চলতি সপ্তাহে ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা

আগের সংবাদ

গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ ঘাটতির আশঙ্কা : সেচের জন্য নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে > ঘাটতি থাকবে ৩ হাজার মেগাওয়াট

পরের সংবাদ

চবিতে প্রশাসনিক পদ থেকে আরো ৩ শিক্ষকের পদত্যাগ

প্রকাশিত: মার্চ ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রশাসনিক পদ থেকে গতকাল সোমবারও ৩ জন শিক্ষক পদত্যাগ করেছেন। এ নিয়ে গত দুদিনে ১৯ জন শিক্ষক প্রশাসন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। এভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রশাসনিক পদ থেকে বর্তমান উপাচার্যের এক সময়ের ঘনিষ্ঠজনরা পদত্যাগ করায় প্রশাসন চালাতে হিমশিম খেতে হবে বলে আশঙ্কা করছেন সিনিয়র শিক্ষকরা। তবে উপাচার্য শিরীণ আক্তার দাবি করছেন, এতে প্রশাসন পরিচালনায় কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না। কারণ তিনি (উপাচার্য) এদের ‘একধরনের ষড়যন্ত্রের’ আভাস আগেই পেয়েছিলেন এবং সেই অনুযায়ী তিনি এসব শূন্য পদে নতুনদের দায়িত্ব দেয়ার জন্য লোকবলও ঠিক করে রেখেছেন।
গতকাল দুপুরে ৩ জন শিক্ষক চবি রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন। তারা হলেন- সহকারী প্রক্টর পদ থেকে লোকপ্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াকুব, অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান হলের প্রভোস্ট পদ থেকে ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সুমন বড়–য়া এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট পদ প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম। চবির পরিবহন বিভাগের প্রশাসকের দায়িত্ব থেকেও অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগী তিন শিক্ষক জানিয়েছেন, তারা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন। ব্যক্তিগত কারণে তারা পদত্যাগ করেছেন বলে আবেদনে উল্লেখ করেছেন। একদিকে প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর, প্রভোস্ট, হাউস টিউটরসহ বিভিন্ন পদ থেকে যেমন পদত্যাগ চলছে তেমনি আবার নতুন নিয়োগ দেয়া প্রক্টর ও দুজন সহকারী প্রক্টর সোমবার উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য শাখা থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়- নবনিযুক্ত প্রক্টর ড. মোহাম্মদ নূরুল আজিম সিকদার, নবনিযুক্ত সহকারী প্রক্টর মোহাম্মদ রোকন উদ্দিন এবং সৌরভ সাহা জয় সকাল সাড়ে ১১টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার ও চবি উপউপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক বেনু কুমার দের সঙ্গে উপাচার্যের কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে ফুলেল শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন। এ সময় সহকারী প্রক্টর অরূপ বড়–য়া এবং হাসান মুহাম্মদ রোমান উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, গত রবিবার ১৮টি প্রশাসনিক পদ থেকে প্রক্টরসহ ১৬ জন শিক্ষক একযোগে পদত্যাগ করেন। তারা হলেন- প্রক্টর অধ্যাপক ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া, সহকারী প্রক্টর ড. শহীদুল ইসলাম, এস এ এম জিয়াউল ইসলাম, ড. রামেন্দু পারিয়াল, গোলাম কুদ্দুস লাবলু ও মোহাম্মদ শাহরিয়ার বুলবুল তন্ময়, ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি এস্যুরেন্স সেলের (আইকিউএসি) অতিরিক্ত পরিচালক ড. মোহাম্মদ ওমর ফারুক রাসেল, এ এফ রহমান হলের আবাসিক শিক্ষক আনাবিল ইহসান, প্রীতিলতা হলের আবাসিক শিক্ষক ফারজানা আফরিন রূপা, শহীদ আব্দুর রব হলের আবাসিক শিক্ষক ড. এইচএম আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, শহীদ আব্দুর রব হলের আবাসিক শিক্ষক রমিজ আহমেদ সুলতান, শামসুন নাহার হলের আবাসিক শিক্ষক শাকিলা তাসমিন, খালেদা জিয়া হলের আবাসিক শিক্ষক ড. মো. শাহ আলম, নাসরিন আক্তার ও উম্মে হাবিবা ও আলাওল হলের আবাসিক শিক্ষক ঝুলন ধর।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া শহীদ আব্দুর রব হলের প্রভোস্ট এবং সহকারী প্রক্টর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বুলবুল তন্ময় শাহজালাল হলের আবাসিক শিক্ষক হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্বে ছিলেন। তারা অতিরিক্ত দায়িত্বও ছেড়ে দিয়েছেন। পদত্যাগী শিক্ষকরা জানিয়েছেন, চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের সঙ্গে প্রায় এক বছর ধরে মতোবিরোধের পর শিক্ষকরা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন।
শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া পূরণে অনীহা, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও অপমান করা, জ্যেষ্ঠ্যতা লঙ্ঘন, প্রশাসনিক পদে থাকা শিক্ষকদের মতামতকে প্রাধান্য না দেয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনায় পরিবারের সদস্যের অযাচিত হস্তক্ষেপ, একজন সিন্ডিকেট সদস্য ও দপ্তরের এক কর্মকর্তার প্রভাব বিস্তার, নিয়োগে অনিয়ম-দুর্নীতি, আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের মধ্যে বিভক্তি এনে নিজস্ব বলয় তৈরির চেষ্টা এবং বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের প্রাধান্য দেয়া- এসব বিষয়ে মতবিরোধের জেরে শিক্ষকদের সঙ্গে উপাচার্যের দূরত্ব তৈরি হয়।
তবে উপাচার্য ড. শিরীণ আখতার পদত্যাগীদের সমালোচনা করে বলেন, ‘আমি এদের অনেককেই ¯েœহ করতাম, সেজন্য তাদের দায়িত্ব দিয়েছিলাম নানা পদে, কিন্তু তাদের কেউ কেউ তাকে (উপাচার্য) ব্যক্তিগত এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যবহার করতে না পেরে সরে দাঁড়িয়েছেন- যাদের মধ্যে দুজনকে তিনি নিজেই পদত্যাগ করতে বলেছেন। রবিবার ১৮টি পদের মোট ১৬ শিক্ষক পদত্যাগের ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই উপাচার্য নতুন প্রক্টর ও দুজন সহকারী প্রক্টর নিয়োগ দেন। ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নুরুল আজিম সিকদারকে প্রক্টর ও একই বিভাগের প্রভাষক সৌরভ সাহা জয় ও ওশানোগ্রাফি বিভাগের প্রভাষক রোকন উদ্দীনকে সহকারী প্রক্টর নিয়োগ দেয়া হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়