ভারত মিয়ানমার থাইল্যান্ড : কানেক্টিভিটি প্রকল্পে যুক্ত হতে আগ্রহী বাংলাদেশ

আগের সংবাদ

শুভ জন্মদিন পিতা

পরের সংবাদ

সীতাকুণ্ডে শতাধিক বছরের পুরনো দিঘি ভরাট : পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা

প্রকাশিত: মার্চ ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : দীর্ঘ ২৪ ঘণ্টা ধরে ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, বিজিবিসহ স্বেচ্ছাসেবক দলের মোট ২৩টি ইউনিট রাত-দিন কাজ করে সীতাকুণ্ড কুমিরা এলাকার ইউনিটেক্সের তুলার গুদামের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
এখানে যুদ্ধটি ছিল আগুনের সঙ্গে নয়- পানির সঙ্গে। আশপাশে ছিল না পুকুর বা জলাশয় আর এতে করে উদ্ধারকর্মীদের পানির জোগান দিতে হয়েছে দূর-দূরান্তর থেকে। আশপাশে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত ছিল না কোনো পুকুর। তাই পর্যাপ্ত ফায়ার সরঞ্জাম ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও শুধু পানির সংকটে দ্রুত সময়ে আগুন নেভানো সম্ভব হয়নি। সীতাকুণ্ডে এখন পুকুর পাওয়া দুষ্কর। পরিবেশসম্মত পুকুর নেই বললেই চলে। পরিকল্পিতভাবে ভরাট করে বিলুপ্ত করা হচ্ছে পুকুর- জলাশয়, ডোবা, খাল, ছড়াসহ ফসলি জমিগুলো।
সা¤প্রতিক সময়ে সীতাকুণ্ড উপজেলার পন্হিছিলা এলাকার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পশ্চিম পাশে শত শত বছরের পুরনো সাগর দিঘি নামে খ্যাত বিশাল পুকুরটি রাত-দিন ভরাটের কাজ চলছে প্রশাসনের নাকের ডগার ওপর দিয়ে। সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার পাশে টিনের বেড়া দিয়ে ভেতরে চলছে প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংসের বিশাল কর্মযজ্ঞ। পুকুরে প্রায় এক-চতুর্থাংশ ভরাট প্রায় সম্পূর্ণ। অনেকটা ওপেনসিক্রেটে চলছে এই পুকুর ভরাটের কাজ।
দিনরাত কর্মযজ্ঞ করে, রাতের আঁধারে সমুদ্র থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে শত শত ট্রাকে করে বালু ফেলে ভরাট করা হচ্ছে দিঘিটি। একদিকে ট্রাকে বালু ফেলছে অন্যদিকে এস্কেভেটর দিয়ে লেভেল করার কাজ চলছে।
স্থানীয়রা জানান প্রায় ৩ একর ২৫ শতক এই পুকুর প্রাকৃতিক ও বাণিজ্যিকভাবে মাছ উৎপাদনের উর্বর ক্ষেত্র ছিল। বর্তমানে কারখানা মালিকদের লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে এই পুকুরের ওপর। শুধু পুকুর নয় আশপাশের ফসলি জমিও নষ্ট করা হচ্ছে বালি ভরাট করে। পুকুর ভরাটের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে কারখানা মালিকদের পরিবেশ ধ্বংসের মহোৎসব। ভবিষৎতে এই এলাকায় তৈরি হবে অপরিকল্পিত শিল্পায়ন। ঝুঁকির মুখে পড়বে পরিবেশ। এলাকাবাসীরা চিন্তিত। পরিবেশের ক্ষতি করে শিল্পায়ন, বিএমডিপো, সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টের মতো ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ চাই না সাধারণ মানুষ।
এ বিষয়ে পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বদিউল আলম জসীমের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান, এটি দিঘি বা পুকুর নয়, নালজমি। ভরাট করছে এস আলম গ্রুপ। দেখাশোনা করছি আমি। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বদিউল আলম জসীম সময় নিয়ে দেখানো কথা বললেও পরে তিনি তা দেখাতে পারেননি। তবে তিনি নাল জমি বললেও সীতাকুণ্ড মৌজার, ১৭২০নং খতিয়ানে স্পষ্ট পুকুর লেখা রয়েছে। এ বিষয়ে সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা নূরুল আলম দুলাল বলেন, সীতাকুণ্ড একটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকা।
এখানকার বেশির ভাগ কারখানার ফায়ার সেপ্টি প্ল্যান নেই। তাই দুর্ঘটনা ঘটলে পানি সংকটে আমাদের হিমশিম খেতে হয়। নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হয়। যার প্রমাণ সা¤প্রতিক ইউনিটেক্সর তুলার গুদাম। তাই পুকুর, জলাশয় ভরাট করা আইনগত অপরাধ। ভরাটকৃত স্থান পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি। এ বিষয়ে সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন বলেছেন।
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তের চট্টগ্রাম জেলার সহকারী পরিচালক আশরাফ উদ্দীন বলেন, আমরা এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। খতিয়ান ও জায়গার ম্যাপ দেখে রিপোর্ট করব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়