চলতি সপ্তাহে ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা

আগের সংবাদ

গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ ঘাটতির আশঙ্কা : সেচের জন্য নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে > ঘাটতি থাকবে ৩ হাজার মেগাওয়াট

পরের সংবাদ

কিউইদের বদান্যতায় ফাইনালে রোহিতরা : অজিদের বিপক্ষে ড্র করে সিরিজ জিতল ভারত

প্রকাশিত: মার্চ ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পয়নশিপের ফাইনালে উঠতে হলে বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির শেষ টেস্টে জিততে হতো ভারতকে। তাদের সঙ্গে প্রতিদ্ব›দ্বী ছিল শ্রীলঙ্কা। তবে লঙ্কানরা কিউইদের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট ২ উইকেটে হেরে যাওয়ায় শেষ টেস্ট না জিতলেও টানা দুইবার ফাইনালে ওঠে রোহিত-কোহলিরা। ফাইনালে ভারতের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া। গত আসরে কিউইদের কাছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে হেরেছিল ভারত।
ক্রাইস্টচার্চে গতকাল টান টান উত্তেজনায় শেষ হয় নিউজিল্যান্ড-শ্রীলঙ্কার প্রথম টেস্ট। বৃষ্টি বিঘিœত পঞ্চম দিনের শেষ বলে জয় তুলে নেয় কিউইরা। প্রথম ইনিংসে লঙ্কানদের ৩৫৫ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে কিউইরা প্রথম ইনিংসে ৩৭৩ রান তোলে। ১৮ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে লঙ্কানরা। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজের ১১৫ রানে ভর করে ৩০২ রান তোলে সফরকারীরা। আর তাতে নিউজিল্যান্ডের সামনে জয়ের জন্য ২৮৫ রানের লক্ষ্য দাঁড়ায়। চতুর্থ দিন শেষে কিউইরা তাদের শেষ ইনিংসে তোলে ১ উইকেটে ২৮ রান। শেষ দিনে জয়ের জন্য ৯ উইকেটে ২৫৭ রান তুলতে হতো স্বাগতিকদের। তবে বৃষ্টির জন্য শেষ দিনের প্রথম সেশনের খেলা বন্ধ থাকে। দ্বিতীয় সেশনে খেলা শুরু হলে জয়ের জন্য ৫৩ ওভার হাতে ছিল নিউজিল্যান্ডের সামনে। শুরুতেই টম লাথামকে ২৫ ও হেনরি নিকোলসকে ২০ রানে সাজঘরে ফিরিয়ে লড়াইয়ের আভাস দেন বাঁহাতি স্পিনার প্রবাথ জয়াসুরিয়া। তবে আগের দিনে অপরাজিত থাকা কেন উইলিয়ামসন জুটি গড়েন ড্যারিল মিচেলকে নিয়ে। এই দুই ব্যাটারের শতরানের জুটিতে ভর করে শেষ বিকালে জয়ের সম্ভাবনা জাগায় কিউইরা।
শেষ ৫০ বলে মাত্র ৫৩ রান দরকার হয় কিউইদের। হাতে ছিল ৭ উইকেট। তখনই বোলিংয়ে এসে দৃশ্যপট পালটে দেন ডানহাতি এ পেসার আসিতা। প্রথমে মিচেল, এরপর টম ব্লান্ডেলকে তুলে নেন তিনি। ৩ চার ৪ ছয়ে ৮৬ বলে ৮১ রান করে আউট হন মিচেল। তবে এক প্রান্ত আগলে ছিলেন উইলিয়ামসন। ১৭৭ বলে তিন অঙ্ক ছুঁয়ে ধীরে ধীরে দলকে নিয়ে যান জয়ের দিকে। ৬৭ ওভারের শেষেও সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল কিউইরা। জয়ের জন্য দরকার ছিল ২০ রান। অন্য দিকে শ্রীলঙ্কার দরকার ছিল ৫ উইকেট। ৬৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে আবারো মিচেল ব্রেসওয়েলকে সাজঘরে ফিরিয়ে আবারো খেলা জমিয়ে দেন অসিথা। ২ ওভারে ১৫ রান থেকে শেষ ওভারে জয়ের জন্য কিউইদের প্রয়োজন হয় মাত্র ৮ রানের। অসিথার করা প্রথম দুই বলে সিঙ্গেলের পর তৃতীয় বলে ঝুঁকিপূর্ণ ডাবলস নিতে গিয়ে রানআউট হন হেনরি। চতুর্থ বলে ৪ মেরে নিউজিল্যান্ডকে জয়ের খুব কাছে নিয়ে যান উইলিয়ামসন। তবে পঞ্চম বলে বাউন্সারে ডট গেলে ম্যাচ গড়ায় শেষ বলে। সেই বলও ডট দেন অসিথা। তবে টান টান উত্তেজনার মধ্যে অসিথার বল ব্যাটে লাগাতে ব্যর্থ হন উইলিয়ামনস। বল ব্যাটে না লাগলেও রানের জন্য দৌড় শুরু করে প্রান্ত বদল করেন উইলিমাসন। শ্রীলঙ্কার উইকেটরক্ষক নিরোশান ডিকওয়ালা বল ধরেই ছুড়ে দেন আসিথার উদ্দেশে। তিনিও মুহূর্তেই ভেঙে দেন উইকেট। রিপ্লেতে দেখা যায় স্টাম্প ভাঙার আগেই ক্রিজে পৌঁছে গেছেন উইলিয়ামসন। তিনি অপরাজিত থাকেন ১২১ রানে। ৭৫ বছর পর টেস্ট ক্রিকেট দেখল শেষ বলে ম্যাচ জয়। ১৯৪৮ সালের ২০ ডিসেম্বর ডারবানে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শেষ বলে টেস্ট জিতেছিল ইংল্যান্ড। টেস্ট ক্রিকেটের ১৪৬ বছরের ইতিহাসে শেষ বলে টেস্ট জয়ের দ্বিতীয় ঘটনা এটি। কিউইদের এই জয়ের ফলে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াই থেকে ছিটকে যায় লঙ্কানরা। ফাইনাল নিশ্চিত হয় ভারতের।
ফাইনালে ভারতের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া। ইন্দোর টেস্টে রোহিত শর্মাদের হারিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেছিল অজিরা। ফলে চতুর্থ টেস্ট জিততেই হতো ভারতকে। কিন্তু আহমেদাবাদ টেস্ট ড্র হয়। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে শেষ টেস্টে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৪৮০ রানের সংগ্রহ পায় অস্ট্রেলিয়া। জবাব দিতে নেমে ৫৭০ রান তোলে ভারত। ৩ রানে চতুর্থ দিন শেষ করে পঞ্চম দিনে ব্যাট করতে নামে অস্ট্রেলিয়া। দিনের শুরুতেই ম্যাথেউ কুনেমানকে ৬ রানে হারালেও ৯০ রান করে অক্ষর প্যাটেলের শিকার হন হেড। এরপর আর কোনো উইকেট হারায়নি অজিরা। লাবুশেন ৬৩ রান ও স্মিথ অপরাজিত ১০ রান করলে ইনিংস ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া। ফলে ম্যাচ ড্র হয়। ১৮৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন বিরাট কোহলি। ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জেতে ভারত। রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজা নির্বাচিত যৌথভাবে সিরিজসেরা নির্বাচিত হন।
আগামী ৭ জুন থেকে শুরু হবে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল। ১১ জুন পর্যন্ত চলতে পারে খেলা। ইংল্যান্ডের কেনসিংটন ওভালে মুখোমুখি হবে দুই দল। পাঁচ দিনের ফাইনাল টেস্টের জন্য রাখা হয়েছে একটি অতিরিক্ত দিন। বৃষ্টি বা কোনো কারণে খেলার সময় কমে গেলে, অতিরিক্ত দিনে খেলা গড়াবে। ১২ জুন রাখা হয়েছে অতিরিক্ত দিন হিসাবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়