চলতি সপ্তাহে ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা

আগের সংবাদ

গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ ঘাটতির আশঙ্কা : সেচের জন্য নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে > ঘাটতি থাকবে ৩ হাজার মেগাওয়াট

পরের সংবাদ

প্রতœতত্ত্ব বিভাগের হস্তক্ষেপ দাবি : অযতœ-অবহেলায় ধ্বংস হচ্ছে শান্তিগঞ্জ রাধামাধবের আখড়া

প্রকাশিত: মার্চ ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শান্তিগঞ্জ (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি : নানা ইতিহাস ঐতিহ্য আর পর্যটন সম্ভাবনায় ভরপুর সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলা। এই উপজেলার ইতিহাস ঐতিহ্য দেশব্যাপী সমাদৃত।
উপজেলার দেখার হাওরের নয়নাভিরাম দৃশ্য মন কাড়বে যে কারো। প্রাচীন থেকে শুরু করে মোঘল আমলের অনেক স্থাপনা রয়েছে শান্তিগঞ্জে। যা পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয় সবসময়। তেমনি একটি প্রাচীন স্থাপনা রাধামাধবের আখড়া। তিনশ বছরের পুরনো এই উপাসনালয়টি ইসকন মন্দির নামে পরিচিত। এটি উপজেলার পাথারিয়া ইউনিয়নের তালুকগাঁও গ্রামে অবস্থিত। ঐতিহাসিক এই নিদর্শনটি সংস্কারের অভাবে অযতেœ অবহেলায় পড়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে।
এক সময় যে আখড়ায় নিয়মিত ভক্তদের আরাধনা হতো, শঙ্খ আর ঢাকের তালের কীর্তন হতো আজ সেটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। ঐতিহাসিক স্থাপনাটি রক্ষণাবেক্ষণে কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের। প্রায় ৩০০ বছরের অধিক পুরনো এই স্থাপত্যটি প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন হলেও এখনো দৃষ্টিতে পড়েনি সরকারের প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের। এখনই ঐতিহাসিক স্থাপনাটি সংস্কারের উদ্যোগ না নিলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চিরতরে ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ার আশঙ্কা করছেন ভক্ত অনুরাগীরা।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, তিনশ বছরের পুরনো এই রাধামাধবের আখড়াটি দেখভাল করছেন ইস্কন সম্প্রদায়। এক সময় মন্দিরের ভেতরে রাধামাধবের মূর্তিসহ বিভিন্ন মূল্যবান জিনিস থাকলেও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বর্তমানে বের করা হয়েছে সব। দীর্ঘদিন ধরে মন্দিরের ভেতর পূজা অর্চনা বা কীর্তন করতে পারছেন না ভক্তরা। দেয়ালের প্রলেপ খসে পড়ছে। দরজা জানালা ভেঙে গেছে।
অনেক স্থানেই ফাটল দেখা দিয়েছে। ছাদের একাধিক ছিদ্র দিয়ে বৃষ্টির পানি প্রবেশ করছে মেঝেতে। ক্ষতিগ্রস্ত স্থান সংস্কার না করলে একসময় ঐতিহাসিক স্থাপনাটি বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন মন্দিরের ভক্ত অনুরাগীরা। সংস্কারের পাশাপাশি মন্দিরটি প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতায় নেয়ার দাবি জানিয়েছেন রাধামাধব আখড়ার দায়িত্বরতরা।
স্থানীয়রা জানান, পাথারিয়া রাধামাধবের আখড়াটি অনেক পুরনো। শান্তিগঞ্জ উপজেলা তথা সুনামগঞ্জের একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা। যা ইস্কন সম্প্রদায় পরিচালনা করে থাকেন। মন্দিরটি বর্তমানে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। তাই ঐতিহাসিক স্থাপনাটি সরকারের প্রতœতত্ত্ব বিভাগের আওতায় নিয়ে রক্ষণাবেক্ষণে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।
শুধু রাধামাধবের আখড়াই নয়, শান্তিগঞ্জ উপজেলায় এরকম আরো অনেক প্রাচীন স্থাপনা আছে যার কোনো কদর নেই। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে ইতিহাস ঐতিহ্যের এই স্থাপনাগুলো। প্রতœতত্ত্ব বিভাগের সংশ্লিষ্টতায় রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি এসব প্রাচীন স্থাপনার।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক নূর হোসেন বলেন, পুরনো এই স্থাপনাটি পরিদর্শন করেছি। আমরা উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে আখড়ার উন্নয়নে যা পারি করব। পাশাপাশি সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যাতে এ প্রাচীন স্থাপনাটি নজরে এনে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার উজ জামান বলেন, রাধামাধব আখড়া শান্তিগঞ্জ উপজেলার একটি সুপ্রাচীণ স্থাপনা। এই স্থাপনাটির রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে স্থাপনাটি তাদের আওতায় নেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়