চলতি সপ্তাহে ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা

আগের সংবাদ

গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ ঘাটতির আশঙ্কা : সেচের জন্য নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে > ঘাটতি থাকবে ৩ হাজার মেগাওয়াট

পরের সংবাদ

ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ শুরু হওয়ায় উচ্ছ¡সিত সাবিনারা

প্রকাশিত: মার্চ ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাংলাদেশের ফুটবলে যত অর্জন তার অধিকাংশ মেয়েদের কল্যাণে। গত বছর সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নেপালকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশের মেয়েরা। এরপর এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঘরের মাঠে আবরো নেপালের মেয়েদের হারিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতে বাংলাদেশ। এমন সাফল্যে কে স্পোর্টসের সহায়তায় নারীদের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ চালু করার উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। গতকাল এক জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এর আনুষ্ঠানিক পথচলা শুরু হয়। নাম ঠিক করা হয় বাংলাদেশ ওমেন্স সুপার লিগ। এই লিগ শুরু হওয়ায় উচ্ছ¡সিত জাতীয় দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন।
গতকাল শুধু লিগের আনুুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়। উদ্বোধোনী অনুষ্ঠানে বিশ্বখ্যাত ফুটবল ফ্রিস্টাইলার আগুস্কা ও প্যাটট্রিকের প্রদর্শনীও দেখানো হয়। এই টুর্নামেন্টে খেলার জন্য উন্মুখ জাতীয় নারী দলের অধিনায়ক সাফ চ্যাম্পিয়ন সাবিনা খাতুন। তিনি বলেন, ‘নারী ফুটবলে আস্থার যে জায়গা তৈরি হয়েছে তার প্রতিদান হিসেবে আমরা দেশকে সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়ন করতে পেরেছি। ফুটবলের সুদিন হারিয়ে গিয়েছিল সেটা ফিরে এসেছে মেয়েদের হাত ধরে। আমরা সবাই অধীর আগ্রহে রয়েছি এই লিগ নিয়ে। মেয়েদের যে স্বপ্ন ছিল তার পূরণ হতে যাচ্ছে। শুধু আমাদের ফুটবলাররাই নন, ইতোমধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার অনেকেই জেনেছে। তারাও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।’
নতুন যুগে পা রাখছে বাংলাদেশের নারী ফুটবল অঙ্গন। শুধু দেশের ইতিহাসে নয়, দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে এশিয়ার মধ্যেও প্রথমবার নারীদের নিয়ে ফ্রাঞ্চাইজি লিগ আয়োজন হচ্ছে। আগামী মে মাসে আসরটি আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। গতকাল রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে টুর্নামেন্টের ঘোষণা এবং লোগো উন্মোচন করে দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। মাস নির্ধারণ হলেও তারিখ ও দল এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এই লিগে ছয়টি দল থাকবে। পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে দল, তারিখ ও আসরের নিয়মকানুন জানাবে বাফুফে। দুইটি ভেন্যুর খেলা চালানোর পরিকল্পনা থাকলেও এই টুর্নামেন্টের সব ম্যাচ হতে পারে সিলেটে। কেননা এখনো বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের সংস্কারকাজ শেষ হয়নি। উদ্বোধোনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে লোগো উদ্বোধোন করেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কে স্পোর্টসের সিইও এবং মহিলা ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান দুইজনই আমার কাছে এই ব্যাপারে আলাপ করেছিলেন। দুইটি কারণে আমি এই লিগটি ইতিবাচক হিসেবে দেখছি। মেয়েরা আর্থিকভাবে লাভবান হবে এবং আরো ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে।’
কে স্পোর্টস দেশের ক্রীড়াঙ্গনে নানাক্ষেত্রে পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছে। এমন উদ্যোগ নেয়ার কারণ হিসেবে স্পোর্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহাদ করিম বলেন, ‘নারীরা ফুটবলকে বিশেষ উচ্চতায় নিয়েছে। এমন একটি আয়োজনের এটাই উত্তম সময়।’
লিগের বাকি বিষয়ে করবে কাজ বাফুফে। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ বলেন, ‘মহিলা ফুটবল কমিটির চেয়ারপারসন কিরণ আপার নেতৃত্বে একটি আলাদা কমিটি হবে। সেই কমিটি সামনে আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়দের ছাড়পত্র, স্টেডিয়াম ফ্যাসিলিটিজ, ফ্রাঞ্চাইজি চূড়ান্তকরণসহ বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করবে। আমরা ট্রায়াল এন্ড এররের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে চাই।’
এই লিগে ১৯ থেকে ২৪টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। দেশের ফুটবলারদের বিভিন্ন ক্যাটাগরি করা হবে। যেখানে এ ক্যাটাগরিতে থাকবেন তিনজন, বি ক্যাটাগরিতে থাকবেন তিনজন এবং সি ক্যাটাগরিতে থাকবেন চারজন করে খেলোয়াড়। ক্যাটাগরির বাইরে প্রতি দল দুইজন করে ফুটবলার নিতে পারবে। প্রতি দলে পাঁচজন করে বিদেশি খেলোয়াড় খেলার সুযোগ পাবে। বিদেশি ফুটবলারের মধ্যেও রয়েছে আলাদা ভাগ। দক্ষিণ এশিয়ার বাইরে থেকে যে কোনো দেশের তিন জন ফুটবলার নিবন্ধন করাতে পারবে দলগুলো। আর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো থেকে নিবন্ধনের সুযোগ পাবে মাত্র দুই জন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে টুর্নামেন্টের জন্য শুভকামনা জানান নারী অঙ্গনে বিশেষ ব্যক্তিত্ব আজমেরি হক বাধন, চিরকুট ব্যান্ডের শারমিন সুলতানা সুমি, অভিনেত্রী তানজিন তিশাসহ আরো অনেক। উপস্থাপনায় ছিলেন কাজী সাবির ও ভারতের কারিশমা কোঠাক।
দেশি ও বিদেশি ফুটবলারদের অংশগ্রহণের এ আসরে নারীদের কোচিংয়ে আগ্রহী করার জন্য সবগুলো দলের সহকারী কোচ হিসেবে স্থানীয় নারীদের রাখার সুযোগ দেয়া হয়েছে। বাফুফে নারী বিভাগের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণ এই লিগ আয়োজনের উদ্যোগ নেয়ায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ চলছে। সেখানে ম্যাচ আয়োজন করা সম্ভব বলে মনে হয় না।
ঢাকার ম্যাচগুলোর জন্য আমাদের বিবেচনায় রয়েছে বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্স এবং ঢাকার বাইরে সিলেটে ম্যাচ আয়েজিত হতে পারে।’
২০১১ সালে প্রথম শুরু হয় নারী ফুটবল লিগ। গত এক যুগে পাঁচবার এ লিগ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নারী ফুটবলারদের আর্থিকভাবে সাবলীল করার জন্য ফেডারেশন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের আয়োজন করছে। যেখানে অর্থ উপার্জনের পাশাপাশি খেলায় আরো উন্নতি করতে পারবে বাংলাদেশের মেয়েরা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়