাঙালি জাতিকে

সোনার কাঠি-রুপার কাঠি ছুঁইয়ে জাগিয়ে তোলার কথা ভাবি।
‘তোমারদের যার যা কিছু আছে-’ সেই বাক্যটির কথা ভাবি। কিন্তু আমাদের তখন কী ছিল? শুধু বাঁশের লাঠি, দা, কুড়াল, বঁটি, গুলতি এবং গুলতির জন্য ৮ হাজার গুলি, যা বাংলাদেশের একটি অজগ্রাম রাতারাতি আত্মরক্ষার জন্য তৈরি করে নিয়েছিল, অন্তত গুলতি মেরে পাকিস্তানি আগ্রাসী সৈন্যদের চোখ কানা করে দিতে পারবে এই সাহসে।
আর ছিল আমাদের হাজার হাজার তরুণ টগবগে কিশোর ও তরুণ। বাংলা মায়ের তারা ছিল নাড়িছেঁড়া ধন। বাংলা মা নিরুপায় হয়ে যেন তাদের পাঠিয়ে দিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধে। যা বাছারা যা, যুদ্ধ কর। খালে-বিলে, জলাশয়ে-কালভার্টের নিচে, ধান ক্ষেতে লুকিয়ে থেকে যুদ্ধ কর। প্রেনেড ছুড়ে মেরে যুদ্ধ কর। শত্রæর শিবিরে ঢুকে যুদ্ধ কর। কত আর তারা আমাদের মারবে? আমার যে আছে লাখ লাখ অকুতোভয় সন্তান। অফুরান তাদের জীবনীশক্তি। অফুরান তাদের সাহস। যা, বাছার যা, যুদ্ধ কর।
হ্যাঁ, তারা যুদ্ধ করেছিল। কৃষক, শ্রমিক, জেলে, তাঁতিরা, অচ্ছুতরা যুদ্ধ করেছিল। যুদ্ধ করেছিল ধনীর সন্তানও। মাতৃভূমির করুণ ডাকে কে ছিল তখন স্থির? তারা দিনকে রাত আর রাতকে দিন করেছিল। তারা বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী দেশে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। রক্ত ঝরানো ছিল সেইসব প্রশিক্ষণ। প্রশিক্ষণ নিতে গিয়েও কত আত্মবিসর্জন, কত রক্তক্ষয়, কত মৃত্যু।
এতসব কিছুর পরও বাঙালি খুশি, বাঙালি গর্বিত, বাঙালি তাদের জাতির জনকের আদেশ, নির্দেশ, পরামর্শ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছিল। জনকের বন্দিদশায় তারা জনকের অনুসারী নেতা তাজউদ্দীনের নির্দেশে এগিয়ে গিয়েছিল। যুদ্ধ করেছিল। দেশের প্রতিটি আনাচে-কানাচে তারা গড়ে তুলেছিল বিজয় তোরণ। যার যা কিছু আছে, তাই দিয়েই তারা যুদ্ধ করেছিল। নারী এবং পুরুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছিল এবং ছিনিয়ে এনেছিল বিজয়। আর সেজন্যই সোনার বাংলা হয়ে একটি বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল। কিন্তু তারও আগে অনেক আগে জন্ম হয়েছিল একজন মহিরুহের। আর সেই মহিরুহ ছিলেন আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
আজ তার জন্মদিন। আজ বাঙালির হাজার বছর ধরে স্বপ্ন দেখা মহান একটি স্বপ্নেরও জন্মদিন। জয় বাংলা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়