পার্বত্য শান্তি চুক্তি পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নের অঙ্গীকার

আগের সংবাদ

‘বাংলাদেশ বিজনেস সামিট’ উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী : সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে বিদেশিদের বিনিয়োগের আহ্বান

পরের সংবাদ

ঘোড়াঘাটে গাছে গাছে আমের মুকুলের সমারোহ

প্রকাশিত: মার্চ ১১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : উপজেলার আম গাছগুলোতে মুকুলে ভরে গেছে। বসন্তের নানা ফুলের সঙ্গে সৌরভ ছড়াচ্ছে গাছে গাছে আমের মুকুল। আর এ মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণে ম-ম করছে প্রকৃতি। মনকে করে তুলছে আরো প্রাণবন্ত। প্রকৃতিতে শীতের প্রকোপ এবার কিছুটা কম থাকায় বেশ আগেভাগেই মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে শহর এলাকা থেকে শুরু করে গ্রাম-গঞ্জের আম বাগানগুলো। থোকা থোকা মুকুলের ভারে ঝুলে পড়েছে আম গাছের ডালপালা।
গাছে গাছে মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে আমের বাগান। গাছে মুকুলের সঙ্গে গুটি আমের দেখাও মিলছে। বাগান মালিকরা আমের ভালো ফলন পেতে ছত্রাকনাশক প্রয়োগসহ বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ উপজেলায় গাছে গাছে এখন প্রচুর আমের মুকুল। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে এর সুগন্ধ। শহর থেকে গ্রামগঞ্জ সর্বত্র আমগাছ তার মুকুল নিয়ে হলদে রং ধারণ করে সেজেছে এক অপরূপ সাজে। গাছে গাছে অজস্র মুকুল দেখে বাম্পার ফলনের আশা করছে আমচাষি ও সংশ্লিষ্ট উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর।
উপজেলার বরাতীপুর মডেল মোড় এলাকার আম বাগানের মালিক মো. হাফিজুল ইসলাম বলেন, বাগানের অধিকাংশ গাছে ইতোমধ্যে মুকুলে ছেয়ে গেছে। এবার কুয়াশা কম থাকায় মুকুল ভালোভাবে প্রস্ফুটিত হয়েছে। তারা বলেন, আম বাগানে এবার আগেভাগে মুকুল এসেছে। এখন আমের ভালো ফলন পেতে ছত্রাকনাশক প্রয়োগসহ বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছি। প্রাকৃতিক কারণেই এবার আগেভাগেই আম গাছে মুকুল এসেছে। পরিচর্যা আর আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে আমের উৎপাদন বাড়ছে। কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর গাছে মুকুলের পরিমাণ বেশি। আমচাষি এবং সংশ্লিষ্ট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এবার আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং সময়মতো পরিচর্যা হলে চলতি মৌসুমে আমের ভালো ফলন হবে। আর এ কারণেই আশায় বুক বেঁধে আমচাষিরা শুরু করেছেন পরিচর্যা। তাদের আশা, চলতি মৌসুমে তারা আম থেকে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন। উপজেলার বলগাড়ী, বরাতীপুর, কৃষ্ণরামুর, এসবি কালুপাড়া, শ্যামপুর, খোদাদপুর, কুচারপাড়া, ঘোড়াঘাট সদরসহ প্রায় সব এলাকাতেই রয়েছে আম বাগান। লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছরই আম বাগানের সংখ্যা বাড়ছে। তবে গড়ে ওঠা নতুন আম বাগানগুলোর প্রায়ই বনেদি জাতের। বিশেষ করে নিয়মিত জাত ল্যাংড়া, গোপালভোগ, হিমসাগর, আমরুপালি ও মল্লিকা, হাড়িভাঙা জাতেরই গাছ বেশি হচ্ছে। শ্রী চন্দ্রপুর এলাকার আমচাষি মো. মোশাররফ হেসেন বলেন, আমার ৩টি বড় বাগান রয়েছে। এর মধ্যে একটি থাই কাটিমুল বারোমাসি আমের বাগান, একটি হাড়িভাঙা আমের বাগান। এ বছরের আবহাওয়া আমের জন্য অনুকূলে রয়েছে। গত বছরের চেয়ে টানা শীত ও কুয়াশার তীব্রতা এ বছর অনেক কম। গতবারের মতো মৌসুমের শুরুতে শিলাবৃষ্টিও হয়নি। তবে মাঝে-মধ্যেই আকাশে মেঘ জমে উঠছে। এ সময় শিলাবৃষ্টি হলে আমের মুকুলের ক্ষতি হবে। এর ওপর সামনে কালবৈশাখী ঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে। তাই আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে যথেষ্ট শঙ্কাও কাজ করছে। তবে পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলন হবে বলে জানান তিনি।
আমচাষি মো. হারুনুর রশিদ জানান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শে গাছে মুকুল আসার ১৫ থেকে ২০ দিন আগেই তারা পুরো গাছ কীটনাশক দিয়ে ভালোভাবে স্প্রে করে ধুয়ে দিয়েছেন। এতে গাছে বাস করা হপার বা শোষক জাতীয় পোকাসহ অন্যান্য পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। যদি সঠিক সময়ে পোকা দমন করা না যায় তাহলে আমের ফলন কমে যেতে পারে বলে জানান এই আমচাষি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. এখলাস হোসেন সরকার জানান, আমের মুকুল আসার আগে-পরে যেমন আবহাওয়ার প্রয়োজন, এ বছর তা বিরাজ করছে। ডিসেম্বরের শেষ থেকে মার্চের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত আম গাছে মুকুল আসার আদর্শ সময়। এ সময়ে মুকুলের প্রধান শত্রæ কুয়াশা। এখন পর্যন্ত কুয়াশা কম এবং আকাশে উজ্জ্বল রোদ থাকায় আমের মুকুল সম্পূর্ণ প্রস্ফুটিত হচ্ছে।
একটি পৌরসভা ও উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে ২৬৫ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। গাছে গাছে অজস্র মুকুল দেখে বাম্পার ফলনের আশা করা যাচ্ছে। বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়