ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল থানার ইজিবাইক চালক সাইফুল্লাহ (১৫) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, চলতি বছরের ৪ মার্চ রাণীশংকৈল থানার রামরাই দীঘি নামক স্থানে ভুট্টা ক্ষেত থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় অজ্ঞাত অর্ধগলিত একটি লাশ উদ্ধার করা হয়। এ বিষয়ে রাণীশংকৈল থানায় মামলা হয়। পুলিশ জানতে পারে লাশটি ইজিবাইক চালক মো. সাইফুল্লাহর (১৫)। মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় গোয়েন্দা বিভাগকে। গোয়েন্দা বিভাগ, রাণীশংকৈল থানা ও হরিপুর থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে তদন্ত শুরু হয়। এর আগে চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি হরিপুর থানায় ইজিবাইক চুরির একটি মামলায় পুলিশ জানতে পারে যে, হরিপুর থানার ধীরগঞ্জ বাজার এলাকায় রাকিব (১৫) নামে এক ইজিবাইক চালককে হত্যার পর প্লাস্টিকের চিকন সুতা দিয়ে হাত-পা বেঁধে রাস্তার পাশে ভুট্টা ক্ষেতে লাশ ফেলে রাখে এবং ইজিবাইক নিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে রাকিবের বাবার কাছে ফোন দিয়ে ইজিবাইক ফেরত দেয়ার নাম করে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন হিমু নামে এক ব্যক্তি। পরে রাকিবের বাবা ওই চক্রটিকে ১৫ হাজার টাকা দিলেও ইজিবাইকটি ফেরত পাননি।
পুলিশ তদন্তে দেখতে পায়, রাণীশংকৈলের ইজিবাইক চালক মো. সাইফুল্লাহ ও হরিপুরের ইজিবাইক চালক রাকিবকে একইভাবে প্লাস্টিকের চিকন সুতা দিয়ে হাত-পা বেঁধে ভুট্টা ক্ষেতে লাশ ফেলে রাখা হয়েছিল। পরে উভয় ঘটনা একই চক্রের কাজ ধারণা থেকে রাকিবের বাবার কাছে চাঁদা দাবিকারী হিমুকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকেই বেরিয়ে আসে সাইফুল্লাহ, রাকিবকে হত্যা ও অটো চুরির ঘটনায় জড়িতদের নাম। পরে গ্রেপ্তারকৃত ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদে উভয় ঘটনায় তারা জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন রাণীশংকৈল উপজেলার মেহেদী হাসান (১৮), আব্দুল কাদের (৩০), সাদেকুল ইসলাম ওরফে মোজাম্মেল হক মজু (২৪), সজল (২৪), মহিরুল ইসলাম (৪০), মাহবুব হোসেন (২০), নুর আলম ওরফে মংলা (১৯), মামুন ওরফে বোবা (১৮), সোহেল রানা (১৮) ও ইমরুল কায়েস ওরফে ইমু (২৬)। গতকাল বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়। ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশের আয়োজনে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন, পুলিশ পরিদর্শক নিরস্ত্র (ডিআইও-১) ডিএসবি মো. আব্দুল মতিন প্রধান, হরিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. তাজুল ইসলাম।