পার্বত্য শান্তি চুক্তি পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নের অঙ্গীকার

আগের সংবাদ

‘বাংলাদেশ বিজনেস সামিট’ উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী : সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে বিদেশিদের বিনিয়োগের আহ্বান

পরের সংবাদ

চোট যেন নেইমারের নিত্যসঙ্গী

প্রকাশিত: মার্চ ১১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : চোট যেন পিছু ছাড়ছে না পিএসজি তারকা নেইমার জুনিয়রের। পেশাদার ক্যারিয়ারের শেষ দশ বছরে চোটে পড়েছেন ৩৩ বার। ১৪৫টি ম্যাচ মিসের পাশাপাশি মাঠের বাইরে ছিলেন ৮৮০ দিন। সর্বশেষ চোটের কারণে মিস করেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর ম্যাচ। ফলে দুই লেগ মিলিয়ে বায়ার্নের বিপক্ষে ৩-০ গোলে হেরেছে পিএসজি। ক্লাবকে প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের স্বাদ দিতে লিওনেল মেসি ও কিলিয়ান এমবাপ্পের সঙ্গে আক্রমণভাগ সামলানোর দায়িত্ব পেয়েছিলেন নেইমার। গতবারের মতো এবারো ব্যর্থ হওয়ায় এবার ভাঙন দেখা দিতে পারে পিএসজি শিবিরে।
পিএসজির সঙ্গে ২০২৭ সাল পর্যন্ত চুক্তির মেয়াদ আছে নেইমারের। তবে লিগ ওয়ানের ম্যাচে মোনাকোর সঙ্গে হারের পর সতীর্থদের সঙ্গে তর্কে জড়ান এই তারকা। তারপর এক ক্লাব কর্মকর্তার সঙ্গেও তর্কে জড়িয়েছেন। এরপর তার পিএসজিতে থাকা নিয়ে চলছিল নানা সমালোচনা। তার ওপর দীর্ঘসময় ধরে ইনজুরি। এই তারকা ইনজুরিতে পড়েছিলেন কাতার বিশ্বকাপেও। খেলতে পারেননি গ্রুপপর্বের দুই ম্যাচ। হয়তো ইনজুরির কারণেই পিএসজি ছাড়া হতে পারেন নেইমার। ২০২১ থেকে পারফরম্যান্সের অবনতি শুরু হয়েছে নেইমারের। একের পর এক চোটের কারণে গতি এবং তীক্ষèতা কমে গেছে প্রচুর। অনেকবার গোড়ালি এবং পেশিতে ট্রিটমেন্ট হওয়ার জন্য আগের দৌড়ে খেলতে পারেন না পুরো মাঠ। সাম্প্রতিক ইনজুরির কারণে আগামী চার মাসের জন্য মাঠের বাইরে চলে গেছেন নেইমার। পুরো মৌসুমই আর মাঠে নামতে পারবেন না এই তারকা। গোড়ালির চোট সারাতে অপারেশন করাতে হবে এই তারকাকে। স্বনামধন্য ব্রিটিশ বিশেষজ্ঞ জেমস কালডারের নেতৃত্বে কাতারে অপারেশন সম্পন্ন হবে তার। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আসপিটার হাসপাতাল সূত্র। এই ফরোয়ার্ডের অস্ত্রোপচার কালডারের স্পোর্টস মেডিসিন ক্লিনিকে সম্পন্ন হবে। এর আগে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে কালডারের অধীনে আসপিটার হাসপাতালে নেইমার চিকিৎসা গ্রহণ করেন।
২০০৯ সালে সান্তোসে নিজের পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু করেন নেইমার। এর চার বছর পর যোগ দেন স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনায়। ট্রান্সফার মার্কেটের হিসাব অনুযায়ী চার বছর বার্সেলোনায় কাটানোর পর পিএসজিতে ছয় বছর কাটিয়েছেন নেইমার। এই ১০ বছরে ৮৮০ দিন চোটের কারণে মিস করেছেন ১৪৫টি ম্যাচ। চোটে পড়েছেন মোট ৩৩ বার। ২০১৩ সালের ৩ জুন বার্সেলোনায় যোগ দেয়ার পরের বছর ১৬ জানুয়ারি প্রথম চোটে পড়েন নেইমার। সেবারই ৩২ দিনের জন্য মাঠের বাইরে ছিটকে যান তিনি। সব মিলিয়ে বার্সায় ৫ বার অ্যাঙ্কেলের চোটে পড়েন নেইমার। সেই প্রথম চোটে ৩২ দিনের জন্য ছিটকে পড়ার পর ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর দ্বিতীয় বারের মতো অ্যাঙ্কেলের চোটে পড়েন এবং ২৭ দিনের জন্য মাঠের বাইরে ছিটকে যান। এরপর ২০২১ সালের ২৯ নভেম্বর আবারো অ্যাঙ্কেলে চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলে যান ৭৩ দিনের জন্য। গত বছর নভেম্বরে এই কারণে মাঠের বাইরে ছিলেন ৯ দিন। আর গত ২০ ফেব্রুয়ারি লিলের বিপক্ষে ম্যাচে ডান পায়ের অ্যাঙ্কেলে সর্বশেষ চোট পান। ট্রান্সফার মার্কেটের হিসাব অনুযায়ী এবারের চোটে ১৩০ দিন মাঠের বাইরে থাকতে হবে তাকে। এটি সত্য হলে নিজ ক্যারিয়ারে চোটের কারণে মাঠের বাইরে থাকার আগের রেকর্ড ভেঙে ফেলবেন নেইমার। এর আগে চোটের কারণে সর্বোচ্চ ৯০ দিন মাঠের বাইরে থেকেছেন তিনি।
২০১৭ সালে দলবদলে বিশ্ব রেকর্ড গড়ে নেইমারকে বার্সেলোনা থেকে দলে ভেড়ায় পিএসজি। তার চার বছর পরই সতীর্থ মেসিও যুক্ত হন এই ক্লাবে। পরে মেসি, নেইমার ও এমবাপ্পে ত্রয়ীর কল্যাণে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখতে থাকেন পিএসজির মালিক নাসের আল খোলাইফি। তবে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচ করেও আশানুরূপ সাফল্য পায়নি দলটি। ঘরোয়া লিগের সাফল্য নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তাদের। অপরদিকে বার্সেলোনায় নেইমারের সাবেক সতীর্থ লুইস সুয়ারেজ মন্তব্য করেছেন, যদি নেইমার বার্সেলোনায় থাকতেন তাহলে ব্যালন ডি’অর জিততে পারতেন। মেসি ও সুয়ারেজের সঙ্গে মিলে বার্সেলোনার আক্রমণভাগকে অপ্রতিরোধ্য এক রূপ দিয়েছিলেন নেইমার। বার্সায় রীতিমতো উড়ছিলেন নেইমার। পিএসজিতে গিয়ে নিজের সেই সময়টা আর ফিরে পাননি এই ব্রাজিলিয়ান তারকা। বার্সায় নেইমারের অবস্থান নিয়ে সুয়ারেজ বলেন, ‘মেসি ছিল আমাদের কাছে বিশ্বসেরা। আর আমার কাছে নেইমার ছিল দ্বিতীয় সেরা। তারা আমাকে গোল্ডেন বুট জিততে সহায়তা করেছে। আমি সব সময় তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। এটা আরো প্রমাণ করেছে যে, তিনজন তারকা ব্যক্তিগত অর্জনের জন্য না খেলে একসঙ্গে দলীয় সাফল্যের জন্য খেলতে পারে। আমার মনে হয়, এটাই আমাদের সেরা বানিয়েছে। সঙ্গে ভালো সতীর্থও বানিয়েছে।
আমি তাকে বলেছিলাম, তুমি বার্সেলোনায় থাক সবকিছু জিততে পারবে। যদি নেইমার বার্সেলোনায় থাকত, তাহলে সে নিশ্চিতভাবে ব্যালন ডি’অর জিততে পারত।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়