চলতি সপ্তাহে ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা

আগের সংবাদ

গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ ঘাটতির আশঙ্কা : সেচের জন্য নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে > ঘাটতি থাকবে ৩ হাজার মেগাওয়াট

পরের সংবাদ

নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস নিজেকে আর কত বিতর্কিত করবেন?

প্রকাশিত: মার্চ ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

২০০৬ সালের ১৩ অক্টোবর নরওয়ের নোবেল পিস প্রাইজ কমিটি যখন বাংলাদেশের গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে খ্যাত ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাম ঘোষণা করে তখন বাংলাদেশব্যাপী এক আনন্দ ও উচ্ছ¡াসের ঢেউ আছড়ে পড়ে। অসংখ্য কর্তাব্যক্তি ড. ইউনূসকে অভিনন্দন জানাতে ছুটে যান তার কর্মস্থল এবং বাসভবনে। তিনিও ছিলেন সেদিন ভীষণভাবে উৎফুল্ল। বাংলাদেশের মানুষ বিদেশিদের নোবেল বিজয়ের কথা শুনে শুনে বড় হয়েছে। ১৯১৩ সালে রবীন্দ্রনাথ প্রথম বাঙালি কবি যিনি এই পুরস্কার লাভ করেছিলেন তার ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের জন্য। তখন তিনি ভারতবাসী হিসেবে এই পুরস্কার পেয়েছিলেন। তিনি একজন বাঙালি কবি হওয়ায় এই নোবেলপ্রাপ্তির ফলে আমরা জাতিগতভাবে বিশ্বে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছি। ১৯৯৮ সালে অমর্ত্য সেন অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়ায় বাংলাদেশের মানুষও অনেকটা আনন্দ অনুভব করেছিল। তার আদি নিবাস ঢাকার মানিকগঞ্জে হওয়ায় বাঙালি হিসেবে আমরা গৌরববোধ করেছি। তাছাড়া অমর্ত্য সেন পশ্চিমা দুনিয়ায় লেখাপড়া, শিক্ষকতা এবং গবেষণায় জীবন অতিবাহিত করলেও বাংলাদেশ কিংবা তার পরবর্তী নিবাস ভারতের কথা তিনি বিশেষভাবে মনে রেখেছেন। বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু হিসেবেও পরিচিত হওয়ায় তার নোবেলপ্রাপ্তির আনন্দে আমরাও অংশীদার হয়েছিলাম। এরপর ড. ইউনূসের নাম যখন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী হিসেবে ঘোষিত হয় তখন বাংলাদেশের নাগরিকরা উৎফুল্ল বোধ করেছিলেন বাংলাদেশের নাম নোবেল পুরস্কার লাভের কাতারে ওঠার কথা ভেবে। যদিও আমজনতা প্রতি বছর সুইডেন প্রদত্ত একাডেমিক নোবেল পুরস্কার এবং নরওয়েজীয় শান্তি পুরস্কারের মধ্যে পার্থক্য খুব একটা জানে না, খবরও রাখে না। তারপরও নোবেল পুরস্কারের কথা শুনে উচ্ছ¡সিত হয়েছিল। দুই নোবেল পুরস্কারের পার্থক্য বোঝার প্রয়োজনীয়তাও কেউ অনুভব করেনি। সুইডেন থেকে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস, করোলিনস্কা ইনস্টিটিউট এবং সুইডিশ একাডেমি প্রতি বছর পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, চিকিৎসা শাস্ত্র, সাহিত্য এবং অর্থনীতির (পরে যুক্ত হওয়া) সেরা আবিষ্কার এবং রচনার জন্য যেসব পুরস্কার দিয়ে থাকে, নরওয়েজীয় নোবেল কমিটি সম্পূর্ণ ভিন্ন কারণে সেই পুরস্কার দিয়ে থাকে। নরওয়েজীয় নোবেল পুরস্কারের সঙ্গে শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাহিত্যের সম্পর্ক নেই, সামাজিক ভূমিকার জন্য যারা এই পুরস্কারটি পেয়ে থাকেন তাদের মনোনয়ন সবসময় বিতর্কের ঊর্ধ্বে হয় না। এটি এখন অনেকেই জানেন। আমাদের ড. মুহাম্মদ ইউনূস একসময় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিষয়ে অধ্যাপনা করেছিলেন। কিন্তু তার পুরস্কারটি অধ্যাপনা বা গবেষণার কোনো মৌলিক স্বীকৃতি হিসেবে প্রাপ্ত নয়। নরওয়েজীয় নোবেল কমিটি তাকে ক্ষুদ্র ঋণের প্রবক্তা হিসেবে এই পুরস্কারটি প্রদান করেছে। পুরস্কার পাওয়ার এক-দেড় দশক আগে গ্রামীণ ব্যাংককে ক্ষুদ্র ঋণদাতা ব্যাংক হিসেবে অনেকেই অভিহিত করেছিলেন। যদিও দেশে ক্ষুদ্র ঋণদাতা ব্যাংক এবং সংস্থা হিসেবে আরো অনেক সংগঠন দেশে ও বিদেশে বেশ পরিচিত ছিল। তারপরও ড. ইউনূসের এই পুরস্কার প্রাপ্তি মানুষকে যথেষ্ট আন্দোলিত করেছিল। পুরস্কার ঘোষিত হওয়ার পর ২০০৬ সালের ১০ ডিসেম্বর তিনি বেশ আড়ম্বরেই পুরস্কার গ্রহণ করতে অসলোতে যান, সঙ্গে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিনিধি হিসেবে আরো অনেকের সঙ্গে তাসলিমা বেগম নামের একজন নারীও ছিলেন। ড. ইউনুস ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে সেই সময় দেশে ও বিদেশে অনেক স্বপ্নের কথা বলতেন, দারিদ্র্য বিমোচনের উপায় হিসেবেও বলতেন। তিনি এও দাবি করতেন যে দারিদ্র্যকে একসময় মিউজিয়ামে খুঁজে পাওয়া যাবে। তার এসব কথায় অনেকেই স্বপ্ন দেখতেন। কিন্তু অনেকেই গ্রামীণ ব্যাংকের ৩ দশকের কোনো সাফল্য না দেখার চিত্র পত্রপত্রিকায় তুলে ধরতেন।
যে জোবড়া গ্রামে তার ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে গল্প শোনানো হয়েছিল, তিনি যখন নোবেল পুরস্কার পান তখনো একটি হতদরিদ্র গ্রামই ছিল। আমি নিজেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮০-৯০-এর দশকে শিক্ষকতা করেছি। জোবড়া গ্রামের খুব কাছেই আমার থাকা এবং প্রতিদিন হাঁটাচলার অভিজ্ঞতা ছিল। বেশিরভাগ মানুষই এখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষ। তাদের মুখে ড. ইউনূসের নাম খুব বেশি শোনা যেত না। ১৯৮৩ সালে ড. ইউনূস এরশাদ সরকারের আনুকূল্য পেয়ে ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠা করেন এবং এই ব্যাংকের কর্ণধার হিসেবে দেশে-বিদেশে নিজের যোগাযোগ, পরিচিতি বৃদ্ধি করলেও গ্রামীণ ব্যাংক ক্ষুদ্র ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশের ব্যাংকজগতে শীর্ষস্থান কিংবা জনপ্রিয়তা লাভ করেছে এমনটি বোধহয় আমরা খুব একটা স্মরণ করতে পারব না। তবে তার কিছু কিছু বক্তৃতা, স্বপ্ন দেখানোর লেখালেখি কাউকে কাউকে আন্দোলিত করত। সেই হিসেবে তিনি নাগরিক সমাজের একটি অংশের কাছে পরিচিত ছিলেন। ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে তার কথাবার্তা থাকলেও সেই ঋণের প্রভাব বা প্রতিক্রিয়া নিয়ে আন্দোলিত হওয়ার মতো কখনো কিছু শোনা যায়নি। তারপরও তিনি যখন নোবেল পুরস্কার লাভ করলেনই, তখন নাগরিক হিসেবে সবাই কমবেশি উৎফুল্ল হয়েই ছিলেন। তিনি অল্প কিছুদিন মানুষের দৃষ্টি কেড়েও নিয়েছিলেন। তবে দেশে ১/১১-এর ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর কিছুদিন মানুষ এই পরিবর্তনের নেপথ্যের বিষয়গুলো ভালো করে বুঝে উঠতে পারেনি। সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা যখন বিতর্কিত হতে থাকে, সরকারও যখন নির্বাচনের আয়োজন ছেড়ে ভুল পথে যাত্রা করতে থাকে, তখনই ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নতুন দল গঠন করা, রাজনীতির উচ্চাভিলাষ, আবার দল ভেঙে দেয়া ইত্যাদি কর্মকাণ্ডগুলো মানুষকে হতচকিত করে দেয়। তাকে নিয়ে কয়েক মাস আগে যে উচ্ছ¡াস ও আশাবাদ মানুষের মধ্যে ছিল, পরে তাকে ব্যতিক্রমী এক অস্থির ও চঞ্চল চিত্তের মানুষ বলে মনে হতে থাকল। আরো জানা গেল ১/১১-এর নেপথ্যের কুশীলবদের তিনি একজন সমঝদার ছিলেন। মানুষের আশাহত হওয়ার মতোই তিনি একের পর এক কাজ করতে থাকেন। জাতীয় কোনো সংকটে তিনি অতীতেও মানুষের পাশে দাঁড়াননি, নোবেল পুরস্কার পাওয়ার সময় দেশে যে রাজনৈতিক সংকট চলছিল তা নিরসনেও তিনি কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেননি। ফলে তার জনপ্রিয়তা অনেকটা বুদবুদের মতো আচমকা দেখা গেল আবার মিশে যেতে থাকল। এটি জাতির জন্যও সুখকর হয়নি। নোবেল পুরস্কারকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যে যে উচ্চাশা ছিল, যে বড় মাপের মানুষকে নিয়ে চিন্তা করার ধারণা ছিল সেটিও দ্রুত ভেঙে যেতে থাকে। এক কথায় তিনি নিজেই নিজের উচ্চতা ক্ষুদ্র ঋণের প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংক দিয়ে যেভাবে দেশে ও বিদেশে পরিচিত করতে চেয়েছিলেন। সেটির ভিত্তি এই পলিমাটির দেশেই যখন খুব একটা গঠিত হয়নি, পৃথিবীর অন্যত্রও আশা করা কেবলই দুরাশার বিষয় হয়ে থাকল। পরবর্তী সময়ে তিনি গ্রামীণ ব্যাংক এবং আরো অনেক প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে বিতর্ক জন্ম দিতে থাকেন। সেটি দেশে ও বিদেশেও ঘটেছে, প্রচারিতও হয়েছে। তিনি আইন ভেঙে ব্যাংকের এমডি পদে ১০ বছর কাটিয়ে দেয়ার পরও পদ ছাড়তে চাননি। তাকে ব্যাংকের একটি বিশেষ সম্মানিত পদে থাকার সরকারি প্রস্তাবও দেয়া হয়েছিল। তিনি তা গ্রহণ করতে রাজি হননি। এমডি পদটি তার কাছে অনেক বড় পদ মনে হলো। কেন মনে হলো তা রহস্যাবৃত। তিনি এর ভালো উত্তর দিতে পারেন। তবে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদটি নিয়েই তিনি শুধু আদালতেই গেলেন না, বিদেশেও তার ব্যক্তিগত কিছু বন্ধু-বান্ধবের কাছে নালিশ নিয়ে গেলেন। দেশের উচ্চতর আদালতে তিনি হারলেন, তারপরও তার বোধদয় হয়নি যে একাজ একজন নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তির মর্যাদার সঙ্গে যায় না। তার তো অর্থ-সম্মান কোনোটিই কম ছিল না। দেশে-বিদেশে তিনি মর্যাদার সঙ্গেই বিচরণ করতে পারতেন। কিন্তু তিনি পুকুর, খালবিল, নদী এমনকি মহাসাগরের পানিও ঘোলা করে ছাড়লেন। এখন বাংলাদেশে ক’জন মানুষ তাকে দেশ ও জাতির একজন স্মরণীয় বরণীয় মানুষ হিসেবে দেখে থাকেন, সেটি যদি তিনি একটু পরখ করে নিতেন তাহলে বুঝতে পারতেন যে তিনি শুধু নিজেকেই জাতির মন থেকে মুছে ফেলেননি, শান্তির নোবেল পুরস্কারটির মর্যাদাও তার কাজের কারণে এখন আর মানুষের কাছে আগের অবস্থানে নেই। তিনি দেড় দশক ধরে দেশে, নাকি বিদেশে আছেন তা অনেকেরই জানা নেই। তবে মাঝে মধ্যে খবর হয় তিনি হিলারি ক্লিনটনের বিশেষ ‘বন্ধুত্ব’ নিয়ে আছেন, মার্কিন মুলুকে তার আরো কিছু শুভানুধ্যায়ী আছেন। কিন্তু শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস শান্তির জন্য কী করলেন তা আজ পর্যন্ত কেউ প্রশ্ন করে উত্তর খুঁজে পাবেন না। এ হচ্ছে বাস্তবতা।
সম্প্রতি তিনি আবার আলোচনায় নিজেকে হাজির করলেন। ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকা ৪০ জন বিশেষ ব্যক্তিত্ব বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি খোলা চিঠি এক পাতার বিজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করেছে। এই বিজ্ঞাপনের অর্থমূল্য কত ডলারের তা আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব নয়। তবে একজন নোবেল বিজয়ীকে পত্রিকার বিজ্ঞাপনের দ্বারস্থ হতে হয়েছে, ৪০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির একটি আবেদন প্রকাশ করতে হয়েছে। সেটি মোটেও নোবেল পুরস্কারের মর্যাদার সঙ্গে যায় না। যেসব ব্যক্তি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে খোলা চিঠি লেখেছেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ আছে তাদের অল্প সংখ্যকের নাম এখানকার সুধী সমাজ জানলেও সাধারণ মানুষ হিলারি ক্লিনটন আর বান-কি-মুন ছাড়া আর কাউকে চিনেন বলে মনে হয় না। এই বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বাংলাদেশে ড. ইউনূসের অবদান, কর্মকাণ্ড, জনগণের মধ্যে তার প্রভাব ইত্যাদি সম্পর্কে যদি খোঁজখবর নিতেন তাহলে তাদের কজন যে চিঠিটি লিখেছেন বলে দাবি করা হয়েছে তাতে স্বাক্ষর দিতেন কিনা আমরা জানি না। তবে ড. ইউনূস কিংবা নেপথ্যের আরো বড় কোনো কুশীলব আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে একটি অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি করার পাঁয়তারা থেকেই এমনটি করে থাকতে পারেন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা। ড. ইউনূস দেশে রাজনৈতিক টানাপড়েনের মধ্যে নতুন করে কোনো টান সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে। দেশের অভ্যন্তরে কেউ কেউ দড়িতে বেঁধে সরকার টেনে ফেলারও হুমকি দিচ্ছেন। অঙ্কের জটিলতা কারো কাছে দুর্বোধ্য হলেও সূত্র যাদের জানা তারা ভালো করেই বুঝতে পারেন এর উৎস কোথা থেকে, পরিণতি কোথায় যাবে। তবে ড. ইউনূস নিজেকে ক্রমাগত নামাতে নামাতে অবস্থান নেয়ার খুব বেশি আর বাকি কিছু রাখেননি। তিনি আসলে আমাদেরই এখন বিদেশে হাসির পাত্র করতে নেমেছেন বলে মনে হয়। তবে বাংলাদেশের জনগণ তাদের অবস্থানেই আছেন, ড. ইউনূসের অস্থিরতা সবাইকে বিস্মিত ও হতবাকই কেবল করছে।

মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী : অধ্যাপক (অবসরপ্রাপ্ত), ইতিহাসবিদ ও কলাম লেখক।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়