চলতি সপ্তাহে ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা

আগের সংবাদ

গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ ঘাটতির আশঙ্কা : সেচের জন্য নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে > ঘাটতি থাকবে ৩ হাজার মেগাওয়াট

পরের সংবাদ

রেকর্ড ছাড়ছে না সাকিবকে

প্রকাশিত: মার্চ ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) সর্বশেষ র‌্যাঙ্কিং অনুযায়ী সব সংস্করণে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ওয়ানডে ক্রিকেটে তিনি ৩৬০ পয়েন্ট নিয়ে আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থান দখল করে আছেন। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার হওয়ার কীর্তি গড়ার সঙ্গে এই ক্রিকেটার একের পর এক রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশকে সারা বিশ্বে পরিচিত করেছেন। তার অনবদ্য পারফরম্যান্সের কারণে রেকর্ড যেন পিছু ছাড়ছে না তার।
একাধিক রেকর্ড গড়ে বিশ্বতারকা হওয়ার পর নতুন এক রেকর্ড গড়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শেষ করেছেন সাকিব। ইংল্যান্ড সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে বাংলাদেশ পরাজিত হলেও সাকিব বল ও ব্যাট হাতে ভালোই চেষ্টা চালিয়েছেন দলকে জয় এনে দিতে। দুই ম্যাচে তিনি দুটি উইকেটও তুলেছেন। এই দুই উইকেট তুলার মধ্য দিয়ে তিনি হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর ম্যাচের আগে ওয়ানডে ক্রিকেটে ৩০০ উইকেটের মালিক হওয়া থেকে মাত্র ৪ উইকেট পিছিয়ে ছিলেন। সিরিজের শেষ ম্যাচ ছিল তার ৩০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করার সুবর্ণ সুযোগ। সুযোগটি কাজে লাগাতে কোনোরকম ভুল করেননি বিশ্বের সেরা এই অলরাউন্ডার। এর মধ্য দিয়ে তিনি বাংলাদেশের সব বোলারকে পেছনে ফেলে শীর্ষে অবস্থান করছেন। সাকিবের পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে আছেন যথাক্রমে সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ও সাবেক স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক। মাশরাফি ২১৮ ম্যাচে ২৬৯টি ও রাজ্জাক ১৫৩ ম্যাচে ২০৭টি উইকেট নিয়েছেন। ৮৪ ম্যাচে ১৪১ উইকেট নিয়ে কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান আছেন চতুর্থ স্থানে। মাইলফলক স্পর্শ করার ম্যাচে তিনি ব্যাট হাতে ৭৫ রান করে দলের হোয়াইটওয়াশ এড়াতে অবদান রেখেছেন।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ ব্যর্থ হলেও সাকিবের নেতৃত্বে এক ম্যাচ হাতে রেখেই টি-টোয়েন্টি সিরিজে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে টাইগাররা। প্রথম ম্যাচে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়ে সাকিব কতটুকু ঠিক কাজ করেছেন তা বুঝা গেছে লিটন-রনিরা যখন রানের তাড়ায় ব্যাট চালাচ্ছিলেন। দলের প্রথম দিকে নামা ব্যাটাররা যখন রানে গতি দিয়ে সাজঘরের পথ ধরেছিলেন তখন ম্যাচের ফিনিশিং দিয়েছিলেন সাকিবই। প্রথম ম্যাচের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে দ্বিতীয় ম্যাচে জয় ছিনিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে সিরিজজয়ী অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এখন পর্যন্ত এই ক্রিকেটার ৩২টি ম্যাচে টাইগারদের নেতৃত্ব দিয়ে ১০ ম্যাচে জয় পেয়েছেন।
সাকিব আল হাসান নিজের সর্বশেষ রেকর্ডটি ছুঁয়েছেন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) নবম আসরে। বিপিএলে এবার ফরচুন বরিশালের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। দলের হয়ে সতীর্থ ইফতিখার আহমেদের সঙ্গে জুটি বেঁধে রেকর্ড বইয়ে ছাপ রাখেন তিনি। বিশ ওভারের ক্রিকেটে সাকিব ও ইফতিখারের গড়া ১৯২ রানের জুটি বর্তমানে পঞ্চম উইকেটে সর্বোচ্চ জুটি। আগের রেকর্ডটি ছিল বার্মিংহাম বিয়ারসের অ্যাডাম হোসে ও ড্যান মুসলির গড়া ১৭১ রানের জুটি। নর্দাম্পটন শায়ারের বিপক্ষে তারা ২০২০ সালে এই রেকর্ড গড়েছিলেন। বিপিএলে এর আগে পঞ্চম উইকেটে সর্বোচ্চ ছিল ১১৫ রানের জুটি। অষ্টম আসরে খুলনার বিপক্ষে সেটি গড়েছিলেন চট্টগ্রামের মেহেদী হাসান মিরাজ ও চ্যাডউইক ওয়ালটন।
ব্যাট ও বল হাতে ২০২২ সালটাও ভালো কাটিয়েছেন সাকিব। বিশ্বের দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে তিনি গত বছর প্রতিযোগিতামূলক টি-টোয়েন্টিতে ৬০০০-এর বেশি রান এবং ৪০০-এর বেশি উইকেট নেয়ার কীর্তি গড়েন। তার আগে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে এই রেকর্ড গড়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের অলরাউন্ডার ডোয়াইন ব্রাভো। তবে সাকিব আল হাসান দ্রুততার দিক দিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছেন। সাকিব এই রেকর্ডের দেখা পেতে খেলেছেন ৩৬৮টি ম্যাচ এবং ব্রাভো খেলেছেন ৫৪৯টি ম্যাচ। বাংলাদেশের এই তারকা ক্রিকেটার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও বাংলাদেশকে আলোকিত করেছেন। বিশ ওভারের বিশ্বকাপের ইতিহাসে তিনিই সর্বোচ্চ উইকেট শিকার করেছেন। তার নামে ১৮.৬৩ গড়ে এবং ৬.৭৮ ইকোনমি রেটে ৪৭টি উইকেট তোলার রেকর্ড রয়েছে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে আরেকটি রেকর্ড রয়েছে সাকিব আল হাসানের। তিনি এ পর্যন্ত বিশ ওভারের বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৮৭টি ডট বল করেছেন। ৩০৬টি ডট বল করে এই তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছেন পাকিস্তানের সাবেক অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদি। ২৪০টি ডট বল করে তালিকার তৃতীয় স্থানে আছেন শ্রীলঙ্কান পেসার লাসিথ মালিঙ্গা।
২০১৮ সালেও জীবনের সেরা কিছু অধ্যায় পার করেছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব। স্পর্শ করেছেন একের পর এক মাইলফলক। দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে তিনি ঐ বছর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে চার হাজার রান ও ৩০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করে রেকর্ড গড়েছিলেন। যদিও বর্তমানে নিজের এই রেকর্ড ভেঙে তিনি নিজেকে এবং দেশকে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছেন। ২০১৮ সাল তাকে আরেকটি নতুন রেকর্ডের ছোঁয়া দিয়েছিল। দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দশ হাজারী ক্লাবে নাম লিখিয়েছিলেন। তার এই রেকর্ড গড়ার দিনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বিশাল ব্যবধানে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একটি ম্যাচ দিয়ে ২০০৬ সালে বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডে আন্তর্জাতিক ম্যাচে অভিষেক হয় সাকিব আল হাসানের। নিজের প্রতিভা দিয়ে এরপর থেকে তিনি বারংবারই রেকর্ড বইয়ে হানা দিয়েছেন। মাত্র ২২ বছর বয়সে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক হয়ে তিনি বিশ্বের তরুণ অধিনায়কের তালিকায় ৬ষ্ঠ স্থানে অবস্থান করছেন। বাংলাদেশের হিসেবে তিনি এই তালিকায় প্রথম স্থানে আছেন। এক মাঠে ১৩১টি উইকেট সংগ্রহ করে তিনি ওয়ানডে আন্তর্জাতিক ম্যাচে বিশ্বে শীর্ষস্থান দখল করে আছেন। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতেও তিনি এক মাঠে ৩৮টি উইকেট তুলে তালিকার শীর্ষে আছেন। ক্রিকেটের এই সংস্করণে ৬ বার এক ইনিংসে চারটি উইকেট তুলেও তিনি রেকর্ড বইয়ে নাম তুলেছেন। এছাড়াও অনেক রেকর্ডবুকের শীর্ষস্থান দখল করে বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন সাকিব আল হাসান।
– শাহাদাত হোসেন কিফাত

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়