পার্বত্য শান্তি চুক্তি পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নের অঙ্গীকার

আগের সংবাদ

‘বাংলাদেশ বিজনেস সামিট’ উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী : সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে বিদেশিদের বিনিয়োগের আহ্বান

পরের সংবাদ

এ শহর কি নিরাপদ?

প্রকাশিত: মার্চ ১১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। সম্প্রতি ঢাকায় একের পর এক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে, তাতে নগরবাসী উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছে। এর কারণও রয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, বিস্ফোরণ ঝুঁকিতেই রয়েছে পুরান ঢাকার প্রতিটি অলিগলি। বিশেষ করে হাজার হাজার কেমিক্যাল গুদাম, প্লাস্টিক কারখানা, জুতার কারখানা, ঝুঁকিপূর্ণ গ্যাসের লাইন, অপরিকল্পিত ভবন ঐতিহ্যের পুরান ঢাকাকে পরিণত করেছে আতঙ্কের নগরীতে। কোনো বড় ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্টরা ঝুঁকিমুক্ত করতে নানা পদক্ষেপের কথা শোনান। তবে বাস্তবায়ন হয় না এর কিছুই। বিশেষ করে মৃত্যুকূপখ্যাত কেমিক্যাল গুদামগুলো সরানো হয়নি এখনো। নিমতলীর অগ্নিকাণ্ডের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত কমিটি অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে যেসব সুপারিশ করেছিল, তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল ঢাকার রাসায়নিকের কারখানা আর গুদামগুলো সরিয়ে নেয়া। ২০১০ সালের ১৫ জুন ওই কমিটির প্রতিবেদনে যে ১৭টি সুপারিশ করা হয়েছিল কিছু কিছু বাস্তবায়ন হলেও আসল কাজটিই করা সম্ভব হয়নি গত ১৩ বছরে। পুরান ঢাকাবাসীর এখন একটা প্রশ্ন- আর কত মানুষ মারা গেলে পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যালের গোডাউন সরবে? ২০১০ সালের ৩ জুন নিমতলীতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১২৪ জন মানুষের প্রাণহানির জন্য কেমিক্যালের গুদামগুলোকে দায়ী করা হয়। দুর্ঘটনার পর রাজধানীর আবাসিক এলাকা থেকে অনুমোদিত রাসায়নিক গুদাম ও কারখানা সরিয়ে দিতে একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ওই টাস্কফোর্সের সুপারিশ অনুযায়ী শিল্প মন্ত্রণালয়ের এক যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের একটি কমিটি এবং পরে তিনটি উপকমিটি করা হয়েছিল। আবাসিক এলাকা থেকে রাসায়নিক গুদাম সরিয়ে নিতে বেশ কিছু সুপারিশ করেছিল উপকমিটিগুলো। সুপারিশে উঠে এসেছিল এসিড নিয়ন্ত্রণ আইন, এসিড নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিধিমালার যথাযথ প্রয়োগ না হওয়ার তথ্য। কীভাবে অনুমোদন ছাড়াই বিপজ্জনক দাহ্য পদার্থ আমদানি, উৎপাদন, মজুত, পরিবহন ও বিক্রি হচ্ছে সেই বিষয়টিও তুলে ধরা হয়। এরপর ঝুঁকিপূর্ণ এসব গুদাম সরাতে তোড়জোড় শুরু হয়। কিন্তু নানা জটিলতায় এ উদ্যোগ থেমে যায়। রাসায়নিকের কারখানা ও গুদামগুলো সরানোর দায়িত্বে থাকা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ২০১৭ সালের মার্চে একবার অভিযান শুরু করলেও কয়েক দিনের মাথায় তা থেমে যায়। অভিযোগ রয়েছে, শিল্প মন্ত্রণালয় এবং ব্যবসায়ীদের বড় সংগঠন এফবিসিসিআইর অনুরোধে তারা অভিযান এগিয়ে নিতে পারেননি। এখন প্রশ্ন দাঁড়াচ্ছে- এতগুলো মানুষের প্রাণহানির দায়ভার কে নেবে? ১৯৯৫ সালের পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের (সংশোধিত ২০১০) ৬ ধারায় অবৈধভাবে গুদামজাত, বাজারজাতকরণের সর্বোচ্চ শাস্তি দুই বছরের কারাদণ্ড ও দুই লাখ থেকে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান আছে। অথচ আইনের তোয়াক্কা করে না ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন গুদামে রাসায়নিকসহ দ্রব্য সংরক্ষণ করে। এটা দেখভাল করার দায়িত্ব কার? এত বড় দুর্ঘটনার পরও সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা কি জবাবদিহির আওতায় আসবেন?

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়