শাহজালাল বিমানবন্দর : মশা নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে তিনজনের মতামত চান হাইকোর্ট

আগের সংবাদ

ফের ‘ভেরিফিকেশন’ নাটক! : মিয়ানমার থেকে আসা ১৭ সদস্যের প্রতিনিধিদল টেকনাফে

পরের সংবাদ

বান্দরবানে সেনাসদস্য নিহত : পাহাড়ে শান্তি ফিরবে কখন?

প্রকাশিত: মার্চ ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

পার্বত্য এলাকায় সম্প্রতি সন্ত্রাসীদের তৎপরতা বেড়ে গেছে। বিভিন্ন দুর্গম এলাকায় আস্তানা গড়ে সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মজুত বাড়িয়েছে। এসব অস্ত্র ব্যবহার করে অপহরণ, চাঁদাবাজি, হত্যাকাণ্ডসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো পাহাড়ে বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করছে বলে খবর আসছে। অপরাধ দমনে পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী ও যৌথবাহিনী অভিযান চালাচ্ছে। বাহিনীর সদস্যরা সন্ত্রাসী হামলার শিকার হচ্ছেন। গত রবিবার বান্দরবানে সেনাসদস্যদের ওপর কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) অতর্কিত গুলিবর্ষণে এক সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো দুজন। পরদিন সোমবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে জাতীয় শিশু দিবস ও মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় মা ও শিশুদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের উদ্দেশে গমনকৃত দলের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিলেন সেনাসদস্যরা। তাদের ওপর অতর্কিত গুলিবর্ষণ করে কেএনএ সন্ত্রাসীরা। বিচ্ছিন্নতাবাদী ভাবধারায় বিশ্বাসী কেএনএ নামক সশস্ত্র সন্ত্রাসী দলটি ইতোপূর্বে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়ার মতো একটি জঙ্গিগোষ্ঠীকে বান্দরবানের পাহাড়ি এলাকায় অর্থের বিনিময়ে অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিয়েছে। জানা যায়, পাহাড়ি এলাকার অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের জন্য বান্দরবানের থানচি সড়ক সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে। সরকারের এ উন্নয়নমূলক কার্যক্রমকে প্রতিহত করার জন্য কেএনএ সন্ত্রাসী দলটি সড়ক নির্মাণ কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত বেসামরিক ঠিকাদার, মালামাল সরবরাহকারী ও শ্রমিকদের কাছ থেকে প্রথমে চাঁদা দাবি করে, পরবর্তী সময়ে কাজ বন্ধ করার হুমকি দেয়। কিন্তু সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এ কাজ চলমান থাকায় কেএনএ সন্ত্রাসী দল গত ১১ মার্চ ১২ জন শ্রমিককে অপহরণ করে। কিছুদিন পরপরই অশান্ত হয়ে উঠছে পার্বত্যাঞ্চল। রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলায় পাহাড়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ঘটছে প্রাণহানি। পার্বত্যাঞ্চলে পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন ও পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন আন্দোলনের নামে সক্রিয় আঞ্চলিক সংগঠনগুলো নিজেরাই পারস্পরিক দ্ব›েদ্ব লিপ্ত থাকছে সবসময়। আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিনিয়ত চলছে বন্দুকযুদ্ধ ও অপহরণের ঘটনা। স্থানীয় অনেকের ধারণা, প্রকাশ্যে হত্যাকাণ্ড ঘটানোর মূল উদ্দেশ্য হলো এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে আধিপত্য বিস্তার করা। একই সঙ্গে বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটাতে এরা ভারী অস্ত্র সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছে। পাহাড়ি সশস্ত্র গ্রুপগুলোর কাছ থেকে সম্প্রতি যেসব অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে তাতে তাদের ভারী অস্ত্র সংগ্রহের প্রমাণ মিলছে। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ঐকমত্যের সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির আওতায় সে সময়কার বিচ্ছিন্নতাবাদী শান্তি বাহিনীর ২ হাজার সশস্ত্র কর্মী অস্ত্র সমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন। অবসান ঘটে অব্যাহত রক্তপাতের। দুঃখজনক ব্যাপার, পাহাড়ে শান্তি ফিরেনি। সেনাবাহিনী ও যৌথবাহিনীর ওপর সন্ত্রাসী হামলার বিষয়টি নতুন করে ভাবিয়ে তুলছে। তারা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সন্ত্রাসী হামলা, কাজে বাধা দেয়ার মতো অপরাধ করছে। এদের কোনোভাবেই ছাড় দেয়া যাবে না। যে কোনো মূল্যে সন্ত্রাসীদের দমন করতে হবে। পার্বত্যাঞ্চলে শান্তি বজায় রাখতে সরকারকে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। আঞ্চলিক গ্রুপগুলোর সন্ত্রাসী তৎপরতা নিয়ন্ত্রণ করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সঙ্গে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্তদেরও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়