পার্বত্য শান্তি চুক্তি পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নের অঙ্গীকার

আগের সংবাদ

‘বাংলাদেশ বিজনেস সামিট’ উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী : সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে বিদেশিদের বিনিয়োগের আহ্বান

পরের সংবাদ

উদ্বোধন করবেন হাসিনা-মোদি : ভারত থেকে জ¦ালানি তেল সরবরাহ শুরু ১৮ মার্চ

প্রকাশিত: মার্চ ১১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মোস্তাফিজুর রহমান বকুল, পার্বতীপুর (দিনাজপুর) থেকে : ভারতের লুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেড থেকে বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুরে রেলহেড অয়েল ডিপোতে ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন দিয়ে প্রথম আন্তঃসীমান্ত জ¦ালানি তেল ডিজেল সরবরাহ শুরু হতে যাচ্ছে। আগামী ১৮ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যৌথভাবে ভার্চুয়ালি এ পাইপলাইন দিয়ে ডিজেল সরবরাহ উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছেন জ¦ালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এমপি।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে পার্বতীপুরে ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনের রিসিপ্ট টার্মিনাল (আরটি) পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের একথা জানান। প্রতিমন্ত্রী বলেন, এর ফলে অল্প সময়ে এবং স্বল্প ব্যয়ে নিরাপদে উত্তরাঞ্চলসহ দেশব্যাপী জ্বালানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে। উত্তরাঞ্চলের মানুষ পর্যাপ্ত জ্বালানি তেল (ডিজেল) ছাড়াও আগামী একশ বছর নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাবে।
পরে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রতিমন্ত্রী। দিনাজপুর জেলা প্রশাসক খালিদ মোহাম্মদ জাকির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব ড. খাইরুজ্জামান মজুমদার, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের চেয়ারম্যান (সচিব) এ বি এম আজাদ, পেট্রো বাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার, অতিরিক্ত সচিব হুমাউন কবির, পার্বতীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম প্রামাণিক, পৌর মেয়র আমজাদ হোসেনসহ বিপিসির তিন কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনার কর্মকর্তারা।
দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন জ¦ালানি তেল সরবরাহের লক্ষ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৮ সালে ১৮ সেপ্টেস্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শিলিগুঁড়ি মাকেটিং রেল টার্মিনালে এই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর

স্থাপন করেন। ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফেন্ডশিপ পাইপলাইন প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৫২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ভারত সরকার দেবে ৩০৩ কোটি রুপি এবং বাংলাদেশ দেবে ১৫০ কোটি টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়ন সময় ধরা হয়েছিল ৩০ মাস (জানুয়ারি/২০২০ থেকে জুন/২০২২ পর্যন্ত)। বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ এর কারণে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন না হওয়ায় চলতি বছরের ২৩ জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, ভারতের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান নুমালীগড় রিফাইনারি লিমিটেড থেকে শিলিগুঁড়ি রেল টার্মিনাল পর্যন্ত ৬৫০ কিলোমিটার পাইপপাইন রয়েছে। শিলিগুড়ি রেল টার্মিনাল থেকে বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলার বাংলাবান্দা সীমান্ত দিয়ে নীলফামারী হয়ে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) রেলহেড অয়েল ডিপো পর্যন্ত ১৩১.৬৭ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণ করা হয়েছে। ১০ ইঞ্চি ব্যাসের এ পাইপলাইন ভারতীয় অংশে ৫ কি.মি এবং বাংলাদেশ অংশে ১২৬.৬৭ কি মি পড়েছে। পাইপলাইন নির্মাণ শেষ হলেও রিসিপ্ট টার্মিনালে ফুয়েল ট্যাংক নির্মাণ কাজ চলমান থাকায় আপাতত রেলহেড অয়েল ডিপোর ট্যাংকার ব্যবহার করা হবে। ২৯ হাজার টন ধারণ ক্ষমতার ৬টি ফুয়েল ট্যাংক, অগ্নিনির্বাপণ কাজের জন্য তিন হাজার লিটার ধারণ ক্ষমতার দুটি ওয়াটার ট্যাংক, অগ্নিনির্বাপক ফোম রাখার জন্য ২ হাজার ৫০০ লিটার ধারণ ক্ষমতার দুটি ব্লাডার ট্যাংক ও অটোমোশন সিস্টেম স্থাপনসহ অন্যান্য কাজ চলমান রয়েছে।
বর্তমান প্রক্রিয়ায় বিদেশ থেকে জ¦ালানি তেল আমদানি করে পার্বতীপুরে নিয়ে আসতে সময় লাগে প্রায় একমাস। এ পাইপলাইন নির্মিত হলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ভারত থেকে

পার্বতীপুর ডিপোতে জ¦ালানি তেল চলে আসবে। পাইপলাইনের মাধ্যমে জ¦ালানি তেল আমদানির ক্ষেত্রে বর্তমান দর বিবেচনায় ব্যারেল প্রতি প্রতি প্রায় ৬ ডলার সাশ্রয় হবে। এতে একদিকে সময় লাগবে কম, অন্যদিকে পরিবহন ব্যয় ও সিস্টেমলস অনেক কমে যাবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শেষে বিপিসির তিন কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনার পার্বতীপুর ডিপোতে ধারণ ক্ষমতা হবে ৪৩ হাজার ৫০০ টন। এ পাইপলাইনের মাধ্যমে বছরে প্রায় এক মিলিয়ন টন ডিজেল ভারত থেকে আমদানি করা যাবে।
প্রাথমিক পর্যায়ে বাংলাদেশ আড়াই লাখ টন ডিজেল আমদানি করবে। ১৫ বছর মেয়াদি চুক্তি অনুযায়ী প্রতি বছর ডিজেল আমদানির পরিমাণ ৪ থেকে ৫ টন করে বাড়বে। এখানে আপদকালীন মজুতও (বাফার স্টক) গড়ে তোলা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়