শাহজালাল বিমানবন্দর : মশা নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে তিনজনের মতামত চান হাইকোর্ট

আগের সংবাদ

ফের ‘ভেরিফিকেশন’ নাটক! : মিয়ানমার থেকে আসা ১৭ সদস্যের প্রতিনিধিদল টেকনাফে

পরের সংবাদ

সময়মতো জ¦লে উঠে ম্যাচসেরা লিটন

প্রকাশিত: মার্চ ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : স্বপ্নের মতো একটা বছর কাটিয়ে নতুন বছরে বাংলাদেশ দলের সর্বোচ্চ আস্থা তৈরি করে নিয়েছিলেন লিটন কুমার দাস। চলতি বছরের প্রথম দিকে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও নিজের ছন্দটা মোটামুটি ধরে রাখতে পেরেছিলেন তিনি। তবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বছরের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ থেকে দেখা যায় লিটনের ছন্দহীনতা। ওয়ানডে সিরিজের প্রতিটি ম্যাচেই ব্যর্থতার তিক্ত স্বাদ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে শুরুটা ভালো করলেও জ¦লে ওঠার আগেই নিভে গিয়েছেন তিনি। অবশেষে গতকাল ইংলিশদের বাংলাওয়াশের (হোয়াইটওয়াশ) ম্যাচে স্বচ্ছন্দে ব্যাট চালিয়ে ইংলিশ বোলারদের লজ্জায় ডুবিয়ে ৫৭ বলে ৭৩ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলে বাংলাদেশকে লড়াকু পুঁজি এনে দেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিপক্ষীয় সিরিজের প্রতি ম্যাচেই ব্যাট হাতে দলকে ভালো কিছু দেয়ার চেষ্টা করেন। তবে প্রথম ম্যাচ থেকেই ব্যর্থ হতে হয় এই টপঅর্ডার ব্যাটারকে। ইংলিশ বধের মিশনে তামিম ইকবারের সঙ্গে ওপেন করতে নেমে তিনি ১৫ বলে একটি ছয়সহ ৭ রান করে সাজঘরে ফিরে যান। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচে তিনি রানের খাতাই খুলতে পারেননি। টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকে তিনি নিজের ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত দেন। যদিও ভালো কোনো সংগ্রহ তার ব্যাট থেকে আসেনি প্রথম ম্যাচে। তবে তার আগ্রাসী শুরুটাই ছিল বাংলাদেশের জয়ের মন্ত্র। দ্বিতীয় ম্যাচেও লিটনের একই রূপ দেখে ভক্তরা। নিজেকে হারিয়ে খুঁজে ফেরা লিটনের কাছ থেকে সিরিজের তৃতীয় ও মিশন হোয়াইটওয়াশের ম্যাচে ভালো কিছু আশা করেনি কেউই। তবে ইংলিশ বোলারদের কোণঠাসা করে ঠিকই স্বরূপে ফিরে আসেন লিটন। টস হেরে বাংলাদেশের হয়ে রনি তালুকদারের সঙ্গে জুটি বেঁধে পিচে আসেন তিনি। শুরু থেকেই প্রথম দুই ম্যাচের মতো আগ্রাসী ব্যাটিং দিয়েই ম্যাচ শুরু করেন এই ব্যাটার। একপাশে ব্যাট চালিয়ে রানে গতি দিচ্ছিলেন লিটন, অন্যপাশে রনি তালুকদারও তালে তাল মিলিয়ে ইংলিশদের হোয়াইটওয়াশের পথে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন। রনি বিদায় নিলেও রানের গতি কমতে দেননি লিটন। অপর প্রান্তে নাজমুল হোসেন শান্তকে রেখে বোলারদের চারে ভাসিয়ে এগিয়ে যান লড়াকু সংগ্রহের দিকে। নির্ভয় ব্যাটিংয়ের মধ্য দিয়ে তিনি ক্যারিয়ারের নবম ফিফটি তুলে নেন ৪১ বলে। ফিফটি পূরণ করার পর দেখা যায় তার আরেক রূপ। ততক্ষণে নিজের অবস্থান শক্ত করে নিয়ে আরো নিশ্চিন্তে ব্যাট চালাতে শুরু করেন টাইগার টিমের এই উইকেটকিপার। শেষ পর্যন্ত দর্শকদের সেঞ্চুরি উপহার দেয়ার আশা জাগিয়ে ৫৭ বলে ৭৩ রান করে বাউন্ডারি হাঁকানোর চেষ্টায় ফিল সল্টের হাতে ধরা পড়েন তিনি। এই ৭৩ রানের ইনিংসই তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ রান। এই ইনিংস গড়তে লিটন ১০টি চার ও একটি ছক্কা হাঁকান। আউট হওয়ার পর তার স্ট্রাইক রেট ছিল ১২৮ এরও বেশি। লিটন বিদায় নিলেও মাঠ ছাড়ার আগে বাংলাদেশকে ম্যাচ জয়ের পথে অনেকটাই এগিয়ে দিয়ে যান। ব্যাট হাতে দলের সর্বোচ্চ রান করা লিটনের বিচক্ষণতার ফলাফল পাওয়া যায় বাংলাদেশ ফিল্ডিং করতে নামার পরও। প্রথম ওভারেই তার দূরদর্শিতায় বেক থ্রু পেয়ে যায় টাইগাররা। তানভির হাসানের বলে প্রথমবারের মতো ব্যাট লাগাতে গিয়ে কট বিহাইন্ডের শঙ্কায় পড়েন ফিল সল্ট। তখন ব্যাটে-বলে হয়েছে এমনটা ছিল প্রায় নিশ্চিত। তবে সেই ক্যাচ ধরেও দাঁড়িয়ে না থেকে সুযোগ বুঝে লিটন স্ট্যাম্পিং করে দেন। টিভি আম্পায়ারের রিভিউ শেষে দেখা যায়, সল্টের ব্যাটে বল না লাগলেও লিটন কুমার দাসের স্ট্যাম্পিংয়ের কারণে সাজঘরের পথ ধরতে হয়েছে ইংলিশ ব্যাটারকে।
এর আগে লিটন নিজের রূপ দেখাতে সক্ষম হয়েছিলেন ২০২২ সালের ২ নভেম্বর ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলতে নেমে। সেই ম্যাচে তিনি ৬০ রান করে সাজঘরে ফেরেন। এরপর আরো তিনটি বিশ ওভারের ম্যাচে তিনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিত্ব করতে নামলেও জ¦লে ওঠার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। অবশেষে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর নিজের চতুর্থ ম্যাচে সফলতা পেলেন তিনি। টি-টোয়েন্টি সংস্করণের ক্রিকেটে এ পর্যন্ত লিটনের নয়টি ফিফটির সবগুলোই দলকে জেতাতে সাহায্য করেছে। তার ব্যাট থেকে যেদিনই ভালো রান এসেছে সেদিনই বদলে গেছে টাইগারদের মোমেন্টাম। একজন ব্যাটার হিসেবে সবচেয়ে ভালো দিক, তিনি প্রতিটি অর্ধশতকেই একশর বেশি স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করেছেন। বিপিএলের নবম আসর চলাকালে তার ব্যাটিংয়ের ধরন সম্পর্কে গণমাধ্যমকে জানান, ‘আমি অ্যাটাকিং খেলতে পছন্দ করি। কখনোই এমন হয় না যে আমি ৪০ বলে ৪০ করি, আমি যদি ৪০ বল খেলি, তাহলে ৬০ হয়ে যায়। আমি যেভাবে এতদিন সফল হয়েছি, সে ধারাবাহিকতাই বজায় রাখতে চাই।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়