ভারত মিয়ানমার থাইল্যান্ড : কানেক্টিভিটি প্রকল্পে যুক্ত হতে আগ্রহী বাংলাদেশ

আগের সংবাদ

শুভ জন্মদিন পিতা

পরের সংবাদ

বাড়তি গৃহকর বাতিলের দাবি : চট্টগ্রামে নগর ভবন ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা

প্রকাশিত: মার্চ ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : বাড়তি গৃহকর আদায় বাতিলের দাবিতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছে ‘করদাতা সুরক্ষা পরিষদ’। তবে নগর ভবন অভিমুখে মিছিল নিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। গতকাল বুধবার দুপুরে আন্দোলনকারীরা নগর ভবনের অন্তত এক কিলোমিটার দূরে সড়কে অবস্থান নেয়। পরে পরিষদের একটি প্রতিনিধিদল নগর ভবনে গিয়ে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি দেন। তবে এ সময় মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী নিজ কার্যালয়ে থাকলেও আন্দোলনকারীদের দেখা দেননি।
এদিকে দুপুর ১২টার দিকে এ কর্মসূচি চলাকালে মেয়রপন্থি আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কিছু নেতাকর্মী আন্দোলনকারীদের ওপর দফায় দফায় চড়াও হন। পুলিশের কঠোর ভূমিকার কারণে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ পাহারা দিয়ে পরিষদের নেতাদের নগর ভবনে নিয়ে যান এবং স্মারকলিপি দেয়ার পর তাদের আবারো সড়কে পৌঁছে দেন।
এদিন সকাল থেকে নগরীর বাটালি হিলসংলগ্ন এলাকায় চসিক মেয়রের অস্থায়ী কার্যালয় নগর ভবনের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তবে করদাতা সুরক্ষা পরিষদের কর্মসূচির কারণে ফটক বন্ধ করা হয়নি বলে জানায় চসিক কর্তৃপক্ষ। সকাল ৯টায় তালা লাগিয়ে দেয়ায় করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকে কর্মস্থলে প্রবেশ করতে না পেরে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকেন। সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষও দুর্ভোগে পড়েন।
জানা যায়, সকাল সোয়া ৯টায় নগর ভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয় সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। কর্মচারীরা টাইগারপাস সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। খবর পেয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা সেখানে উপস্থিত হলে সাড়ে ১০টার দিকে ফটক খুলে দেয়া হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ বলেন, ‘সকাল ৯টায় অফিসে প্রবেশের সময়সীমা মানতে বাধ্য করতেই ফটক বন্ধ করা হয়েছে। ফটকে তালা দেয়ার সঙ্গে নগর ভবন ঘেরাও কর্মসূচির কোনো সম্পর্ক নেই। চসিক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যাতে সঠিক সময়ে অফিসে আসেন, তাই কর্তৃপক্ষের কঠোর অবস্থান বোঝাতে তালা দেয়া হয়েছে। এখন থেকে এ নিয়ম কার্যকর থাকবে।’
এদিকে ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, করদাতা সুরক্ষা পরিষদের নেতাকর্মী নগরীর ৪১ ওয়ার্ড থেকে মিছিল নিয়ে সকালে কদমতলী এলাকায় জড়ো হন। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের পর তারা মিছিল নিয়ে দেওয়ানহাট হয়ে নগর ভবনের দিকে এগোতে থাকেন। মিছিল টাইগারপাস এলাকায় পৌঁছার পর একদল লোক ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিয়ে তাদের ওপর চড়াও হন। সেখানে আগে থেকেই পুলিশ মোতায়েন ছিল। একপর্যায়ে পুলিশ উভয়পক্ষের মাঝখানে দাঁড়িয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এ সময় পুলিশ আন্দোলনকারীদের আর মিছিল নিয়ে এগোতে না দেয়ার সিদ্ধান্ত জানালে তারা সেখানেই অবস্থান নেন। তারা পুলিশ এবং সিটি করপোরেশনের মেয়র ও গৃহকরের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। অন্যদিকে মেয়রের পক্ষে আসা লোকজন পরিষদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। তারা আন্দোলনকারীদের বিএনপি-জামায়াত ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির দোসর বলে অভিযুক্ত করেন। পরে

পুলিশি নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্য দিয়ে পরিষদের নেতা নুরুল আবছার ও জান্নাতুল ফেরদৌস পপির নেতৃত্বে ৫ জনের একটি প্রতিনিধিদল নগর ভবনে রওনা দেন। টাইগারপাস থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত মূল সড়ক থেকে নগর ভবনের দিকে যাওয়ার সড়কে প্রবেশের পথে আবার মেয়রপন্থি প্রায় অর্ধশত লোক তাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে তাদের নগর ভবনে ঢুকতে না দেয়ার হুমকি দেন। তবে পুলিশ তাদের নিরাপত্তা দিয়ে নগর ভবনে নিয়ে যান। তারা মেয়রের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে স্মারকলিপি দিতে চাইলেও অনুমতি দেয়া হয়নি। পরে তারা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলামের কক্ষে যান। সেখানে প্রায় আধঘণ্টা অবস্থানের পর পরিষদের নেতারা বের হয়ে আসেন। ফেরার পথে তারা নগর ভবনের মূল ফটকের ভেতরে আবারো মেয়রপন্থিদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। পরিষদের নেতাদের দিকে কয়েকজন তেড়ে আসেন। উত্তেজনার মধ্যে পুলিশ আবারো বেষ্টনী তৈরি করে তাদের টাইগারপাসে জমায়েত পর্যন্ত পৌঁছে দেন।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (দক্ষিণ) নোবেল চাকমা বলেন, করদাতা পরিষদ মিছিল নিয়ে দেওয়ানহাট হয়ে টাইগারপাসের দিকে আসেন। সেখানে আবার আরেকটা গ্রুপ ছিল। আমরা উভয় গ্রুপের মাঝখানে দাঁড়িয়ে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখি। আমরা তাদের অনুরোধ করেছিলাম মিছিল নিয়ে যেন আর সামনে না যায়। তারা অনুরোধ শুনেছেন। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা হয়নি।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়