চলতি সপ্তাহে ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা

আগের সংবাদ

গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ ঘাটতির আশঙ্কা : সেচের জন্য নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে > ঘাটতি থাকবে ৩ হাজার মেগাওয়াট

পরের সংবাদ

মেয়েকে পুড়িয়ে ভিক্ষায় বাধ্য করতেন মা!

প্রকাশিত: মার্চ ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে নিজের মেয়েকে পুড়িয়ে ভিক্ষাবৃত্তিতে বাধ্য করেছিলেন তার গর্ভধারিণী মা। আর এই ভিক্ষাবৃত্তিতে বাধ্য করার জন্য আগুন লাগিয়ে মেয়ের শরীরে ছ্যাঁকা দিয়ে ক্ষত সৃষ্টি করতেন এই নারী। এরপর সেই ক্ষত দেখিয়ে মেয়েকে ভিক্ষা করতে বাধ্য করতেন। কিন্তু সেই কিশোরী মেয়েকে এক দম্পতির ঘরে গৃহসহায়িকার কাজে দিয়ে সেই দম্পতিকেই মামলা দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে উল্টো নিজেই গ্রেপ্তার হয়েছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর কর্মকর্তাদের হাতে। গত রবিবার রাতে নগরীর পাঁচলাইশ থানার বদনাশাহ মাজারের সামনে থেকে ওই নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়া হোসনে আরা বেগমের (৩৮) বাবার বাড়ি রাঙ্গামাটি এবং স্বামীর বাড়ি নোয়াখালী জেলায়। দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহর রেলস্টেশন এলাকায় খালেক কলোনিতে ভাড়া বাসায় থাকতেন। পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা জানান, ২০২২ সালের ২৭ মে হোসনে আরা বেগম তার ১১ বছর বয়সি মেয়ে রাশেদা আকতারকে অপহরণের অভিযোগ এনে রাশেদ ও লিমু নামে এক দম্পতির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেন।
নাইমা সুলতানা বলেন, আমরা মেয়েটিকে উদ্ধার করেছি। এরপর আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে মেয়েটি জানায়, সে বদনাশাহ মাজারের সামনে ভিক্ষা করত। মা তার পা পুড়িয়ে ক্ষত সৃষ্টি করে ভিক্ষা করতে পাঠাত। সড়ক দুর্ঘটনায় তার ছোট ভাইয়ের পা ভেঙেছিল। তার মা রাস্তায় ছেলেকে নিয়ে কান্না করছিল। তখন লিমু নামে এক পথচারী মহিলা তাকে দেখে টাকা-পয়সা দিয়ে সহযোগিতা করেন। মেয়েটিকে বাসায় নিয়ে কাজের সুযোগ দেন।
পুলিশ সুপার জানান, জবানবন্দিতে আসা তথ্য আদালত বিবেচনায় নিয়ে নিজের মেয়েকে ভিক্ষাবৃত্তিতে জড়ানোর অভিযোগে হোসনে আরাকে আসামি করে মামলা করার জন্য পাঁচলাইশ থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। পুলিশের করা ওই মামলায় হোসনে আরাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক মর্জিনা আক্তার জানিয়েছেন, হোসনে আরার স্বামী মারা গেছেন। ওই মহিলা মেয়েকে ভিক্ষা করতে বসিয়ে দিয়ে দূরে ফুটপাতে বসে থাকতেন। ভিক্ষার টাকায় সংসার চালানোর পাশাপাশি হোসনে আরা একটি স্মার্টফোন কিনে টাকার বিনিময়ে লুডু খেলতেন।
২০২১ সালে হোসনে আরার ছোট ছেলে সড়ক দুর্ঘটনায় পা ভেঙে ফেলে। চিকিৎসার টাকার জন্য তিনি রাস্তায় কান্নাকাটি করতে থাকেন। ফারজানা আলী চৌধুরী লিমু কান্নারত মহিলাকে দেখে সহানুভূতিশীল হয়ে কয়েক ধাপে চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার টাকা দেন।
পাশাপাশি হোসনে আরার ১১ বছর বয়সি কিশোরী মেয়েকে ভিক্ষা করতে না দিয়ে নিজের বাসায় গৃহসহকারী হিসেবে নিয়োগ দেন। মেয়েটিকে একেবারে নিজের পরিবারের সদস্যের মতোই রেখেছিলেন রুমু ও তার স্বামী রাশেদ। নতুন পোশাক কিনে দিতেন, মায়ের সঙ্গে ভিডিওকলে কথা বলিয়ে দিতেন এবং বেতনের টাকা বিকাশে পাঠিয়ে দিতেন। কিন্তু ভিক্ষাবৃত্তিতে আয় বেশি হওয়ায় হোসনে আরা তার মেয়েকে আবারো একই কাজে নামানোর ফন্দি এঁটে দম্পতিকে অপহরণ মামলায় ফাঁসিয়ে দেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়