ভারত মিয়ানমার থাইল্যান্ড : কানেক্টিভিটি প্রকল্পে যুক্ত হতে আগ্রহী বাংলাদেশ

আগের সংবাদ

শুভ জন্মদিন পিতা

পরের সংবাদ

মার্কিন ড্রোন ধ্বংসের জেরে টানটান উত্তেজনা

প্রকাশিত: মার্চ ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : ইউক্রেনে যুদ্ধের মধ্যেই কৃষ্ণ সাগরের আকাশে যুক্তরাষ্ট্রের নজরদারি চালকবিহীন বিমান বা ড্রোনের বিধ্বংসের ঘটনাকে গত এক বছরের মধ্যে ওয়াশিংটন ও মস্কোর মধ্যে সবচেয়ে স্পর্শকাতর ঘটনা বলে উল্লেখ করেছে রয়টার্সসহ বিশ্বের কয়েকটি গণমাধ্যম। যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনকে অর্থ অস্ত্র জনবল প্রশিক্ষণসহ রাশিয়ার আকাশসীমার আশপাশে গোয়েন্দা নজরদারি করে ইউক্রেনকে গোয়েন্দা ও অন্যান্য তথ্য সরবরাহ করে আসছে। যদিও তারা দাবি করে আসছে যে তারা এই যুদ্ধে জড়িত হয়নি।
নির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি : ড্রোন ধ্বংসের ঘটনাটি ঠিক কোথায় ঘটেছে সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র বা রাশিয়া নির্দিষ্টভাবে কিছু জানায়নি। যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে, ড্রোনটি কৃষ্ণ সাগরের উপরে আন্তর্জাতিক আকাশসীমায় উড়ছিল। রাশিয়া বলেছে, ড্রোনটি বিশেষ সামরিক অভিযান এর সংরক্ষিত আকাশসীমার ভেতরে ছিল। কয়েক মাস আগেই ওই আকাশসীমার বিষয়ে সবাইকে জানানো হয়েছিল। রাশিয়ার গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে ড্রোনটি ক্রিমিয়ার সেভাস্তোপোল বন্দর থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ছিল বলে জানানো হয়েছে। তবে তা নিশ্চিত হয়নি।
ড্রোনটি কেমন ছিল : মার্কিন সামরিক বাহিনী ভেঙে পড়া ড্রোন এমকিউ-৯ রিপারকে একটি সামরিক পর্যবেক্ষণ, নজরদারি ও গোয়েন্দা (আইএসআর) প্লাটফর্ম বলে বর্ণনা করেছে। নিশ্চিতভাবেই এটি আইএসআর কাজে ব্যবহারের উপযুক্ত হলেও প্রাথমিকভাবে এই রিপারটি একটি হান্টার-কিলার বিমান ছিল। মার্কিন সামরিক বাহিনী এটিকে ইন্টেলিজেন্স, সার্ভিলেন্স এবং রিকনাইসেন্স প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বর্ণনা করেছে। এটি অবশ্যই একটি শিকারি ও আক্রমণকারী বিমান হিসেবে উল্লেখ ছিল, যা ১,৭০০ কেজি (৩,৭৪৭ পাউন্ড) মূল্যের পেভওয়ে লেজার-গাইডেড বোমা বা হেলফায়ার মিসাইল বহন করতে সক্ষম। ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক জেনারেল ডাইনামিক্সের তৈরি দূরনিয়ন্ত্রিত বিমানটির ডানা ২০ মিটার এবং এটি একটি ৯৫০-হর্সপাওয়ার টার্বোপ্রপ ইঞ্জিন দ্বারা চালিত, যা ঘণ্টায় ২৮০-৩১০ কিলোমিটার গতিতে ক্রুজিং করতে সক্ষম।
রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো বাল্টিক সাগরে ও কৃষ্ণ সাগরে রাশিয়ার ওপর নজরদারি বাড়িয়ে দেয়। ওয়াশিংটন বারবার নিশ্চিত করেছে, তারা কিয়েভকে অস্ত্রশস্ত্র, সামরিক রসদ ও অর্থ দেয়ার পাশাপাশি রাশিয়ার সামরিক বাহিনীকে লক্ষ্যস্থল করতে প্রয়োজনীয় বুদ্ধি, পরামর্শ ও গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে আসছে। একইসঙ্গে তারা এও বলে আসছে এই যুদ্ধে তারা কোনো পক্ষ নয়। রাশিয়া অভিযোগ করে বলেছে,

সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত কমান্ড ইচ্ছাকৃতভাবে সেন্ট পিটার্সবার্গের দিকে পারমাণবিক সক্ষমতা সম্পন্ন বি-৫২ বোমারু বিমান পাঠায় কিন্তু ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার ঠিক আগে সেটি ঘুরে চলে যায়।
ভেঙে পড়ার পর কী হয়েছে : রাশিয়ার জঙ্গি বিমানের সঙ্গে সংঘর্ষের পর দূর থেকে ড্রোনটি পরিচালনা করা মার্কিন পাইলটরা এটিকে কৃষ্ণ সাগরে ফেলে দিতে বাধ্য হন। এরপর ড্রোনটির কী হয়েছে সে বিষয়ে ওয়াশিংটন মুখ বন্ধ করে রেখেছে। এটি কোথায় পড়েছে বা রাশিয়ার নৌবাহিনী এটিকে উদ্ধার করার চেষ্টা করেছে কিনা সে বিষয়ে পেন্টাগন কিছু বলেনি। শুধু বলেছে ড্রোনটির কোনো অংশই রাশিয়া উদ্ধার করেনি। কিন্তু তারা মার্কিন সাংবাদিকদের আর কোনো তথ্য দেয়নি। এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া অডিও রেকর্ডিংগুলো থেকে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে রাশিয়া এগুলো উদ্ধার করার জন্য অভিযান চালাচ্ছে। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি কারণ মস্কোও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপেন-সোর্স গবেষকদের তথ্য অনুযায়ী তল্লাশি ও উদ্ধার অভিযানের পর রাশিয়ার নৌবাহিনী ড্রোনটি বেশ কিছু অংশ উদ্ধার করেছে। এ ধরনের স্পর্শকাতর নজরদারির প্রযুক্তি রাশিয়ার হাতে পড়লে নিশ্চিতভাবেই ওয়াশিংটনের খুশি হওয়ার কথা না।
রাশিয়ার দাবি : রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মার্কিন সেনাবাহিনীর দাবি অস্বীকার করেছে এভাবে, একটি রাশিয়ান ইন্টারসেপ্টর কৃষ্ণ সাগরের উপর মার্কিন এমকিউ-৯ ড্রোনের সংস্পর্শে এসেছিল, যার ফলে এটি বিধ্বস্ত হয়েছে। বিশেষ সামরিক অভিযান পরিচালনার জন্য প্রতিষ্ঠিত সীমাবদ্ধ অঞ্চলের স্পষ্ট লঙ্ঘন করে ইউএভিটি সক্রিয় ট্রান্সপন্ডার ছাড়াই রাশিয়ান সীমান্তের দিকে উড়ছিল। তদন্তের জন্য দুটি ইন্টারসেপ্টর পাঠানো হয়েছে। মস্কোর সময় সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তী² কৌশলের ফলস্বরূপ, মনুষ্যবিহীন আকাশযানটি অনিয়ন্ত্রিত ফ্লাইটে চলে গিয়ে উচ্চতা হারায় এবং পানির পৃষ্ঠের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এক বিবৃতিতে আরো বলা হয়, রুশ সেনারা অস্ত্র ব্যবহার করেনি।
যৌথ নৌমহড়া : বেইজিংয়ের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বুধবার ঘোষণা করেছে, রাশিয়া, চীন এবং ইরান তাদের নৌ নিরাপত্তা জোরদার করতে গতকাল থেকে ৫ দিনের সামুদ্রিক মহড়া করছে। ওমান উপসাগরে ত্রিদেশীয় ‘নিরাপত্তা বন্ড-২০২৩’ অনুযায়ী ১৫ থেকে ১৯ মার্চ পর্যন্ত এ মহড়া চলবে এবং বেশ কয়েকটি দেশও এতে যোগ দেবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়