মাদ্রাসা কর্মচারীর কাণ্ড : জাতীয় পরিচয়পত্র ও এমপিওতে ভিন্ন তারিখ!

আগের সংবাদ

যে কারণে দলে নেই মাহমুদউল্লাহ

পরের সংবাদ

দলে ফিরেই মিরপুরে জ্বলে উঠলেন মেহেদী মিরাজ

প্রকাশিত: মার্চ ১৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে ছিলেন না টাইগার অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে শামীম হোসাইনের পরিবর্তে দলে ফিরেই জ্বলে উঠলেন এই তারকা। হোম অব ক্রিকেট মিরপুরে গতকাল ইংলিশদের বিপক্ষে বল হাতে ৪ ওভারে মাত্র ১২ রান খরচায় ৪ উইকেট নেন মিরাজ। ঘরের মাঠে টসে জিতে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে মাত্র ১১৭ রানেই গুটিয়ে যায় বাটলার বাহিনী।
ম্যাচের শুরু থেকেই নিয়মিত উইকেট হারাতে থাকে ইংলিশরা। দলীয় নবম ওভারে মিরাজকে আক্রমণে আনেন সাকিব। প্রথম ওভারেই দলকে ব্রেক থ্রু এনে দেন এই স্পিন অলরাউন্ডার। ওয়ানডাউনে নামা মঈন আলি লেগ সাইডের বল স্লাগ করে ডিপ মিডউইকেটে ফিল্ডারের কাছে ক্যাচ দেন। প্রথম ওভারে মাত্র ২ রান দিয়ে এক উইকেট নেন মিরাজ। এরপর ১১তম ওভারে আবারো বোলিংয়ে আসেন তিনি। এবার মাত্র ৪ রান খরচ করলেও উইকেটের দেখা পানানি। তবে নিজের তৃতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে জোড়া আঘাত হানেন মিরাজ। ১৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে আসেন স্যাম কারান। ফলে বুদ্ধি করে লাইন পরিবর্তন করেন মিরাজ। শেষ মুহূর্তে নিজের অবস্থান ঠিক রাখতে পারেননি কারান। স্ট্যাম্পড হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি। একই ওভারের চতুর্থ বলে আবরো মিরাজের বলেই স্ট্যাম্পড হন ক্রিস ওকস। সামনে গিয়ে খেলতে গিয়ে বল মিস করেন তিনি। প্রথম দফায় ধরতে না পারলেও দ্বিতীয় দফা ধরে স্ট্যাম্প ভেঙে দেন লিটন। তার সর্বশেষ শিকার ক্রিস জর্ডান। তুলে মারতে গিয়ে মিডউইকেটে ধরা পড়েন এই ইংলিশ পেসার। ৪ ওভারে মাত্র ১২ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন মিরাজ।
এর আগে ওয়ানডে সিরিজে তিন ম্যাচে পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন মিরাজ। প্রথম ওয়ানডেতে ২ উইকেট নেয়ার পর দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও ২ উইকেট নেন এই তারকা। এরপর শেষ ম্যাচে দল জিতলেও একটি উইকেট নেন মিরাজ। ইংল্যান্ড সিরিজের আগে বাংলাদেশ সফরে আসে ভারত। সেই সিরিজে ব্যাটে বলে দুর্দান্ত ছিলেন মিরাজ। সেই সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জেতে টাইগাররা। প্রথম ম্যাচে ভারতের দেয়া ১৮৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১২৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে সাকিব-তামিমরা। এরপর মাত্র ৮ রান তুলতেই বাকি ৫ উইকেটও হারিয়ে ফেলে স্বাগতিকরা। দলের নিশ্চিত পরাজয় জেনেও শেষ উইকেটে মোস্তাফিজুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে ৪১ বলে ৫১ রানের অবিশ্বাস্য এক জুটি গড়েন মিরাজ। নিশ্চিত হারতে বসা ম্যাচে বাংলাদেশকে জয় এনে দেন এই অলরাউন্ডার। তার দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ২৪ বল হাতে রেখেই এক উইকেটের জয় পায় টাইগাররা। দলের জয়ে ৩৯ বলে চারটি চার আর দুই ছক্কায় অপরাজিত ৩৮ রান করেন মিরাজ। এরপর সেই সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচেও আগে ব্যাট করতে নেমে ৬৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে টাইগাররা। আবারো জ্বলে ওঠেন মিরাজ। তার অতিমানবীয় সেঞ্চুরিতে ৭ উইকেটে ২৭১ রান তোলে তামিম বাহিনী। মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে গুরুদায়িত্ব পালন করেন মিরাজ। ৫৫ বলে অর্ধশতক হাঁকানোর পর শতকের দেখা পান মাত্র ৮৩ বলে। পরে ব্যাট করতে নেমে ভারত গুটিয়ে যায় ২৬৬ রানে। ফলে ৫ রানে জিতে ওয়ানডে সিরিজ এক ম্যাচ হাতে রেখেই নিশ্চিত করে টাইগাররা।
২০২২ সালে ওয়ানডেতে মনে রাখার মতো একটি বছর কাটিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। যার স্বীকৃতি হিসেবে আইসিসির বর্ষসেরা ওয়ানডে দলে জায়গা পেয়েছেন বাংলাদেশের এ অলরাউন্ডার। ২০২২ পঞ্জিকাবর্ষের পারফরম্যান্স বিবেচনায় নিয়ে গড়া একাদশে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুজন করে জায়গা পেয়েছেন। একজন করে আছেন বাংলাদেশ, পাকিস্তান, জিম্বাবুয়ের। বাংলাদেশের মিরাজ ২০২২ সালে মোট ১৫টি ওয়ানডে খেলেন। এর মধ্যে বল হাতে ২৮.২০ গড়ে নেন ২৪ উইকেট। ব্যাট হাতে নেমেছেন ১০ ইনিংসে। যেখানে একটি সেঞ্চুরি, একটি ফিফটিসহ রান ৩৩০, গড় ৬৬।
এছাড়া সাকিব-তামিমের পর ভবিষ্যৎ অধিনায়ক হিসেবে ভাবা হচ্ছে মিরাজকে। দুই দিন আগের দৃশ্য। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ড সিরিজের আগে অনুশীলন শেষে ছয় ক্রিকেটারের সঙ্গে আলোচনায় বসেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে সেখানে ছিলেন নাজমুল হোসেন, লিটন দাস এবং মেহেদী হাসান মিরাজও। তরুণদের সঙ্গে আলোচনা করার করাণ হিসেবে হাথুরুসিংহে বলেন, দলে নতুন অধিনায়ক খোঁজা চ্যালেঞ্জ নয়, বরং এটা দায়িত্ব। দলের চার সিনিয়র ক্রিকেটার ১৫-১৭ বছর ধরে খেলছে। তারা আরো ১০ বছর খেলবে না। দলকে নেতৃত্ব দিতে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে তুলে আনতে হবে। আমাদের তাদের বাছাই করতে হবে না, তারাই নিজেদের আচরণ ও পারফরম্যান্স দিয়ে আলোচনায় চলে আসছে। তবে মিরাজের মধ্যে সব সময় সেরা হওয়ার প্রবল ইচ্ছা দেখা যায়। বাংলাদেশ যখন ব্যাটিং করে তখন পাশে বসে অনবরত প্রশ্ন করে মিরাজ। সে ক্রিকেট নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করে। অনেক খেলা দেখে। তখনই ভেবেছিলাম, সে অনেক দূর যাবে, আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটারে পরিণত হবে। তার শেখার আগ্রহ অনেক।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়