চলতি সপ্তাহে ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা

আগের সংবাদ

গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ ঘাটতির আশঙ্কা : সেচের জন্য নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে > ঘাটতি থাকবে ৩ হাজার মেগাওয়াট

পরের সংবাদ

১০ মাস ধরে বিদ্যুৎহীন শাল্লার ৫ গ্রাম

প্রকাশিত: মার্চ ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. সাজ্জাদ হোসেন শাহ্, শাল্লা (সুনামগঞ্জ) থেকে ফিরে : সুনামগঞ্জের আগুয়াই, মৌরাপুর, দত্তপাড়া, শাসখাই ও বিলপুর- এই পাঁচটি গ্রাম ১০ মাস ধরে বিদ্যুৎহীন রয়েছে।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, ২০১৭ সাল থেকে গত বছরের জুনের ভয়াবহ বন্যার পূর্ব পর্যন্ত সরকারের দেয়া সৌর বিদ্যুতের আওতায় ছিলেন এসব গ্রামের মানুষ। কিন্তু গত বছরের ভয়াবহ বন্যার ছোবল সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের সবকিছু তছনছ করে ফেলে। বন্যার সময় থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১০ মাস ধরে বিদ্যুতের আলোবিহীন উপজেলার এ পাঁচ গ্রাম। বন্যায় সৌর প্রকল্পটি একেবারে অকেজো হয়ে পড়ায় দিরাই পিডিবি অফিসে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের বকেয়া বিলসহ সব মিটার জমা দিয়েছেন গ্রাহকেরা।
জানতে চাইলে পিডিবির দিরাই শাখার আবাসিক প্রকৌশলী মো. রুবেল রানা এ প্রতিবেদককে বলেন, আগে সবগুলো বকেয়া বিল পরিশোধ করতে হবে। তারপর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে জানাতে পারব।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রকল্প এলাকার ভেতরে গরু-ছাগল বসবাস করছে। খুঁটির সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে আছে। কোনো কোনো জায়গায় উপড়ে পড়ে রয়েছে বৈদ্যতিক লাইন। কোনো কোনো জায়গায় এসব লাইনের তার মানুষের মাথা স্পর্শ করছে। বন্যার আগে কোনো রকমে দৈনিক ২-৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারলেও বন্যার কবলে পড়া এ প্রকল্পটি বর্তমানে কোনো কাজে আসছে না। এতে শাসখাই, মৌরাপুর, আগুয়াই, দত্তপাড়া ও বিলপুর পাঁচটি গ্রামের লোকজন একেবারেই অন্ধকারে জীবনযাপন করছেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ভেবেছিলেন বিদ্যুৎ পেলে তাদের ব্যবসার প্রসার ঘটবে। কিন্তু হয়েছে এর উল্টো। এ পাঁচ গ্রামের ব্যবসায়ীসহ এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎহীন থাকায় এলাকার ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়ায় ব্যাঘাত ঘটাসহ নানা সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
শাসখাই গ্রামের সন্দীপন, হরি দাস, নেপাল দাসসহ অনেকেই এ প্রতিবেদককে জানান, তারা বিল দিতে চাইলেও প্রকল্প কর্তৃপক্ষ সঠিক সময়ে বিল নিতে না আসায় বিল বকেয়া জমেছে। এদিকে পল্লী বিদ্যুতের খুঁটিও টাঙানো হয়েছে এ পাঁচ গ্রামে। সংযোগ পাচ্ছেন না এলাকাবাসী। কেন সংযোগ পাচ্ছে না এ প্রশ্নের কোনো সদুত্তরও খুঁজে পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৪০০ কিলোওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন প্রকল্পটি ২০১১ সালে শুরু হয়ে ২০১৭ সালের ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ও বন মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে প্রায় ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রহিম আফরোজের মাধ্যমে বাস্তবায়িত করে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু সরকারের এত টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বিদ্যুৎ পেয়েও সীমাহীন ভোগান্তিতে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
অভিযোগ রয়েছে, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রহিম আফরোজ কর্তৃপক্ষ সঠিক সময়ে বিল না নেয়ায় গ্রাহকদের কাছে জমা হচ্ছে মোটা অঙ্কের বকেয়া বিল। তারপরও পিডিবির আশ্বাস ও নির্দেশনা পেয়ে পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ পাওয়ার আশায় মোটা অঙ্কের বিল পরিশোধ করেছেন এলাকার বেশিরভাগ গ্রাহক।
জানতে চাইলে পল্লী বিদ্যুৎ দিরাই সাব-জোনাল অফিসের এজিএম মো. নুরুল ইসলাম ভোরের কাগজকে বলেন, আমরা সবকিছু রেডি করে রেখেছি। মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ পাওয়ার পর রহিম আফরোজ কর্তৃপক্ষ অনুমতি দেওয়া মাত্রই আমরা সংযোগ দিয়ে দেব।
স্থানীয় সংসদ সদস্য জয়া সেনগুপ্তা ভোরের কাগজকে বলেন, শাসখাই এলাকার বিদ্যুতের সমস্যা নিরসনে কাজ করে যাচ্ছি। রহিম আফরোজ কর্তৃপক্ষও রাজি হয়েছে। এখন তারা অনাপত্তি সার্টিফিকেট দিলেই দ্রুত কাজ হয়ে যাবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়