শাহজালাল বিমানবন্দর : মশা নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে তিনজনের মতামত চান হাইকোর্ট

আগের সংবাদ

ফের ‘ভেরিফিকেশন’ নাটক! : মিয়ানমার থেকে আসা ১৭ সদস্যের প্রতিনিধিদল টেকনাফে

পরের সংবাদ

সীতাকুণ্ডে অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ : অনিয়ম-গাফিলতি পেয়েছে তদন্ত কমিটি, ৯ সুপারিশ

প্রকাশিত: মার্চ ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন তদন্ত কমিটির প্রধান। প্রতিবেদনে কী আছে বা কমিটি বিস্ফোরণের কী কারণ উদঘাটন করেছে, তা জানা না গেলেও ওই অক্সিজেন প্ল্যান্টের কিছু গাফিলতি ও অনিয়ম ছিল বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা। এছাড়াও দুর্ঘটনা এড়াতে ৯ সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিল করেছে তদন্ত কমিটি।
তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাকিব হাসান বলেন, ‘সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টের ঘটনা ছিল অস্বাভাবিক ও বিরল। এজন্য আমরা অভিজ্ঞ অনেকের মতামত নিয়েছি। তদন্তে সঠিক তথ্য ও কারণগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। মূলকথা হলো- এতবড় একটি ঘটনায় কর্তৃপক্ষের কিছু গাফিলতি ছিল, কিছু অনিয়মও হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা তদন্ত প্রতিবেদনে ৯টি সুপারিশ দিয়েছি। যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়। তবে প্রতিবেদনে উঠে আসা সব বিষয় আমরা এখন জানাতে পারছি না। সরকারের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে গণমাধ্যমে জানাব।’ প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, তদন্ত কমিটি সিলগালা প্যাকেটে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনটি মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে পাঠিয়ে দেয়া হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রতিবেদন দেখবেন এবং তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী দু-একদিন পর তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে গণমাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, সীতাকুণ্ডে অপরিকল্পিতভাবে শিল্প-কারখানা গড়ে উঠছে। এখানে স্থাপিত শিল্প কারখানাগুলোতে কোনো পানির রিজার্ভার নেই। সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের দুদিনের মাথায় ইউনিটেক্স গ্রুপের ভাড়া করা তুলার গুদামেও আগুন লাগে। আগুন নেভাতে সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীও কাজ করেছে। পানির জন্য আগুন নেভাতে হিমশিম খেতে হয়। তিনি বলেন, চট্টগ্রামে যেসব অক্সিজেন প্ল্যান্ট আছে, তাদের মালিক-কর্মকর্তাদের নিয়ে ওয়ার্কশপের আয়োজন করেছি। আগামী ২০ মার্চ সার্কিট হাউসে এ ওয়ার্কশপ হবে। কীভাবে একটি অক্সিজেন প্ল্যান্ট চালাতে হয়, আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র কী কী লাগে, কোন কোন নিয়ম মানতে হয়, সে বিষয়গুলো ওয়ার্কশপে তুলে ধরা হবে।
সীতাকুণ্ডের সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে শিল্পে ব্যবহারের জন্য অক্সিজেন উৎপাদন হতো। গত ৪ মার্চ বিকালে ওই কারখানায় বিস্ফোরণে ৭ জনের মৃত্যু হয়, আহত হন আরো ২৫ জন। ভয়াবহ এ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে কয়েক কিলোমিটার এলাকা। ওই ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে ওই তদন্ত কমিটিতে ফায়ার সার্ভিস, বিস্ফোরক পরিদদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর, শিল্প ও জেলা পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা ছিলেন। তদন্ত কমিটির প্রধান ওই সময় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেছিলেন, প্ল্যান্টের ‘এয়ার সেপারেশন কলাম’ থেকে এই বিস্ফোরণ হতে পারে। বিস্ফোরণের পর জানা যায়, সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টটি পরিচালিত হচ্ছিল দুজন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার এবং মানবিক থেকে পাস করা একজন সুপারভাইজার দিয়ে। কারখানাটির পরিবেশসহ বিভিন্ন সংস্থার ছাড়পত্র ছিল না। এমনকি ফায়ার সেফটি প্ল্যান ও বয়লার ব্যবহারের সনদও ছিল না। বিস্ফোরণের পর থেকে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়