শাহজালাল বিমানবন্দর : মশা নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে তিনজনের মতামত চান হাইকোর্ট

আগের সংবাদ

ফের ‘ভেরিফিকেশন’ নাটক! : মিয়ানমার থেকে আসা ১৭ সদস্যের প্রতিনিধিদল টেকনাফে

পরের সংবাদ

ভূমধ্যসাগর : নৌকাডুবির ঘটনায় ১৭ বাংলাদেশি উদ্ধার

প্রকাশিত: মার্চ ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনায় ১৭ বাংলাদেশিকে উদ্ধার করা হয়েছে। লিবিয়া থেকে অবৈধ পথে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে তারা ইতালি যাচ্ছিলেন। উদ্ধারের পর তাদের উপকূলে নেয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমধ্যসাগরে সর্বশেষ মারাত্মক নৌকাডুবির পরে উদ্ধার হওয়া ১৭ অভিবাসীকে গত সোমবার ইতালীয় কর্তৃপক্ষ উপকূলে নিয়ে এসেছে।
ইতালীয় সংবাদমাধ্যম এএনএসএ জানিয়েছে, উদ্ধার করা অভিবাসীদের ইতালির সিসিলি দ্বীপের পোজালো শহরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং তারা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক।
ইতালির কোস্ট গার্ড জানিয়েছে, খারাপ আবহাওয়ার মধ্যে লিবিয়া থেকে বিপজ্জনক সমুদ্রযাত্রায় নামা অভিবাসীদের একটি নৌকা গত রবিবার ভূমধ্যসাগরে ডুবে যায়। নৌকাডুবির ওই ঘটনায় ভূমধ্যসাগরে ৩০ অভিবাসী ডুবে গেছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এর আগে অবৈধ পথে ইতালি যাওয়ার সময় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ইতালির দক্ষিণাঞ্চলীয় ক্যালাব্রিয়ার কাছে জাহাজডুবির ঘটনায় অন্তত ৭৯ জন অভিবাসীর প্রাণহানি হয়। সেই ঘটনার দুই সপ্তাহের বেশি কিছু সময় পর আবারো অভিবাসীবাহী নৌ দুর্ঘটনার খবর সামনে এলো।
রয়টার্স বলছে, অ্যালার্ম ফোন নামের একটি দাতব্য সংস্থা অভিবাসীদের দুর্দশার জন্য ইতালিকে দায়ী করেছে। সংস্থাটি বলছে, অভিবাসীবাহী ওই নৌকাটি সমস্যায় পড়েছে বলে গত শনিবার বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও ইতালি সেখানে তার কোস্ট গার্ডকে পাঠায়নি।
নৌকাটিতে ৪৭ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিল জানিয়ে রবিবার গভীর রাতে দেয়া এক বিবৃতিতে অ্যালার্ম ফোন অভিযোগ করে, ‘স্পষ্টতই ইতালীয় কর্তৃপক্ষ এই ঘটনা এড়াতে চেষ্টা করছিল। কারণ তারা উদ্ধারে গেলে বিপদাপন্ন এই অভিবাসীদের ইতালিতে আনতে হবে। আর এ কারণেই হস্তক্ষেপে বিলম্ব করে ইতালি চাচ্ছিল যেন তথাকথিত লিবিয়ান কোস্ট গার্ড সেখানে আসে এবং জোরপূর্বক লোকদের আবারো লিবিয়ায় ফিরিয়ে নিয়ে যায়।’
অবশ্য ইতালির উপকূলরক্ষীরা বলেছে, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বহনকারী নৌকাটি ডুবে যাওয়ার এই ঘটনাটি ইতালীয় অনুসন্ধান ও উদ্ধার এলাকার (এসএআর) বাইরে ঘটেছে। এমনকি ইতলীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি বলেছেন, নৌকাডুবি এড়াতে রোম যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে।
রয়টার্স বলছে, অভিবাসীদের বহনকারী ওই নৌকাটি ইতালির দিকে যাওয়ার সময় লিবিয়ার বেনগাজি বন্দর থেকে প্রায় ১১০ মাইল উত্তর-পশ্চিমে ডুবে যায় বলে মেডিটেরানিয়া সেভিং হিউম্যানস নামের একটি দাতব্য সংস্থা জানিয়েছে।
অন্যদিকে জার্মান দাতব্য সংস্থা সি-ওয়াচ এই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি মুঠোফোন কথোপকথন প্রকাশ করেছে। ওই কথোপকথনের ট্রান্সক্রিপ্ট অনুসারে, লিবিয়ান জয়েন্ট রেসকিউ কোঅর্ডিনেশন সেন্টারের একজন ডিউটি ??অফিসার বলেছিলেন, অভিবাসীদের উদ্ধারে সেই সময়ে বেনগাজি থেকে পাঠানো যেতে পারে এমন কোনো টহল নৌকা তাদের কাছে ছিল না।
অবশ্য ইতালীয় উপকূলরক্ষীরা বলেছে, অভিবাসীদের বাঁচাতে রোম ওই এলাকায় থাকা বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে উদ্ধার অভিযানে যোগ দিতে অনুরোধ করে। তবে রবিবার সকালে ফ্রোল্যান্ড নামক একটি বণিক জাহাজে যাত্রীদের স্থানান্তরের চেষ্টার সময় অভিবাসীবাহী জাহাজটি ডুবে যায়।
ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, ইতালিতে এ বছর সমুদ্রপথে অভিবাসীদের আগমন বেড়েছে। ইউরোপের এই দেশটিতে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় তিনগুণ বেশি অভিবাসী এসেছেন বলে রেকর্ড করা হয়েছে। কেবল ৯-১১ মার্চ পর্যন্ত ৪৫০০ জনেরও বেশি মানুষ ইতালিতে পৌঁছেছেন।
উল্লেখ্য, সমুদ্রপথে ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টাকারী অভিবাসীদের জন্য ইতালি অন্যতম প্রধান এক প্রবেশপথ। কেন্দ্রীয় ভূমধ্যসাগরীয় এই রুটটি বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক হিসেবে পরিচিত।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার মিসিং মাইগ্রেন্টস প্রজেক্টের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সাল থেকে মধ্য-ভূমধ্যসাগরে অন্তত ২০ হাজার ৩৩৩ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী মারা গেছেন অথবা নিখোঁজ হয়েছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়