শাহজালাল বিমানবন্দর : মশা নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে তিনজনের মতামত চান হাইকোর্ট

আগের সংবাদ

ফের ‘ভেরিফিকেশন’ নাটক! : মিয়ানমার থেকে আসা ১৭ সদস্যের প্রতিনিধিদল টেকনাফে

পরের সংবাদ

সালমান এফ রহমান : তৈরি পোশাকের ন্যায্যমূল্য দিচ্ছে না বিদেশি ক্রেতারা

প্রকাশিত: মার্চ ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : তৈরি পোশাকের বৈশ্বিক ক্রেতাদের চাপে অর্থ খরচ করে অনেক উদ্যোগ নিতে বাধ্য হলেও বাংলাদেশের উৎপাদকরা সেই তুলনায় পণ্যের দাম পাচ্ছেন না বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তিনি বলেন, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের উপস্থিতির সুযোগ এলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশের ওপর ভয়াবহ চাপ দেয়া হয়েছে- ‘তোমার কাঠামোগত উন্নত কর, অগ্নি নিরাপত্তা উন্নত কর, শিশু শ্রমিক মুক্ত হও, এটা করো, সেটা করো’ ইত্যাদি। আমরা সবকিছু করছি। এসব করতে অনেক টাকা লাগে, অনেক বিনিয়োগ লাগে। কিন্তু ক্রেতারা এসে যখন দরদাম করে, তখন আমরা মূল্যটা পাই না। ক্রেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের মান বজায় রাখতে যে সমস্ত কাজ আমাদের করতে হয়, যে পরিমাণ বিনিয়োগে আমরা বাধ্য হই, সেই বিবেচনায় আমরা প্রত্যাশা করি আপনাদের উচিত আমাদের পুরস্কৃত করা এবং অন্তত গ্রহণযোগ্য দামটা আমাদের দেয়া।
গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় তৈরি পোশাকের আবর্জনা ‘রিসাইক্লিং’ নিয়ে বাংলাদেশে নর্ডিক চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এনসিসি) আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান এসব কথা বলেন। ঢাকায় তিন নর্ডিক দেশ সুইডেন, নরওয়ে ও ডেনমার্ক দূতাবাসের পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছিল অনুষ্ঠানের সহআয়োজক। সুইডিশ কোম্পানি এইচ এন্ড এমসহ বিভিন্ন পোশাক ব্র্যান্ডের প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তৈরি পোশাকের বৈশ্বিক খুচরা বিক্রেতা এইচ এন্ড এম গ্রুপ, ইকিয়া, লিন্ডেক্স এবং সুইডেন ট্রেড এন্ড ইনভেস্ট কাউন্সিলের সমন্বয়ে গঠিত ‘সাসটেইনেবল ফ্যাশন প্ল্যাটফর্ম’-এর পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত নর্ডিক দেশের রাষ্ট্রদূতদের উদ্দেশ করে তৈরি পোশাক খাতের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের একজন সালমান এফ রহমান বলেন, খুবই কম লাভের হার নিয়ে কাজ করছে পোশাক শিল্প এবং সেটা সঙ্কুচিত হয়েছে মহামারির আগে-পরে। নর্ডিক দেশের রাষ্ট্রদূতদের উপস্থিতিতে আমি এই সুযোগটা নিতে চাই যে, এটা আপনারা আপনাদের যেসব কোম্পানি ব্যবসা করতে আসে, তাদের বলতে পারেন, বিশেষ করে ন্যায্যমূল্যের বিষয়টি। এই মুহূর্তে দামের হার উৎপাদকদের জন্য খুব একটা ন্যায্য নয়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, তৈরি পোশাকে মোট ব্যবহৃত কাপড়ের ৩৫-৪০ শতাংশ উৎপাদন পর্যায়ে আবর্জনা হয়ে যায়। বাকি অংশও ব্যবহারের পরে আবর্জনায় পরিণত হয়। সে কারণে এটাকে সমন্বিত প্রক্রিয়ার মধ্যে রিসাইক্লিংয়ে নিয়ে আসতে হবে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ হিসাবে বর্ণনা করে সালমান এফ রহমান বলেন, ইউরোপ যুদ্ধ করছে আর নিষেধাজ্ঞাসহ অন্যান্য কারণে পৃথিবীর অন্য সব দেশও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
যুদ্ধের পর ইউরোপের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে ফিরে যাওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানির কথা বলছি এবং প্রতিশ্রæতির কথা বলছি। কিন্তু যুদ্ধের কারণে জ্বালানি সংকটের ফলে ইউরোপ সুবিধা বুঝে নবায়নযোগ্য জ্বালানির কথা ভুলে গেছে এবং ফিরেছে কয়লা বিদ্যুতে ও অন্য অনেক ক্ষেত্রে। বাংলাদেশের মতো দূরের দেশ বিস্মিত যে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্রে তোমাদের প্রতিশ্রæতি কী রকম। আমরা কি তেমন মানের কথা বলছি, যা এক অংশের জন্য প্রযোজ্য আর অন্য অংশের জন্য প্রযোজ্য নয়?
ঢাকায় সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ড্রা বার্গ ফন লিন্ডে অনুষ্ঠানে বলেন, তৈরি পোশাকের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উৎস হওয়ার কারণে বাংলাদেশকেও রিসাইক্লিংয়ের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। এটা কেবল পরিবেশ ও জলবায়ুর স্বার্থে নয়, অর্থনৈতিক সুযোগও। এর মাধ্যমে হতে পারে নতুন খাতে সূচনা। বর্জ্যকে পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করতে বড় পরিসরে অর্থায়নের প্রয়োজন মন্তব্য করে রাষ্ট্রদূত বলেন, আশা করি, এর মাধ্যমে আমাদের মধ্যে সহযোগিতার নতুন পথ খোঁজার সুযোগ তৈরি হবে।
অন্যদের মধ্যে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া, ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি এস্ট্রাপ পিটারসেন, নরওয়ে দূতাবাসের শার্জ দি অ্যাফেয়ার্স সিলইয়ে ফিনেস ওয়ানেবু, বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বহুপক্ষীয় অর্থনৈতিক অনুবিভাগের মহাপরিচালক ফাইয়াজ মুরশিদ কাজী, এনসিসিআই সভাপতি তাহরিন খান ও নির্বাহী পরিচালক মাশরুর রহমান বক্তব্য রাখেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়