শাহজালাল বিমানবন্দর : মশা নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে তিনজনের মতামত চান হাইকোর্ট

আগের সংবাদ

ফের ‘ভেরিফিকেশন’ নাটক! : মিয়ানমার থেকে আসা ১৭ সদস্যের প্রতিনিধিদল টেকনাফে

পরের সংবাদ

রপ্তানির আড়ালে ৪ প্রতিষ্ঠানের ৩৮২ কোটি টাকা পাচার

প্রকাশিত: মার্চ ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রপ্তানির আড়ালে ৪টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৩৮২ কোটি টাকা পাচারের প্রমাণ পেয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। জাল নথি তৈরি করে এই টাকা পাচার করা হয় বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। সাবিহা সাকি ফ্যাশন, এশিয়া ট্রেডিং করপোরেশন, ইমু ট্রেডিং করপোরেশন ও ইলহাম করপোরেশন- এই ৪ প্রতিষ্ঠান টাকা পাচারের উদ্দেশে টি-শার্ট, টপস, লেডিস ড্রেস, ট্রাউজার, বেবি সেট, ব্যাগ, পোলো শার্ট, জ্যাকেট, প্যান্ট, হুডি জাতীয় পণ্য ৭টি দেশে রপ্তানি করেছে। রাজধানীর কাকরাইলে সংস্থাটির কার্যালয়ে মহাপরিচালক (ডিজি) মোহাম্মদ ফখরুল আলম গতকাল মঙ্গলবার এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, আমরা প্রথমে সাবিহা সাকি ফ্যাশন নামের প্রতিষ্ঠানের জালিয়াতির বিষয়টি উদ্ঘাটন করি। সেই ধারাবাহিকতায় আরো ৩ প্রতিষ্ঠানের অর্থ পাচারের তথ্য পাই। তাদের কোনো এলসি ছিল না, রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ইএক্সপি ব্যবহার করেছে। ৪টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের বিগত সময়ের ১,৭৮০টি চালানের বিপরীতে ১৮ হাজার ২৬৫ মেট্রিক টন পণ্য রপ্তানি দেখানো হয়, যার ঘোষিত মূল্য ৩ কোটি ৭৮ লাখ ১৭ হাজার ১০ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় তা ৩৮২ কোটি টাকা। আমাদের ধারণা এই অর্থের পরিমাণ আরো বেশি হতে পারে। শুল্ক গোয়েন্দার ডিজি বলেন, যখন কোনো জালিয়াত চক্র অর্থ পাচারের উদ্দেশ্য রপ্তানি করে, তখন তাদের উদ্দেশ্যই থাকে রপ্তানির অর্থ কোনোভাবেই দেশে আসবে না। সেক্ষেত্রে তারা পণ্যের মূল্য কোনো না কোনোভাবে কম দেখানোর চেষ্টা করে। বৈদেশিক মুদ্রা বৈধ পন্থায় দেশে প্রত্যাবাসিত হওয়ার কোনো সুযোগ না থাকায় মানিলন্ডারিং সংঘটিত হয়েছে।
শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ জানায়, সাবিহা সাকি ফ্যাশন রপ্তানি দলিল জালিয়াতির মাধ্যমে বিদেশে পণ্য রপ্তানি করলেও পণ্যের রপ্তানি মূল্য বা বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আসেনি। গত ৩১ জানুয়ারি শুল্ক গোয়েন্দার একটি টিম চট্টগ্রামের উত্তর পতেঙ্গায় অভিযান পরিচালনা করে। প্রতিষ্ঠানটির টি-শার্ট ও লেডিস ড্রেস রপ্তানির কথা থাকলেও বেবি ড্রেস, জিন্স প্যান্ট, লেগিন্স, শার্ট ও শালসহ ঘোষণা বহির্ভূত পণ্য রপ্তানির প্রমাণ পাওয়া যায়। এসব পণ্য সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, সৌদি আরব ও নাইজেরিয়ায় রপ্তানি করা হয়েছে। তদন্তে দেখা যায়, সাবিহা সাকি ফ্যাশন মোট ৮৬টি চালানের বিপরীতে ৯৯৭ মেট্রিক টন মেন্স ট্রাউজার, টি-শার্ট, বেবি সেট, ব্যাগ, পোলো শার্ট, জ্যাকেট, প্যান্ট ও হুডি রপ্তানি করে। এর বিনিময় মূল্য ১৮ লাখ ৪৫ হাজার ৭২৭ মার্কিন ডলার বা ২১ কোটি টাকা। ওই টাকা দেশে আসার সুযোগ নেই।
অন্যদিকে এশিয়া ট্রেডিং করপোরেশন বিগত সময়ে ১,৩৮২টি চালানের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানি করে। প্রতিষ্ঠানটি ১৪ হাজার ৮৫ মেট্রিক টন টি-শার্ট, টপস ও লেডিস ড্রেস রপ্তানি করে যার বিনিময় মূল্য ২ কোটি ৫৮ লাখ ২৬ হাজার ৮৬৬ মার্কিন ডলার বা ২৮২ কোটি টাকা।
ইমু ট্রেডিং করপোরেশন জালিয়াতির মাধ্যমে ২৭৩টি পণ্যচালান রপ্তানি করে। প্রতিষ্ঠানটি ২ হাজার ৫২৩ মেট্রিক টন টি-শার্ট, ট্রাউজার ও টপস রপ্তানি করে যার বিনিময় মূল্য ৬৫ লাখ ৪ হাজার ৯৩২ মার্কিন ডলার বা ৬২ কোটি টাকা।
ইলহাম করপোরেশন রপ্তানি দলিল জালিয়াতির মাধ্যমে ৩৯টি চালান রপ্তানি করে। ইলহাম ৬৬০ মেট্রিক টন টি-শার্ট, ট্যাংক টপ, লেডিস ড্রেস প্রভৃতি রপ্তানি করে যার বিনিময় মূল্য ১৬ লাখ ৩৯ হাজার ৪৮৫ মার্কিন ডলার বা ১৭ কোটি টাকা।
এই ৪টি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও আরো কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এধরনের কার্যক্রমের অভিযোগের তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানান মোহাম্মদ ফখরুল আলম।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়