ভারত মিয়ানমার থাইল্যান্ড : কানেক্টিভিটি প্রকল্পে যুক্ত হতে আগ্রহী বাংলাদেশ

আগের সংবাদ

শুভ জন্মদিন পিতা

পরের সংবাদ

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ করুন

প্রকাশিত: মার্চ ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

প্রতিদিন খবরের কাগজ ও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের খবরে জনগণ উদ্বিগ্ন হচ্ছে। মিয়ানমার হতে বিতাড়িত রোহিঙ্গা লাখ লাখ উদ্বাস্তু নাগরিক বাংলাদেশের কক্সবাজার, টেকনাফ অঞ্চলকে গ্রাস করে ফেলছে। বার্মার নাগরিক রোহিঙ্গা জনগণ উদ্বাস্তু হিসেবে বাংলাদেশে আশ্রয় পেয়ে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি পরিবেশসহ সবকিছুর জন্য বর্তমানে হুমকি হিসেবে তৈরি হচ্ছে। ১২ লাখের অধিক রোহিঙ্গা জনগণ দিন দিন তাদের সন্ত্রাসী শক্তি বৃদ্ধি করছে। তাদের মধ্যে দল উপদল তৈরি হচ্ছে। একে অপর পক্ষের বিরুদ্ধে মুখোমুখি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। খুন-খারাবি অপহরণ শিশু ও নারী পাচার মাদক পাচারের সঙ্গে সম্পৃক্ত হচ্ছে। উঠতি বয়সের যুবক-যুবতীরা মাদক ও নেশা জাতীয় কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হচ্ছে।
ক্রমেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো তাদের কারণে ভয়ংকর হচ্ছে। সন্ত্রাসী গ্রুপ নিত্যদিন সক্রিয় হচ্ছে। প্রতিটি ক্যাম্প থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তাদের কর্মকাণ্ডের কারণে বাংলাদেশে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বাড়ছে। সরকার প্রশাসনিকভাবে তাদের জন্য শক্তি ব্যয় করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সব সেক্টর সেখানে নিয়মিতভাবে সেবা দিচ্ছে। তাদেরকে শৃঙ্খলাপূর্ণভাবে জীবনযাপনে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন। তবুও উদ্বাস্তু লাখ লাখ রোহিঙ্গা ক্যাম্পকে অশান্তিময় করে তুলছে। বাংলাদেশের সরকার ক্যাম্পে স্কুল, বিদ্যালয়, মক্তব, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছে। ইবাদত বন্দেগির জন্য মসজিদ রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা পরিচর্চা কেন্দ্র রয়েছে। সব ধরনের নাগরিক জীবনযাপনের সুযোগ-সুবিধা তাদের দেয়া হচ্ছে। খাদ্য বাসস্থান, সামর্থ্যরে মধ্যে থেকে এ দেশের সরকার তাদের জন্য খরচ করছে। মানবিক কারণে আশ্রয় দেয়ার সুযোগ গ্রহণকারী এসব মানুষ বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। বাংলাদেশের মাটি, আলো-বাতাস তারা ব্যবহার করছে। তাদের কারণে ওই এলাকার কৃষিজমি, পাহাড়-পর্বত, নদী-নালা, পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে। জীববৈচিত্র্য সেখান থেকে বিলুপ্ত হচ্ছে। অসংখ্য পাহাড় ইতোমধ্যে ধ্বংস হয়েছে।
যুবক-যুবতীদের মধ্যে কতিপয় গ্রুপ সন্ত্রাসে জড়াচ্ছে। তাদের পেছনে দেশি-বিদেশি সন্ত্রাসী বাহিনী মদদ জোগাচ্ছে। অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ দিচ্ছে। তাদের মধ্যে প্রত্যাবর্তন বিরোধী গ্রুপ তৈরি হয়েছে। সে দেশের সামরিক সরকার রোহিঙ্গাদের মোটেও ফেরত নিতে রাজি নয়। রোহিাঙ্গারা যেন বাংলাদেশে শক্ত ঘাঁটি করে থেকে যেতে পারে, সেই ষড়যন্ত্রই করছে তৈরি হওয়া সন্ত্রাসী গ্রুপ। তাদের সার্বিক সহযোগিতা দিচ্ছে দেশি-বিদেশি মহল। ফলে বর্তমান সময়ে রোহিঙ্গারা শুধুই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহল ক্যাম্পে গিয়ে তাদের কৌশল অবস্থা পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রেখেছে। তাদের ইচ্ছাপূরণ, প্রত্যাবর্তনের কোনো সফল উদ্যোগ বাংলাদেশ দেখছে না। বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক সব কর্তৃপক্ষের কাছে সাহায্য চাইলেও কোনো ধরনের প্রকৃত সাহায্য এ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ তাদের সম্ভাব্য সব ধরনের মানবিক সাহায্য প্রদান করা অব্যাহত রেখেছে। তবুও তারা সন্ত্রাসের মাধ্যমে দেশের নিয়ম ও পরিবেশ ধ্বংস করছে। একে অপরকে হত্যা করছে। বাড়ি ঘর জ¦ালিয়ে দিচ্ছে। খুন-খারাবির সঙ্গে জড়াচ্ছে। তাদের নিজ ভূমি মিয়ানমারে ফেরত না যেতে ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিচ্ছে। আন্তর্জাতিক নানা দেশে বাংলাদেশবিরোধী প্রচার চালাচ্ছে। তাদের ইচ্ছা ও মনোভাব মোটেও ভালো বলে মনে হচ্ছে না। মানবতার কারণে আশ্রয় পাওয়া রোহিঙ্গা জনগণ দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে ক্রমাগত হুমকি হিসেবে তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার তাদের পূর্ণ নাগরিক মর্যাদা প্রদানের মাধ্যমে তাদের দেশ যেন তাদের নিজ মাতৃভূমিতে প্রত্যাবর্তন করে সেটিই সবার কাছে আশা রাখে। তাদের ভয়ংকর আচরণ কর্মকাণ্ড মোটেও এ দেশের জনগণ ভালোভাবে গ্রহণ করতে পারছে না। কখন তারা আমার প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে দাঁড়ায় সেখানেও সচেতন নাগরিক সমাজের উৎকণ্ঠা বাড়ছে। ষড়যন্ত্রকারী দেশি-বিদেশি শক্তির এজেন্ট তাদের পেছনে মদদ দেয়ার ইঙ্গিত পাচ্ছি। ফলে জনগণের উৎকণ্ঠা ও উদ্বেগ বাড়ছে। সরকারের কাছে আবেদন হলো- তাদের কঠোরভাবে নির্দিষ্ট ক্যাম্পে নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। সব ধরনের সন্ত্রাসী গ্রুপের কর্মকাণ্ড কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তাদের জনসংখ্যা প্রজনন পরিবার পরিকল্পনার নিয়ন্ত্রণের মধ্যে চালাতে হবে। পার্শ্ববর্তী দেশের আন্তরিক সহযোগিতায় প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া জোরদার চায় জনগণ।

মাহমুদুল হক আনসারী : সংগঠক ও গবেষক, চট্টগ্রাম।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়